Inqilab Logo

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

তিন মাসে নিহত ৩৬

কক্সবাজারে মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত

বিশেষ সংবাদদাতা কক্সবাজার থেকে : | প্রকাশের সময় : ১৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

কক্সবাজারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই মাদক কারবারীরা ধরা পড়ছে বা মারা পড়ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে। খুন হচ্ছে নিজেদের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে। গত তিন মাসে মাদকবিরোধী অভিযানে এপর্যন্ত নিহত হয়েছে ৩৬ জন মাদক কারবারী।

তবে রহস্যজনক কারণে অভিযানে এ পর্যন্ত ধরা পড়েনি বা নিহত হয়নি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত কোন গডফাদার। এদের অনেকে আত্মগোপনে থাকলেও আবার অনেকে রহস্যজনক কারণে প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এই অভিযানের মধ্যেও বন্ধ হচ্ছেনা মাদক পাচার। গতকালও টেকনাফের সাবরাং ইউপির আলীর ডেইল এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১ লাখ ২০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করেছে বিজিবি। ওই সময় ব্যবহৃত একটি সিএনজিও জব্দ করা হয়েছে। টেকনাফ ব্যাটালিয়ন ২ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মো. আছাদুদ-জামান চৌধুরীর নেতৃত্বে খুরেরমুখ অস্থায়ী চেকপোস্টের বিশেষ টহলদল আলীর ডেইল এলাকা থেকে ইয়াবার এই চালান উদ্ধার করে। সিএনজি তল্লাশী করে সিএনজি’র পেছনের সীটের নিচ হতে ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা মূল্যের ১ লাখ ২০ হাজার ইয়াবা জব্দ করতে সক্ষম হয়।

জানা গেছে, চলতি মাসের ৪ জানুয়ারি থেকে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত ৯ দিনে নিহত হয়েছে ৯ জন মাদক কারবারী। এরমধ্যে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ২ জন, র‌্যাবের সঙ্গে ২জন, বিজিবির গুলিতে ২ জন
ও গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে ৩ জনের লাশ। গত ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর দ্বিতীয় দফায় মাদকবিরোধী অভিযানে নামে কক্সবাজার জেলা পুলিশ। এতে গত ৪ জানুয়ারি থেকে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত ৯ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও অস্ত্র। পুলিশ বলছে, নিহতরা সবাই ইয়াবা ব্যবসায়ী।
গত তিন মাসে শুধু টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে ২৭ মাদক ব্যবসায়ী। পুলিশের দাবি এদের মধ্যে দুয়েকজন গুলিবিদ্ধ ছাড়া অধিকাংশ পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে বলে।

পুলিশের দেয়া তথ্যে জানা গেছে, গত ৪ জানুয়ারি সকাল ৭টার দিকে টেকনাফ-কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়ক সংলগ্ন বাহারছড়া ইউনিয়নের নোয়াখালীপাড়া সৈকত এলাকা থেকে সাজ্জাদ হোসেন ইমরান নামে এক যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত যুবক চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া পশ্চিম আমিরাবাদের মাস্টারপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ কালামের ছেলে।
একইভাবে গত ৫ জানুয়ারি সকালে ৯টার দিকে টেকনাফ উপজেলার সদর ইউনিয়নের মেরিন ড্রাইভের নিকটবর্তী রাজারছড়া এলাকা থেকে দুইজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতরা হলেন টেকনাফের উনচিপ্রাং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-ব্লকের কাশিমের ছেলে খাইরুল আমিন ও একই ব্লকের হাজী মুহাম্মদের ছেলে আব্দুল্লাহ। এরা রোহিঙ্গা বলে জানা গেছে।

৮ জানুয়ারি ভোরে টেকনাফ উপজেলার দমদমিয়া এলাকায় র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে দুই ইয়াবা ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ৪০ হাজার পিস ইয়াবা, একটি বিদেশি রিভলবার, একটি ওয়ান শুটারগান ও একটি কাভার্ড ভ্যান জব্দ করেছে র‌্যাব-৭। নিহতরা হলেন ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার নগরকুন্ড এলাকার আবদুল মতিনের ছেলে হাফিজুর রহমান ও বাগেরহাট জেলার চিতলমারি উপজেলার বরবাড়িয়া এলাকার মো. ইব্রাহিমের ছেলে সাব্বির হোসেন।

৯ জানুয়ারি সকাল ৬টার দিকে কক্সবাজার শহরের কলাতলী কাটাপাহাড় এলাকা থেকে জাহাঙ্গীর আলম নামে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত জাহাঙ্গীর আলম কক্সবাজার শহরের রুমালিয়ারছড়া এলাকার ফরিদ আলম ওরফে দারোয়ান ফরিদের ছেলে। এ সময় ২শ’ পিস ইয়াবা ও একটি দেশে তৈরি এলজি উদ্ধার করা হয়। গত ১০ জানুয়ারি রাত দুইটার দিকে টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের নাফ নদীর খুরেরমুখ এলাকায় বন্দুকযুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ ও আবুল কালাম নিহত হয়েছে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ৫টি দেশীয় এলজি এবং ২২ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত

১৪ জানুয়ারি, ২০১৯
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ