পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নগরীর পাহাড়তলীতে ‘চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে’ এক আওয়ামী লীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন ব্যবসায়ী ও শ্রমিকেরা। গতকাল (সোমবার) পাহাড়তলী রেল স্টেশন সংলগ্ন সড়কে প্রকাশ্যে এ গণপিটুনির ঘটনা ঘটে। এসময় সোহেলের সহযোগী রাসেলও জনতার পিটুনিতে আহত হয়েছেন। নিহত মো. মহিউদ্দিন সোহেল (৪২) দক্ষিণ খুলশী এলাকার আবদুল বারিকের ছেলে। তাদের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরে।
ব্যবসায়ীরা জানান, চট্টগ্রাম কমার্স কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সোহেল নিজেকে আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সদস্য পরিচয় দিতেন। ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম মহিউদ্দিন সেলিম ইনকিলাবকে বলেন, তার চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকেরা তাকে ঘেরাও করে গণপিটুনি দেয়। এ সময় তার আস্তানায় আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। হাসপাতালে নেয়ার পর সোহেলকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। গতকাল দিনভর কয়েক হাজার দোকানপাট বন্ধ রেখে ব্যবসায়ীরা চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সোহেলের নেতৃত্বে চাঁদাবাজরা রেলওয়ের দু’টি কক্ষ দখল করে সেখানে আস্তানা গড়ে তোলে। ব্যবসায়ীদের ধরে নিয়ে সেখানে আটকে রেখে মোটা অঙ্কের চাঁদা আদায় করা হতো। চাঁদা না দিলে তাদের ইয়াবা দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হতো। সোহেল ও তার অনুসারীরা বাজারে আসা মালবাহী প্রতিটি ট্রাক থেকে ৫০ টাকা করে চাঁদা আদায় করে আসছিল। রোববার সোহেল ঘোষণা দেয়, সোমবার থেকে গাড়ি প্রতি ১০০ টাকা করে দিতে হবে।
এই প্রেক্ষাপটে গতকাল সকালে পাহাড়তলী স্টেশন রোড বাজারের ব্যবসায়ীরা প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দেয়। জাহাঙ্গীর আলম নামে এক স্থানীয় ব্যবসায়ী সাংবাদিকদের বলেন, বাজারের পাশে রেলের দুটি কক্ষ দখল করে সেখানে অফিস বানিয়েছে মহিউদ্দিন সোহেল। সেখানে বসেই তারা চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করে আসছিল। সকালে সোহেলের লোকেরা চাঁদার দাবিতে বাজারের ব্যবসায়ী ওসমান খানের ওপর হামলা চালিয়ে তার মাথা ফাটিয়ে দিলে অন্য ব্যবসায়ীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এরপর প্রতিবাদ সমাবেশের জন্য বাজারে জড়ো হওয়া কয়েকশ লোক গিয়ে সোহেলদের কক্ষ দুটিতে আগুন দেয় এবং সেখান থেকে সোহেল ও রাসেলকে ধরে নিয়ে এসে পিটুনি দেয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ওই বাজারে গেলে বিক্ষোভকারীদের বাধার মুখে পড়ে বলে নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (ডবলমুরিং) আশিকুর রহমান জানান। তিনি বলেন, ঘটনার পর ব্যবসায়ীরা বাজারের দোকানপাট বন্ধ রেখে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। সেই বাধা পেরিয়ে পুলিশ গিয়ে সোহেল আর রাসেলকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। গণপিটুনির পর তাদের রাস্তায় ফেলে সড়ক অবরোধ করে ব্যবসায়ীরা।
বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী মো. হান্নান বলেন, ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদা চেয়ে টেলিফোন করত। কেউ দিতে না চাইলে তাকে অফিসে ধরে নিয়ে মারধর করত। অতিষ্ঠ হয়ে লোকজন তাকে গণপিটুনি দেওয়ার পাশাপাশি তার অফিসেও আগুন দিয়েছে। ব্যবসায়ী ফরিদ মিয়া বলেন, সে কখনও মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, আবার কখনও চট্টগ্রামের নেতাদের লোক বলে নিজেকে পরিচয় দিত।
একেএম মহিউদ্দিন সেলিম বলেন, পাহাড়তলী বাজারে ব্যবসায়ীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে বলে খবর পেয়ে সেখানে যাই। ঘটনাস্থল থেকে সন্ত্রাসী মহিউদ্দিন সোহেলকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাই। চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে সবাই মিলে তাকে পিটুনি দিয়েছে। বাজারে দেড় হাজারের মতো দোকান আছে। সেগুলো বন্ধ ছিল। পরে পুলিশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। তিনি বলেন, সোহেল ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন থেকে চাঁদাবাজি করলেও ব্যবসায়ীরা থানায় কোন অভিযোগ দেয়নি। আর এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া যায়নি। গণপিটুনির ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, এ ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
এদিকে সোহেলের অনুসারিরা দাবি করেছেন এই ঘটনার নেপথ্যে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একটি অংশ জড়িত। তাদের উস্কানিতে এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ বলছে পুরো ঘটনা তদন্ত করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।