Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফ্রান্সে আবার তা্ণ্ডবে চাপের মুখে সরকার

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

অপ্রিয় সংস্কার কর্মসূচির মুখে আবার হিংসাত্মক বিক্ষোভের মুখে পড়লো প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁর প্রশাসন। এবার ছাড়ের বদলে আরো কড়া অবস্থানের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে রোববার ৩৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে সংলাপের জন্য চাপ বাড়ছে।
কিছুতেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছেন না ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাখোঁ। হলুদ জ্যাকেটধারী ‘অসংগঠিত’ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সরাসরি সংলাপের সুযোগও তিনি পাচ্ছেন না। গত বছর তাদের তাণ্ডবের ফলে রাজধানী প্যারিস-সহ দেশের অনেক অংশ কার্যত অচল হয়ে পড়ে। তারপর সেই আন্দোলন কিছুটা স্তিমিত হয়ে পড়লেও নতুন বছরে আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। সপ্তাহান্তে প্যারিস শহরের অভিজাত এলাকায় আবার গাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের বেষ্টনি ভেঙ্গে এক মন্ত্রণালয় ভবনের উপর হামলা চালিয়েছে। এমনকি পুলিশকর্মীদের উপর সরাসরি হামলার ঘটনাও ঘটেছে।
নববর্ষের ভাষণে ম্যাখোঁ এই আন্দোলনের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিয়ে তাদের শক্তি কমানোর চেষ্টা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, জনবিরোধী এই আন্দোলনের মাধ্যমে প্রজাতন্ত্রের ভিত্তির উপর হামলা চালানো হচ্ছে। রোববার সন্ধ্যায় এক টুইট বার্তায় তিনি লেখেন, ‘ফরাসি প্রজাতন্ত্রের উপর আরো একবার চরম হিংসাসহ হামলা চালানো হলো। রাষ্ট্রের অভিভাবক, তার প্রতিনিধি, তার প্রতীক হামলার শিকার হলো।’
এমন পরিস্থিতিতে সরকার ও প্রশাসনের কর্তৃত্ব প্রশ্নের মুখে পড়ছে। বিক্ষোভ সামলাতে প্রশাসনিক ব্যর্থতার অভিযোগও উঠছে। তবে প্রতিবাদের মুখেও প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ তার সংস্কার কর্মসূচি চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর। বেকার ভাতার শর্ত আরো কড়া করতে ও কয়েক হাজার সরকারি কর্মীর পদ ছেঁটে ফেলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। শুক্রবার এক সরকারি মুখপাত্র বলেন, দেশের অর্থনীতিকে ঢেলে সাজাতে সরকার পরিকল্পিত সংস্কার প্রক্রিয়া থেকে বিচ্যুত হবে না। তিনি আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার প্রচেষ্টার অভিযোগ আনেন। ম্যাখোঁ প্রশাসনের এই অবস্থানের প্রেক্ষাপটে আন্দোলনের তীব্রতা কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
উল্লেখ্য, ফ্রান্সের দুর্বল অর্থনীতির সংস্কারের লক্ষ্যে প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছেন, জনসাধারণের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছে। বিশেষ করে স্বল্প আয়ের কর্মীদের মনে চরম অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হচ্ছে। ম্যাখোঁ শুধু ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ধনীদের স্বার্থ রক্ষা করছেন, এমন এক ধারণা সৃষ্টি হচ্ছে। এমন অবস্থায় গত নভেম্বর মাসে দেশজুড়ে স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভ শুরু হয়। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এর নেতৃত্ব দেয়নি। বিক্ষোভকারীদের গায়ে হলুদ জ্যাকেটই হয়ে ওঠে আন্দোলনের প্রতীক। এমন আচমকা প্রতিরোধের মুখে প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ কিছুটা পিছিয়ে এসে কিছু ‘জনদরদি’ পদক্ষেপ ঘোষণা করেন। অবসরপ্রাপ্তদের জন্য করের ক্ষেত্রে ছাড় ও দরিদ্রতম শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি তিনি জ্বালানির উপর বাড়তি করের পরিকল্পনাও বাতিল করেন। ফলে সংস্কারের প্রক্রিয়া কিছুটা ধাক্কা খায়, সরকারি কোষাগারে প্রায় ১,০০০ কোটি ইউরোর ঘাটতি দেখা দেয়। কিন্তু তাতেও বিক্ষোভের মাত্রা কমার কোনো লক্ষণ দেখা না যাওয়ায় ম্যাখোঁ আবার কড়া অবস্থান নিচ্ছেন। লাগাতার হিংসাত্মক বিক্ষোভের ফলে পর্যটন ও বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষতি হচ্ছে বলে সরকার অভিযোগ করছে। সূত্র: রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফ্রান্সে আবার তা্ণ্ডব
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ