Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কলঙ্কিত বিজয়ে বেশি দিন টিকতে পারবে না

সংবাদ সম্মেলনে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে ভাবীকালে দেশের ইতিহাসে বিবেচিত হবে। সরকারের এ বিজয় অল্প কিছুদিনের মধ্যেই নিন্দার বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। এই কলঙ্কিত বিজয় নিয়ে সরকার খুব বেশি দিন ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না। প্রহসনের নির্বাচনের ফলে লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা আবার নতুন করে মহাসঙ্কটে নিপতিত হলো। গতকাল রাজধানীর মোহাম্মদপুরে নিজ বাসায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার। আর একটি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলেল যুগ্ম সম্পাদক প্রিন্সিপাল ইকবাল সিদ্দিকী প্রমুখ।
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, ক্ষমতাসীনদের সীমাহীন লোভ দেশ এবং দেশের মানুষকে আজকের অবস্থায় এনে ফেলেছে। নির্বাচন নিয়ে দেশি বিদেশী সমর্থণ সবই একধরনের সৌজন্য ছাড়া কিছুই না। ভাড়া করা কিছু কিছু বিদেশি পর্যবেক্ষক সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে বললেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অস্বাভাবিক কারচুপির নির্বাচন, ত্রুটিতে ভরা কলঙ্কিত নির্বাচন। দেশে নির্বাচন পদ্ধতির অপমৃত্যু ঘটেছে।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে সরকার, নির্বাচন কমিশন ও সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা ভোট ডাকাতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বলে মন্তব্য করে বলেন, এ নির্বাচন জাতির ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হবে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিভিন্ন স্থানে প্রচারণায় বাঁধা হামলা,আইনশৃংখলা বাহিনীর সহায়তায় নির্বাচনী পোষ্টার ছিড়ে ও পুড়িয়ে ফেলাসহ এহেন কোন কাজ নেই যা সরকারি দল করেনি। তবে জনগণ আশা করেছিল সেনাবহিনী নামার পর পরিস্থিতির উন্নতি হবে, কিন্তু তার উল্টো হয়েছে।
তিনি বলেন, নানা টানাপড়েন থাকলেও দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল। কিন্তু সরকার ও নির্বাচন কমিশন সংবিধান এবং ন্যূনতম নীতি-নৈতিকতাকে পদদলিত করে এই নির্বাচনকে সম্পূর্ণ প্রহসনে পরিণত করেছে।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন এ দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল বর্জন করেছিলো। ফলে ১৫৩ জন বিনা প্রতিদ্ব›দ্বীতায় এবং অন্যরাও খুবই নগণ্য ভোটে নির্বাচিত হয়, যা ছিলো ন্যায় ও সত্যের বিচারে অবৈধ। এবারও সরকার ও নির্বাচন কমিশন সংবিধান এবং ন্যুনতম নীতি-নৈতিকতাকে পদদলিত করে এই নির্বাচনকে স¤পূর্ণ প্রহসনে পরিণত করেছে। তফসিল ঘোষণা থেকে শুরু করে প্রতিটি বিষয়ে বিরোধীদলের দাবি দাওয়া ও প্রস্তাবকে অগ্রাহ্য করা হয়েছে। তারপরও নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক এবং জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার স্বার্থে আমরা এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি। কিন্তু সমস্ত আইনকানুন ও সংবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের নামে গায়েবী মামলা ও পুলিশি হয়রানী করে নির্বাচনের মাঠ থেকে সরিয়ে দিয়ে ফাঁকা মাঠে গোল দেয়ার সব রকমের অপচেষ্টা করা হলেও নির্বাচনী মাঠে থাকার ব্যাপারে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলাম। পদে পদে গ্রেফতার, নির্যাতন, ভয়ভীতি, হুমকি-ধমকি উপেক্ষা করে আমাদের কর্মী সমর্থকেরা মাটি কামড়ে নির্বাচনী মাঠে থাকার চেষ্টা করেছে।
বঙ্গবীর বলেন, বিভিন্ন স্থানে প্রচারণায় বাধা, হামলা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় নির্বাচনী পোষ্টার ছিঁড়ে ও পুড়িয়ে ফেলাসহ এহেন কোন কাজ নেই যা সরকারী দল করেনি। জনগণ আশা করেছিল সেনাবাহিনী নামার পর পরিস্থিতির উন্নতি হবে, কিন্তু তার উল্টো হয়েছে। তিনি বলেন, ভোটের আগের রাতে সকল কেন্দ্রে সরকার দলীয় কর্মী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মিলেমিশে প্রতি কেন্দ্রে অর্ধেক ভোট কোন কোন কেন্দ্রে তার চেয়েও বেশি নৌকা মার্কায় সিল মেরে বাক্স ভরে রাখে। যে কারণে ব্যালট পেপার শেষ হয়ে যাওয়ায় বেলা ১০-১১টার পর কোন ভোটার ভোট দিতে পারেননি, কারণ তাদের ভোট আগেই দেয়া হয়ে গেছে।
অপরদিকে লিখিত বক্তব্যে বলা হয় লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, এ নির্বাচনের মাধ্যমে লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা আবার নতুন করে মহাসঙ্কটে নিপতীত হলো। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের ঘটনা দেশ সর্বোপরি দেশের জনগণ বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হলো। আর ক্ষতি হল জননেত্রী শেখ হাসিনার ইমেজের। আর এসবের জন্য দায় গিয়ে পড়ছে বঙ্গবন্ধুর ওপরও। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, শেখ হাসিনার জন্য নিজের দল সামলানো দুষ্কর হবে। একদলীয় পার্লামেন্ট পৃথিবীর কোথাও শুভ ফল আনতে পারেনি। এখানেও পারবে না। নিজের দলকে সামলানো শেখ হাসিনার জন্য এত দুষ্কর হবে যে একসময় বিরক্ত হয়ে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেও চলে যেতে পারেন।
তাই দেশের ও দেশের মানুষের স্বার্থে এ ‘নির্লজ্জ ভোট ডাকাতির’ নির্বাচন বাতিল করে অবিলম্বে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নতুন জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।



 

Show all comments
  • Mohammed Kowaj Ali khan ৩ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:২৪ এএম says : 0
    আপনি জনধিককৃতদের নাম উল্লেখ করে বড় অন্যায় করিলেন। এখন হইতে শাবদান হইয়া যান। বুজে শুনে কথা বলিবেন। এখন সময় হইলো স্বাধীনতা বীরুধী ভারতীয় দালালদের বীরুদ্বে রুখে দাঁড়ানোর সময়। ইনশাআল্লাহ। ******** বাংলাদেশের বীজয় নিশ্চিত। ইনশাআল্লাহ। *********
    Total Reply(0) Reply
  • saad ahmed ৩ জানুয়ারি, ২০১৯, ৩:২৯ এএম says : 0
    Kadir siddiki tomar bogar bogar keho sunbe na ...
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কাদের সিদ্দিকী

১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ