Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফেনীর বিএনপি নেতাকর্মীরা জলে কুমির ডাঙায় বাঘ অবস্থায়

মো. ওমর ফারুক, ফেনী : | প্রকাশের সময় : ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

ফেনীতে নির্বাচনের পূর্ব মুহূর্তে পুলিশি গ্রেফতার আর হয়রানির ভয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে বিএনপি নেতাকর্মীরা। নির্বাচনের কাজ করাতো দূরের কথা, বাড়ি ঘর বা গ্রামেও অবস্থান করার অনুমতি নেই বিএনপির কর্র্মী-সমর্থদের। এক দিকে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর নেতাকর্মীদের হামলা অন্যদিকে পুলিশের ক্রমাগত অভিযানে কোণঠাসা বিএনপি প্রার্থীরা।
ফেনী-১ (পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া) আসনে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার পরিবর্তে প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন রফিকুল আলম মজনু। তার প্রতিদ্ব›দ্বী হিসেবে জাসদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার নৌকা প্রতীক নিয়ে মাঠে রয়েছেন। এদিকে কেন্দ্রের চাপে আ.লীগের সর্বশেষ স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ আবদুল্লাহ গতকাল সাংবাদিক সম্মেলন করে নৌকার প্রার্থীকে সমর্থন জানিয়ে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

ফেনী-১ আসনটিতে বিএনপি প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনা শতভাগ। তবে নৌকার প্রার্থী হিসেবে শিরিনকে বিজয়ী করতে ইতিমধ্যে মাঠে নেমেছে আ.লীগ নেতাকর্মীরা। তারা বিভিন্ন এলাকায় প্রভাব খাটাতে শুরু করেছে বলে বিএনপি নেতাকর্মীদের সূত্রে জানা গেছে। এমনিতেই নির্বাচনের ফেনী স্টাইল দেশজুড়ে খ্যাতি পেয়েছে। বিএনপি ও সাধারণ ভোটারদের মনে ধারণা ভোটার ছাড়াই বিপুল ভোটে নৌকার প্রার্থী বিজয়ী হয়ে যাবেন। ফেনী-১ আসনের কয়েকজন ভোটার পেশাগত কারণে ফেনী বসবাস করেন। রাতে তাদের ভোটদানের বিষয়ে প্রশ্ন করতেই বলেন, এখন নির্বাচিত হতে ভোট লাগেনা। জাসদ নেত্রী সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ফেনী-১ আসনে ২ হাজার ভোটও পাবেন না বলে মন্তব্য করেছেন ফুলগাজীর এক সাংবাদিক।
ফেনী-২ সদর আসনে নিজ বাড়িতে অবরুদ্ধ জীবন যাপন করছেন বিএনপি প্রার্থী অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন ভিপি। তিনি কোন প্রচারণা চালাতে পারছেন না। নেতাকর্মীরা তার সাথে যোগাযোগ করার কোন সুযোগ পায় না। একদিকে আ.লীগ নেতাকর্মীদের মহড়া অন্যদিকে পুলিশি হয়রানির কারণে বর্তমানে ভিপি জয়নালের সাথে নেতাকর্মীদের কোন যোগাযোগ নেই। জনবিচ্ছিন্ন হয়ে তিনি মাঝে মধ্যে প্রচারণা চালানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। নিজের জিম্মিদশার কথা জানিয়ে এ নেতা তফসিল ঘোষণার পর সংবাদ সম্মেলন করলেও এখন আতঙ্কে নীরব রয়েছেন।
ফেনী-৩ (সোনাগাজী-দাগনভূঁঞা) আসনে মহাজোট প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন জাপা নেতা লে. জে. মাসুদ উদ্দীন চৌধুরী। তার প্রতিদ্ব›দ্বী হিসেবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন দাগনভূঁঞা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আকবর হোসেন। গত কয়েকদিন আগে সোনাগাজীতে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গেলে আকবর হোসেন ও তার সমর্থদের উপর হামলা হয়। এ আসনেও বিএনপির প্রার্থী প্রচার প্রচারণা বিমুখ হয়ে আতঙ্কে দিনযাপন করছে। সবমিলিয়ে তিনটি আসনেই বিএনপি প্রার্থীর কর্র্মী সমর্থকদের পুলিশ এবং ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা জিম্মি করে রেখেছেন। এ যেন জলে কুমির ডাঙায় বাঘ, অবস্থা। এমন পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে ভোটকেন্দ্রে যেতে আগ্রহ দেখাবে না ভোটাররা। ফেনী কারাগারে ১৫২জন বন্দির স্থলে প্রায় ১ হাজার বন্দি অবস্থান করছেন। সেখানে চরম মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। নির্বাচন কেন্দ্রিক গণগ্রেফতারের কারণে গত কয়েকদিন প্রায় ২শ’ নতুন বন্দি রয়েছে।
আবার নির্বাচনের কারণে গত প্রায় ৩ সপ্তাহ ধরে জামিন দেয়া বন্ধ রয়েছে। ফেনী জেলা বিএনপিসাধারণ সম্পাদক জিয়া উদ্দীন মিস্টার বলেন, গণগ্রেফতারের মধ্য দিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে। গত কয়েকদিনে তাদের প্রায় ২শ’ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান এ নেতা। এমন পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে ভোট কেন্দ্রে বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে এজেন্টও খুঁজে পাওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ