বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
নরসিংদীতে নারী ও শিশু ধর্ষণ উদ্বেগজনক হারে বেড়ে চলছে। ৪ বছরের শিশু থেকে যুবতী পর্যন্ত কেউ ধর্ষকদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। একের পর এক ধর্ষণ হচ্ছে, কিন্তু মামলা এবং বিচার হচ্ছে খুবই কম। যার ফলে মানুষের পারিবারিক ও সামাজিক নিরাপত্তা মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে ।
গত দশ বছরে নরসিংদী জেলার ৬ টি উপজেলায় ধর্ষণ হয়েছে কমবেশি ২ সহস্রাধিক নারী ও শিশু। তবে মামলা হয়েছে ১২ শতাধিক ধর্ষণের ঘটনা। এরমধ্যে ২০১৮ সালে নরসিংদীতে কমবেশি ২ শতাধিক নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্য মতে, বিভিন্ন থানায় কমবেশি ১৬০ ধর্ষণের ঘটনা রেকর্ডভুক্ত করা হয়েছে। সামাজিক প্রতিক‚লতা এবং লোকলজ্জার ভয়ে অধিকাংশ ধর্ষণের ঘটনা থানা বা কোর্ট পর্যন্ত গড়াচ্ছে না।
বেসরকারি জরিপ অনুযায়ী নরসিংদীতে ধর্ষণের এই সংখ্যা দেশের যে কোন জেলার চেয়ে বেশি বলে জানা গেছে। বিগত ১০ বছরের ধারাবাহিকতায় প্রতিবছরই নরসিংদীতে ধর্ষণের সংখ্যা বাড়ছে। মামলা রেকর্ড অনুযায়ী ২০১৫ সালে সর্বোচ্চ ১৮০ টি ধর্ষণের ঘটনা রেকর্ডযভুক্ত হয়েছে। ২০১৪ সালে এ সংখ্যা ছিল ১৭৬ টি। ২০১৬ ও ২০১৭ সালের ধর্ষণের সংখ্যা কমে গিয়ে ২০১৮ সালে আবার বেড়ে গেছে।
অপরাধ বিশেষজ্ঞদের মতে, নরসিংদীতে ধর্ষণ ঘটনার পিছনে রয়েছে পর্নোছবি ও মাদকের অবাধ প্রবাহ। কোন কোন ক্ষেত্রে সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তি, তাদের সন্তান এবং যার যার অবস্থানে প্রভাবশালীরাই ধর্ষণের মূল হোতা। যার ফলে ধর্ষিতা তার পিতা-মাতা ,আত্মীয়-স্বজন এসব ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করতে সাহস পাচ্ছে না। কেউ কেউ মামলা করলেও থানা পুলিশ প্রভাবমুক্ত হয়ে মামলা তদন্ত করতে পারছে না। এছাড়া লোকলজ্জার ভয়ে বহু সংখ্যক ধর্ষিতা ও তার আত্মীয়-স্বজনরা আইনের আশ্রয় নিতে পারছে না না। যারা নিচ্ছে তারা সঠিক তদন্ত পাচ্ছে না, পাচ্ছে না বিচার। ফলে অধিকাংশ ধর্ষণ মামলাই থানা থেকে আপস হয়ে যাচ্ছে। কোর্ট পর্যন্ত গড়াচ্ছে না। যেসব মামলা কোনরকমে কোর্ট পর্যন্ত পৌঁছছে তাও সাক্ষীর অভাবে বিচার হচ্ছেনা। প্রভাবশালীদের ভয়ে অনেক সাক্ষীরাই আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসছে না। ফলে নরসিংদী জেলায় ধর্ষণের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। এই ধর্ষণ প্রতিরোধে কেউ এগিয়ে আসছে না। এ ধর্ষণের মতো একটি ভয়াবহ সামাজিক অপরাধ দমনে কেউই কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না।
ধর্ষণ ঘটনা বেড়ে চলায় সার্বক্ষণিক উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে দিনাতিপাত করছে স্থানীয় সচেতন পরিবারগুলো। কন্যাদেরকে স্কুল কলেজ মাদরাসাসহ বিভিন্ন মিল ফ্যাক্টরি অফিস-আদালতের কর্মস্থলে পিতা-মাতা অভিভাবকরা সার্বক্ষণিক আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। এছাড়া নরসিংদী অধিকাংশ আবাসিক হোটেল গুলোতে চলছে রমরমা দেহ ব্যবসা। পুলিশ আদর দিয়ে কয়েকটি আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে একাধিকবার অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে বিপথগামী নারী-পুরুষদের গ্রেফতার করার পরও বন্ধ হচ্ছে না দেহ ব্যবসা। এখনই পদক্ষেপ গ্রহণ না করলেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা করছে সচেতন জনগণ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।