রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
অধিকাংশ চালকের নুন্যতম প্রশিক্ষণ কিংবা লাইসেন্স নেই। অনেকের সিএনজি চালিত অটো রিকশাই অবৈধ। নেই রেজিস্ট্রেশন। আবার কোনটির রয়েছে ফিটনেসে সমস্যা। তবুও সবার নাকে ডগাতেই বেপরোয়াভাবেই সড়ক-মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়ানোর মতো স্পর্ধা ঠিকই দেখাচ্ছে এসব আনাড়ি-অদক্ষ চালকরা!
এমনকি চালক-যাত্রী উভয়েই মৃত্যু ঝুঁকি নিয়েই প্রতিনিয়ত তিন চাকার এই যানে ছুটে চললেও তাদের যেন নিয়ন্ত্রণ করার মতো ক্ষমতা নেই কারো ! অবাক করা এই চিত্র ময়মনসিংহের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে চলাচলরত সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও চালকদের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ময়মনসিংহের প্রায় ৯০ শতাংশ সিএনজি চালকের লাইসেন্স নেই। অভিযোগ ওঠেছে, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) অবৈধ এসব যান ও চালকদের বিরুদ্ধে কোন অ্যাকশনে না যাওযায় এই নৈরাজ্য বন্ধ হচ্ছে না।
তবে বিআরটিএ’র ময়মনসিংহ সার্কেলের সহকারী পরিচালক (এডি) আব্দুল খালেক দাবি করেছেন, জেলায় লাইসেন্সহীন চালকের সংখ্যা ৭৫ শতাংশের চেয়ে বেশি হবে না। এসব যানবাহন ও চালকদের বিরুদ্ধে নিয়মিতই অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
স্থানীয় বিআরটিএর দেয়া তথ্য মতে, পুরো ময়মনসিংহ জেলায় রেজিস্ট্রেশন রয়েছে এমন সিএনজি চালিত অটো রিকশার সংখ্যা ৪ হাজার থেকে সাড়ে ৪ হাজার। এর বাইরে অবৈধ অটো রিকশা রয়েছে আরো ৪ থেকে ৫ হাজার। এই দুই হিসাবে জেলায় চালকের সংখ্যা ১৫ হাজারের কাছাকাছি।
জানা গেছে, ময়মনসিংহ-ঢাকা মহাসড়কসহ তিনটি মহাসড়ক ও প্রতিটি আঞ্চলিক সড়কে প্রতিনিয়তই সিএনজি চালিত এই ছোট যানের সংখ্যা বাড়ছে। মহাসড়ক বাদে প্রতিটি আঞ্চলিক সড়কে সিএনজি ছাড়া অন্য কোন পরিবহন সার্ভিস না থাকায় শতভাগ ঝুঁকিযুক্ত এই যানবাহনই একমাত্র ভরসা।
গত কয়েকদিন ময়মনসিংহ-ঢাকা মহাসড়ক, ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়ক, ময়মনসিংহ-ফুলবাড়িয়া, ময়মনসিংহ-মুক্তাগাছাসহ একাধিক সড়ক-মহাসড়কে চলাচলরত সিএনজি চালকদের সঙ্গে কথা বলেন এই প্রতিবেদক। বেশিরভাগ চালকরাই জানান, সিএনজি চালিত অটো রিকশার মতো ছোট যান চালাতে সাধারণত লাইসেন্সের প্রয়োজন পড়ে না।
মাঝে মধ্যে অভিযান হলে তখন পুলিশের সঙ্গে দরকষাকষি করে রক্ষা মেলে। লাইসেন্সের চিরুনি অভিযান চললে শতকরা ৯০ ভাগ চালক রাস্তায় নামতে পারবেন না। তবে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর চালকরা নিজেদের জীবনের স্বার্থেই সচেতন হচ্ছেন এমন বক্তব্যও এসেছে চালকদের কাছ থেকে।
ময়মনসিংহ সদর উপজেলার একটি সিএনজি স্টেশনে আলাপ হলো নয়ন মিয়া (৩৫) ও আদিল শেখ (৪০) নামে দুই সিএনজি চালকের সঙ্গে। তাদের বাড়ি সদর উপজেলার চুরখাই এলাকায়। মূলত মহাসড়কের চুরখাই এলাকা থেকেই নানা প্রান্তে সিএনজি নিয়ে দাপিয়ে বেড়ান তারা।
নিজের ড্রাইভিং লাইসেন্স সম্পর্কে জানতে চাইলে নয়নের জবাব, ‘মিছা (মিথ্যা) কইয়া (বলে) লাভ নাই। আমার কোন লাইসেন্স নাই। শতকরা ৯০ শতাংশ চালকেরই নাই। পুলিশ ধরলে চা-পান খাওয়ার টেহা (টাকা) দিয়া কাইট্যা (কেটে) পড়ি।’
পাশেই দাঁড়ানো চালক আদিল শেখ জানান, শতকরা ১০ ভাগ সিএনজি চালকের লাইসেন্স রয়েছে। তবে এদের তিন চাকার যান চালানোর মতো লাইসেন্স নেই। যেটা আছে সেটাকে বলা হয় ‘লাইট’ লাইসেন্স। এই লাইসেন্স দিয়ে মূলত পিকআপ থেকে শুরু করে চার চাকার যান চালানো যায়।’
সিএনজি চালকদের লাইসেন্স না থাকার বিষয়ে অভিযোগ করেন সাইফুল ইসলাম (৪৫) নামে এক যাত্রী। ময়মনসিংহ-ফুলবাড়িয়া রুটে নিয়মিত এই যানে চলাচল করেন তিনি। সাইফুল বলেন, ‘সিএনজি চালকের বেশিরভাগই আনাড়ি। তাদের কোন প্রশিক্ষণ নেই।
লাইসেন্স নেই এটা তাঁরা নিজেরাও জোর গলায় বলে। শরীরের জোরে তাঁরা সিএনজি চালান। বিকল্প কোন যান না থাকায় চলাচলের জন্য আমাদের সামনে আর কোন পথও খোলা নেই।’
এসব অভিযোগের বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ময়মনসিংহ সার্কেলের সহকারী পরিচালক (এডি) আব্দুল খালেক বলেন, ‘লাইট লাইসেন্স দিয়ে সিএনজি চালিত অটো রিকশার অনেক চালক এই যান চালিয়ে থাকেন।
তবে এটা ঠিক এখনো পর্যন্ত কোন চালকেরই থ্রি হুইলারের লাইসেন্স নেই। এসব লাইসেন্সবিহীন চালক ও অবৈধ যানের বিরুদ্ধে অভিযান চলবে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।