Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সরকার সমর্থিত শিক্ষকদের দুটি গ্রুপের দ্বন্দ্বে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে হাজী দানেশ বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা

দিনাজপুর অফিস | প্রকাশের সময় : ১৩ জানুয়ারি, ২০১৯, ৪:৪৮ পিএম | আপডেট : ৬:২৯ পিএম, ১৩ জানুয়ারি, ২০১৯

একদিকে প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের ৫৭ শিক্ষকের ক্লাশ বর্জন কর্মসূচী অপরদিকে শিক্ষার্থীদের ক্লাশ পরীক্ষা শুরুর দাবীতে আন্দোলনের মুখে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম অচল হয়ে পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ভিসি যোগদানের পর থেকেই সাবেক ভিসির নেতৃত্বাধীন সরকারী দল সমর্থিত শিক্ষকেরা দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। বর্তমান ভিসি কর্তৃক শিক্ষক নিয়োগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজ এলাকা রংপুরকে প্রাধান্য দেয়াসহ পক্ষপাতিত্বমূলক অভিযোগ করে আসছে অপর পক্ষ। হাওয়া বদলের সাথে সাবেক ভিসি’র ঘনিষ্ট কিছু শিক্ষকের সাহচার্য পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলেছে। যৌন হয়রানী’র ঘৃনতম অভিযোগ উঠেছে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। দাম্পত্য কলহের জেরে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন দাবী’র পরিপ্রেক্ষিতে প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের ৫৭ জন শিক্ষক ক্লাশ পরীক্ষা বর্জন করে আসছে গত দু’মাস ধরে। অপরদিকে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে দীর্ঘমেয়াদী সেশনজোটের আশংকায় শিক্ষার্থীরা পৃথকভাবে আন্দোলন চালিয়ে আসছে। সর্বশেষ রবিবার ক্লাশ-পরীক্ষা চালুর দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে ২ ঘন্টা কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় শিক্ষার্থীরা। সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বের করে দিয়ে তালা দেয় সাধারন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা ক্লাশ-পরীক্ষা চালু না করায় প্রশাসনকে দায়ি করে সিড়িতে বসে বিভিন্ন শ্লোগান দেয়। পরে বিকেল ৩ টায় শিক্ষার্থীরা ২৪ ঘন্টার মধ্যে সমস্যা সমাধানের আল্টিমেটাম দিয়ে তালা খুলে দেয়। সবমিলিয়ে সেশনজট বিহীন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম হুমকির মুখে পড়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, গত ১৪ নভেম্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাশ-পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। এতে করে তারা শেসনজটের মধ্যে পড়েছে এবং কবে নাগাদ ক্লাশ-পরীক্ষা চালু হবে তা নিয়েও অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। এদিকে সকাল সাড়ে ১১ টা থেকে ক্লাশ-পরীক্ষা বর্জন করে অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেড় শতাধিক শিক্ষক। তাদের দাবির ব্যাপারে প্রশাসন কোন উদ্যোগ গ্রহণ করছে না বলে অভিযোগ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরাও।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ নভেম্বর থেকে বেতন বৈষম্য দুরীকরন, সহকারী অধ্যাপকদের লাঞ্ছিত ও নারী শিক্ষিকাদের শ্লীলতাহানিকারীদের বিচার, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, রেজিষ্ট্রার ও ছাত্র উপদেষ্টার বহিস্কারের দাবিতে ক্লাশ-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন করছেন ৬১ জন সহকারী অধ্যাপক। তাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামও। এতে করে গত প্রায় ২ মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আড়াই শতাধিক শিক্ষকের মধ্যে দেড় শতাধিক শিক্ষক আন্দোলনে থাকায় অধিকাংশ ক্লাশ-পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। এদিকে ক্লাশ-পরীক্ষা চালুর দাবিতে গত বুধবার শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামলে বৃহস্পতিবার প্রশাসন প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরাম ও সহকারী অধ্যাপকদের সাথে আলোচনা বসে। কিন্তু দিনভর আলোচনা করেও কোন সুষ্ঠু সমাধান করতে পারেনি প্রশাসন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ