পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ধুলাবালিতে ছেয়ে গেছে রাজধানী উত্তরার মহাসড়কসহ আশেপাশের রাস্তাগুলো। উত্তরা মডেল টাউনের হাউজ বিল্ডিং মোড় থেকে মহাসড়কের যে দিকেই চোখ যায়, ধুলা-বালি ছাড়া আর কিছুই দেখা যায় না। বাতাসে এতই ধুলা উড়ছে যে, দশ হাত দূরের রাস্তাও দেখা যায় না। এ যেন মাঘ মাসের শীতের সকালের কুয়াশা আচ্ছন্ন সড়ক। এই ধুলা-বালিতে আচ্ছন্ন সড়ক দিয়েই রাজধানীর মডেল টাউন খ্যাত অভিযাত এলাকা উত্তরাবাসীকে চলাচল করতে হচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে সিটি কর্পোরেশন থেকে রাজধানীর সড়কগুলোতে ধুলা নিবারণের জন্য দিনে দুইবার করে পানি ছিটানোর কথা থাকলেও এই সড়কগুলোতে তা দেখা যায়নি। উত্তরাবাসীর ধুলা-বলির এই ভোগান্তির বিষয়ে জানতে চাইলে, উত্তর সিটি কর্পোরেশন থেকে জানানো হয়, আবদুল্লাহপুর ও উত্তরা মহাসড়কে বর্তমানের মেট্রোরেল সড়ক নির্মানসহ কিছু উন্নয়ন কাজ চলছে। যে সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান এই উন্নয়ন কাজ পরিচালনা করছে, তাদেরই দায়িত্ব এই ধুলা নিবারণের কাজ করা। এটা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বে পড়ে না। এছাড়া উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকার যেখানেই ধুল-বালির সমস্য আছে সেখানে প্রতিদিন পানি ছিনানো হচ্ছে।
শুষ্ক মৌসুমের ধুলা বালির এই সমস্য শুধু উত্তরার নয়, রাজধানীর সর্বত্রই এখন ধুলা বালিতে একাকার। শীতের মৌসুমে কুয়াশার চাদরে ঢাকার কথা থাকলেও সববিছুই ঢেকে যাচ্ছে ধুলার চাদরে। ধুলার যন্ত্রণায় এখন ঢাকা শহরের কোন রাস্তায় নামাই যাচ্ছে না। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের দুইয়েকটি সড়ক ছাড়া উত্তর ও দক্ষিণ সিটির ছোট বড় সব রাস্তায়ই এখন ধুলাবালিতে একাকার। ঘরবাড়ি, স্কুল, মাদরাসা, অফিস আদালত ঢেকে যাচ্ছে ধুলার চাদরে। দু’য়েকদিন ধোয়া মোছা না করলে ধুলার আস্তারে ঢেকে যাচ্ছে সব কিছু। এ বছর নগরীর বিভিন্ন স্থানে অন্যান্য বছরের তুলনায় বেড়েছে ধুলার পরিমাণ। এর সঙ্গে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকিও।
সরেজমিন গতকাল শনিবার রাজধানীর উত্তরা মডেল টাউনের বিমানবন্দর থেকে আবদুল্লাহপুর পর্যন্ত গিয়ে দেখা গেছে, যে দিকেই চোখ যায় বাতাসে শুধু ধুলা উড়ছে। মহা সড়কের উপর ধুলাবালির দৌরাত্ম্য এতই বেশি যে, দশ হাত দুরের রাস্তাও পরিস্কার দেখা যায় না। চোখের ঠাওরে খুব ধিরগতিতে যানবাহনগুলো চলাচল করতে দেখা গেছে। এছাড়া উত্তরার সব সেক্টরেই রাস্তাঘাটের অবস্থা খুবই নাজুক অবস্থা। মহাসড়ক ছাড়াও উত্তরা মডেল টাউনের পুরোটাই ধুলোময়। ৪ নম্বর সেক্টরের ২০টি সড়কের সবই এখন যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে। টার্কি হোপস স্কুল, আগা খান স্কুলসহ বেশ কিছু নামিদামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনের রাস্তায় নির্মাণকাজের নামে ইট, বালি, সুরকি ও মাটি খুঁড়ে রাখা হয়েছে। শীত আসার সঙ্গে সঙ্গেই ধুলাবালিতে একাকার স্কুল, মাদ্রাসাসহ আশপাশের এলাকা। ধুলাবালিতে বাচ্চারাও শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। অন্যান্য সেক্টরেও একই অবস্থা। ঢাকা সিটি কর্পোরেশন উত্তরের সাধারণ মানুষ মনে করে, মেয়র না থাকায় নাগরিক জীবনের এ সমস্যাগুলো দেখার কেউ নেই। উত্তরা-৪ নম্বর সেক্টরের অধিবাসীরা বিপর্যস্ত রাস্তাঘাট ও ধুলোময় পরিবেশের প্রতিবাদে যে কোনো সময় রাস্তায় নামার পরিকল্পনা করছে। রাজলক্ষী মার্কেটসহ আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও ভিতরের সড়কগুলোও ধুলোবালিতে একাকার।
চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রাজধানীতে শ্বাসকষ্ট, যক্ষা, হাঁপানি, চোখের সমস্যা, ব্রঙ্কাইটিস, সর্দি, কাশি, হাঁচিসহ ফুসফুসে ক্যান্সারের রোগীর সংখ্যাই বেশি। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে ধুলার দূষণ। এ কারণেই নানা সংক্রামক ব্যাধি ছড়িয়ে পড়ছে। মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে রাজধানীবাসী। ধুলার দূষণের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাজধানীতে বসবাসরত শিশু ও বয়স্ক নাগরিকেরা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, বর্ষার মৌসুম ব্যতীত বছরের অন্যসময় রাজধানীর সড়কগুলো ধুলোময় থাকে। কর্মব্যস্ত নগরবাসী বা স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের যারা মাস্ক ছাড়া বাইরে চলাচল করেন, তারা নিদারুণ দুর্ভোগের শিকার হন। এক বা দুই ঘণ্টা পর নাক দিয়ে নিঃশ্বাস নেয়া কষ্টকর হয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাহুল ইসলাম বলেন, উত্তর সিটি কর্পোরেশনের উত্তরা থেকে আবদুল্লাহপুর পর্যন্ত মহাসড়কে মেট্রো রেল নির্মানসহ বেশ কিছু উন্নয়ন কাজ চলছে। এই উন্নয়ন কাজগুলো যে সংস্থা কিংবা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে, তাদেরই দায়িত্ব এই ধুলাবাসি নিবারণের কাজ করা। এটা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্ব নয়। তিনি বলেন, শুষ্ক মৌসুমে যেহেতু রাস্তাঘাটে অতিরিক্ত ধুলা-বালির সৃষ্টি হয়, সেহেতু আমরা নিয়মিত ধুলা নিবারণের জন্য সড়কে পানি ছিটানোর কাজ পরিচালনা করছি। তিনি বলেন, বাস্তবতা হচ্ছে, কার্যকরভাবে ধুলা নিয়ন্ত্রণ করতে যে ধরনের সক্ষমতা দরকার তা নেই ডিএনসিসির। কিন্তু সক্ষমতা নেই বলে আমরা থেমে থাকছি না। সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নানা ধরনের তৎপরতা চালাচ্ছি।
জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শুষ্ক মৌসুম হওয়ায় শহরে ধুলাবালু বেড়ে গেছে। আমরা নিজেদের পক্ষ থেকে ধুলাবালু নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। তবে আমাদের পানি ছিটানোর গাড়ির সংখ্যা খুবই কম। তিনি বলেন, নগরবাসীকে ধূলাবালু থেকে মুক্তি দিতে নিজেদের সামর্থ্য দিয়ে ধুলো নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার পাশাপাশি জনসচেতনতা সৃষ্টির চেষ্টা করব। শিগগিরই এ ব্যাপারে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রচারসহ নানাবিধ কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।