বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
অবিশ্বাস্য পরিকল্পনায় সাজনো ছকে রাতের ভোটেই কাত হলো সিলেটে ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীরা (!)। সেই ভোট চিত্র দেখেও নিরূপায় হওয়া ছাড়া কোন কিছুই করার ছিল না ধানের শীষ সমর্থকদের । তব্ওু তারা ভরসা নিয়ে লড়ছে পুরো ভোট গ্রহন পূর্ব। ভোট পরিস্থিতি কোন অর্থেই অনুকূল ছিল না তাদের জন্য। চারিদিকে বিদ্যমান বৈরী পরিবেশ। তারপরও সর্তক সক্রিয় ছিল তারা। কিন্তু সংঘটিত হয়ে ঘুরে দাড়ানোর সুযোগই ছিল না তাদের। উপায়হীন নির্বাচনী এহেন পরিস্থিতি দেখে হতবাক হয়েছেন অতীতের প্রবীন ভোটারা। সেই সাথে নতুন প্রজন্মের ভোটারাও হয়েছে বিচলিত, অবাক। নিজ নিজ অবস্থান থেকে ঝুঁকি নিয়েই নির্বাচন অবলোকন করেছে তারা। রাতেই চারিদিকে ছড়িয়ে যায় ভোট কাস্টের খবর। ফুরফুরে মেজাজে চাঙ্গা হয়ে উঠে মহাজোটের নেতাকর্মীরা। কিন্তু ভাংগা মনেও শেষ চেষ্টা করে গেছে ঐক্যফ্রন্টের সমর্থিত ধানের শীষের সমর্থকরা। ভোটের আগেই কেন্দ্র ভিত্তিক সক্রিয় নেতাকর্মীরা বিতাড়িত হয়েছে ধরপাকড়ের ভয়ে। সেকারনে কোন প্রস্তুতি নিতে পারেনি তারা। অথচ বিপুল সমর্থন ছিল আমজনতার। সেই আমজনতার মধ্যে ভয়-ভীতির কোন কমতি রাখা হয়নি। আসন ভিত্তিক স্থানীয় সচেতন মানুষের নিজস্ব জরিপ ছিল ভোটের মাঠের। সেই জরিপ ভোট এলেই করে নেন মনে মনে। আলাপে, আলাপে প্রকাশ করেন জয় পরাজয়ের তথ্য। কিন্তু তাদের সেই নিজস্ব জরিপের বিচিত্ররূপ দেখে নিজেই আহম্মক বনে গেছেন। বলার কিছ্ ুথাকছে না এ নিয়ে। আঙ্গলে গুনে বলতে পারতে কোন কেন্দ্রে কার ভোট কত। সেই কত এবার যতেই পরিণিত হয়েছে। কিভাবে হলো, তার তারা বুঝে নিয়েছেন। কিন্তু বলবেন কার কাছে, কেনই বা বলবেন। ভেতরে ভেতরে আফসোসের সীমা ছড়িয়ে যাচ্ছে মুখে মুখে। বাস্তবের এতো অমিল, কল্পনাতীত বলছেন তারা। রূপকথার গল্প নয়, বাস্তবে দেখলেন ভোটের সেই হাইবিড্র ফলাফল। মাঝে মধ্য বাংগালীর রক্তের চিরন্তর গরমী হ্ওায়া উঠলেও জোরে চেপে রেখেছেন ভবিষ্যত অনিশ্চয়তায়। কারন কারো উপর ভরসা নেই তাদের। দেখে দেখে চলা তাদের এখন মস্তিষ্কে ক্রীয়াশীল হয়ে গেছে। কারন যে চায় লংকায়, সে হয় রাবণ। তাহলে কার জন্য ঝুঁকি নিবেন তারা। বিএনপির প্রার্থী এমনকি স্থানীয় নেতারা, এলাকার মানুষের পাশে গিয়ে ভোটের আওয়াজ তুলে জাগাতে পারেনি সাধারন ভোটারদের। অসহায়ভাবে গ্রেফতার বা পালিয়ে গা-ঢাকা দিয়েছেন বেশিরভাগ নেতাকর্মী। তারপরও ভোটারদের সহানুভূতি ছিল তাদের উপর। সাধারন ভোটার মুলত ভোট দেয় ¯্রােতের টানে। কিন্তু সেই টানে শক্তি যোগাতে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন বিএনপির স্থানীয় নেতারা। কেন্দ্রগুলোতে চিন্থিত স্থানীয় কোন নেতাকে দেখেনি ভোটারা। মাঠ ছেড়ে ভোটের বাক্স নির্ভর বিপ্লবের স্বপ্ন দেখেছিলেন তারা। মহাজোট-আর বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্ট নেতৃত্বের চিন্তা বা বাস্তবতার আকাশ-পাতাল প্রার্থক্য প্রকাশ পেয়েছে নির্বাচনী ফলাফলে। আকাশ পথে যখন হাটছে আ‘লীগ ভোটের মাঠে, তখণ মেঠো পথে গন্তব্যে যাওয়ার সেকেলে মানসিকতায় তারা ভোট যুদ্ধে। সামন থেকে নেতৃত্ব দ্ওেয়ার যোগ্যতা হারিয়েছে বিএনপি নেতারা, এমনটিই মনে করছেন সচেতন মহল। ভয়-ভীতিতে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে তারা নিজেরাই। উত্তরণে সংঘটিত হতে পারছেনা দলটি। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে বিএনপি। প্রশাসন সহ সেবাধর্মী রাষ্ট্রিয় কোন প্রতিষ্টানের সাথে যোগাযোগ নেই দলের নেতাদের। নামে কেবল পরিচিত হলেও তাদের প্রভাব বা যোগ্যতায় আকৃষ্ট হ্ওয়ার মতো সুযোগ গড়ে তুলতে পারেননি তারা। বরং কেউ বৈরী পরিবেশে এগিয়ে যেতে চাইলে তাকে ঠেকাতে বিরোধীতায় লিপ্ত হয় দলের এক শ্রেনীর নেতাকর্মীরা। দালাল বা বির্তকিত অভিধায় ইমেজ নষ্ট করতে তৎপরতা চোখে পড়ে। দলের মধ্যে চরম মূল্যায়নহীন ত্যাগি নেতাকর্মীরা। ব্যবসায়িক নেতৃত্ব চেপে রেখেছে বিএনপির রাজনীতিক গতিধারাকে। আপোষকামী নেতৃত্বের প্রতি আদর-কদরও দলের নীতি নির্ধারকদের। কারন টাকাতেই পদ পদবী কেনা বেচা হয় বিএনপির, এমন জনশ্রুতি রয়েছে দলটির নেতৃত্বে নিয়ে। একাদশ নির্বাচনে মনোনয়ন নিয়ে চমক দেখাতে পারেনি দলটি। বিবেচনায় নেয়নি মাঠ রাজনীতিকদের। যারা হারলেও দলে, বাঁচলেও দলে রাজপথে থাকবে। মনে করেছে কলা গাছ দিলেই ধানের শীষ পাশ। জোশে হুঁশ হারিয়ে যেন মনোনয়ন প্রদান করেছে মাঠ রাজনীতির বাইরের লোকদের। এখন এই লোকগুলো হেরেছে নির্বাচনী যুদ্ধে। নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, পরাজিত মনোনয়ন প্রাপ্তরা ঘরেই নিরাপদে থাকবে, কিন্তু রাজপথে বা তাদের আগলে রাখার কোন প্রয়োজনই বোধ করবে না তারা। নেতৃত্ব সংকটে আবারও নতুন করে চরম ঝুঁকিতে পড়ে গেল দলের প্রতিশ্রুতিশীল সাধারন নেতাকর্মীরা। বেশিরভাগ আসনে যারা মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন, তারা কোন আশা ভরসায় মাঠ রাজনীতিতে সক্রিয় হবে তা নিয়ে শংকা দেখা দিয়েছে। কারন মাঠ রাজনীতির পোড়া খাওয়া নেতারা দলের মনোনয়ন নিয়ে ভোটের মাঠে এসে পরাজিত হলেও ভরসার একটি ঠিকানা থাকতো আগামীর সম্ভাবনায়। সেই স্থানটুকু অবশিষ্ট রাখলো না বিএনপি শীষ মহল। তৃণমুলে প্রশ্ন, ত্যাগ ত্যাতিক্ষায় উজাড় করে নিজদের দিয়ে যারা পরিক্ষিত হয়, তারা ভোট রাজনীতিতে মনোনয়ন বঞ্চিত থাকতে হয় বিএনপিতে। সময়ের দুধ-কলা তারাই খায় বিএনপিতে, তারা অর্থের নেশায় রাজপথ হতে দুরে নিরাপদে থাকতে অভ্যন্ত। আপদ-বিপদ তাদের মাথায় আসে না। বিপদিদের ব্যবহার করেই তারা নির্বাচনে ঝুকিপূর্ণ বিনিয়োগে সফলতা চালায়। দিনের পর দিন দলের জন্য মাঠে জাল টানে যারা, তাদের চরমভাবে অবমূল্যায়ন করে নির্বাচনী পাখিদের মাছ খাওয়ানোর একমাত্র ক্ষেত্রে স্বীকৃত হয়ে উঠেছে বিএনপি। এবারও সেই নজির রেখেছে। নির্বাচনী পাখিরা চলে যাবে যার যার নীড়ে, কিন্তু আর জাল কত টানবে সাধারন ও দলের ত্যাগি রাজনীতিক যুদ্ধারা। নতুন প্রজন্মের বিএনপি সমর্থকরা দেখেছে, তাদের প্রার্থীদের ভোট রাজনীতির মাঠে কত অবলা (!) সেই অবলাদের কারনে মানসিক প্রস্তুতি থাকার পরও ধাক্কা দিয়ে নিজেদের জানান দিতে পারলো না তারা নির্বাচনে। সময়ের মোকাবেলা সময়ে না করার এ ব্যর্থতায়, যেতো পারলো না বহুদুর তারা। এখন কি হবে তাদের, নিজেই সে প্রশ্নের উত্তর খুজতে গিয়ে সরষে ফুল দেখছে চোখে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।