বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় ফসলি জমির ক্ষতিকর পোকা দমনে ব্যবহৃত হচ্ছে হলুদ কাগজ বা ইয়েলো কালার ট্র্যাপ। ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে কীটনাশকের ব্যবহার কমানোর জন্য কৃষি বিভাগ প্রতিনিয়তই মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহারে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। এসব প্রযুক্তির মধ্যে ইতিমধ্যেই কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে হলুদ কাগজ বা ইয়েলো কালার ট্র্যাপ ব্যবহার। টেকসই জীবন ও সুস্বাস্থের জন্য নিরাপদ খাদ্যের বিকল্প নেই। অনিরাপদ খাদ্য স্বাস্থ্য ঝুঁকিসহ দেহের বিভিন্ন রোগের কারণ। নিরাপদ খাদ্য নিয়ে মানুষ এখন রীতিমত আতঙ্কে আছে। খাদ্য মানুষের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয় বিভিন্ন স্তরে যেমন- উৎপাদন পর্যায়ে, প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং সংরক্ষণ তবে সবচেয়ে বেশি হচ্ছে উৎপাদন পর্যায়ে। তাই ফসল উৎপাদনে কীটনাশকের ব্যবহার কমানো বা কীটনাশক ব্যবহার না করে বিষমুক্ত ফসল উৎপাদন করা এখন সকল মানুষের দাবি।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, বিশেষ এক ধরনের আঠা সমৃদ্ধ হলুদ কালারের পেপার ট্র্যাপ যা সাদা কাগজ দিয়ে ঢাকা থাকে। এটি এসিআই ক্রপ কেয়ার বাজারজাত করছে। এই কালার ট্র্যাপ বিভিন্ন ফসল যেমন- মরিচ, আলু, বেগুন, টমেটো, কুমড়া জাতীয় সবজি, ধানের বীজতলা এবং পান বরজে পোকা দমনে ব্যবহৃত হচ্ছে। ইয়েলো কালার ট্র্যাপ জমিতে টানানোর পর সাদা কাগজটি উঠিয়ে ফেলতে হয়। তারপর বিশেষ ধরনের আঠা সমৃদ্ধ হলুদ কালারের ট্র্যাপটি জমিতে ঝুলতে থাকে আর পোকা মাকড় সাধারণত হলুদ কালারে সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট হয়। হলুদ কালারে আকৃষ্ট হয়ে সেখানে গিয়ে বসতেই আঠার মধ্যে আটকে মারা যায়।
উপজেলার আংগিয়াদী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বেশ কয়েকজন পান ও সবজি চাষি এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে সুফল পেয়েছেন। পান চাষী নুরুল ইসলাম বলেন, ক্ষুদ্রাকৃতির পোকা পানে বসে রস চুষে খেয়ে গাছকে দুর্বল করে ফেলে। যার কারণে আগে পানে বিষ ব্যবহার করা হতো। বর্তমানে উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা হামিমুল হক সোহাগ ভাইয়ের পরামর্শে আমরা বিষ প্রয়োগ বন্ধ করে এ হলুদ কাগজ ব্যবহার করছি। এই প্রযুক্তি ব্যবহারের পর থেকে পান বরজে আর বিষ প্রয়োগের প্রয়োজন হয় না। এই হলুদ কাগজ ব্যবহারে পোকামাকড় দমন করা হচ্ছে খুব সহজেই। এছাড়াও খামা গ্রামের কৃষক জালাল উদ্দিন জানান, গত মৌসুমে ধানের বীজতলায় হলুদ কাগজ ব্যবহার করে সুফল পেয়েছি। তাই এ মৌসুমেও ধানের বীজতলায় হলুদ কাগজ ব্যবহার করেছি।
ইয়েলো কালার ট্র্র্যাপ সম্প্রসারণে মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি হলেন, উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ হামিমুল হক সোহাগ। তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিরাপদ ফসল উৎপাদনের জন্য কৃষকদের ফসল ভেদে বিভিন্ন ধরনের ফাঁদ ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। তার মধ্যে ইয়েলো কালার ট্র্যাপ অন্যতম। ইয়েলো কালার ট্র্যাপে পোকা সরাসরি আটকে থাকে বিধায় কৃষকদের কাছে প্রযুক্তিটির গ্রহণ যোগ্যতা বাড়ছে। তাছাড়াও কৃষক ইচ্ছে করলে একটি ইয়েলো কালার ট্র্যাপকে ৩টি ভাগে ভাগ করে ব্যবহার করতে পারেন। এতে খরচ খুবই কম হয়।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সাইফুল হাসান আলামিন জানান, পাকুন্দিয়ায় পরিবেশ বান্ধব পদ্ধতিতে পোকা মাকড় দমনে গুরত্ব দেয়া হচ্ছে। ইয়েলো কালার ট্র্যাপের ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে আংগিয়াদী, খামা, আদিত্যপাশা, দাওরাইট গ্রামে। এছাড়াও উপজেলার বেশিরভাগ গ্রামের কৃষকরা এ প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করেছে। উপজেলার সকল কৃষক যাতে এই প্রযুক্তির ব্যবহার করে সে জন্য মাঠ পর্যায়ে কৃষকদেরকে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।