Inqilab Logo

সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

গাজীপুর-২ ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীর বাড়িতে যৌথবাহিনীর হানা

ভয়-ভীতি উপেক্ষা করে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান

টঙ্গী সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

গাজীপুর-২ আসনে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত ধানের শীষ প্রার্থী আলহাজ¦ সালাহ উদ্দিন সরকার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, র‌্যাব, বিজিবি ও পুলিশের সমন্বয়ে যৌথবাহিনী গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তার বাড়ি ঘেরাও করে রাখে এবং তার বড় ভাইয়ের বাড়ির গেট ও তালা ভেঙে তান্ডব চালায়। তিনি বলেন, আমার বাড়িতে নির্বাচনী এজেন্ট ও কর্মীরা যাতে আসতে না পারেন সেজন্য পুলিশ প্রশাসন ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। গাজীপুর-২ আসনে ধানের শীষ প্রতীকের ঐক্যফ্রণ্টপ্রার্থী আলহাজ¦ সালাহ উদ্দিন সরকার গতকাল শুক্রবার গ্রেফতার এড়াতে নিজ বাড়িতে না করে তার বড় ভাই মরহুম সিরাজ উদ্দিন সরকারের বাড়ির উঠানে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি সরকার ও প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে আরো বলেন, অন্তত ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের দিন যেন বিএনপির কোন নেতাকর্মী ও এজেন্টদের গ্রেফতার করা না হয়। 

তিনি ভোটারদের কেন্দ্রে যাওয়ার বিনীত অনুরোধ জানিয়ে বলেন, মামলা-হামলায় আমাদের কর্মীরা ঘরছাড়া। আমাকেও আট দিন ধরে প্রচারণা থেকে দূরে রাখা হয়েছে। আমাকে সুযোগ দিলে প্রত্যেক ভোটারের বাড়িতে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। আপনাদের বিরুদ্ধে যেহেতু কোন মামলা নেই; কাজেই আপনাদের কেন্দ্রে যেতে বাধা নাই। আপনাদেরকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে ৩০ তারিখে আগামীর সুন্দর বাংলাদেশ গড়বেন নাকি বর্তমান পরিস্থিতির মতই বাংলাদেশে থাকবেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার গণসংযোগে জনতার ব্যাপক সাড়া দেখে ক্ষমতাসীনরা আদালতকে ব্যবহার করে আমার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। যে মামলায় আমার বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করা হয়েছে সাত বছর আগের সেই মামলায় প্রতিটি ধার্য্য তারিখে আমি নিয়মিত হাজিরা দিয়ে আসছি। সাধারণতঃ এমন মামলায় জামিন বাতিল হওয়ার কোন সুযোগ ছিল না। হঠাৎ গত ২০ ডিসেম্বর মামলায় চার্জ গঠন করে আমাকেসহ সকল আসামীর জামিন বাতিল করা হয়। বর্তমানে বহু প্রতিকূলতার মধ্যেও যতটুকু কাজ হচ্ছে আমি গ্রেফতার হলে ততটুকুও হতো না। তাই সরাসরি গণসংযোগ না করে আমাকে কৌশলী অবস্থানে থেকে নির্বাচনী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হচ্ছে। আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে আমার সাড়ে তিন লাখ পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেছে। লিফলেট বিতরণে বাধা দেয়া হয়েছে। পুলিশ আমাদের প্রচারকর্মীদের ধরে নিয়ে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ক্যাম্পে সোপর্দ করছে এবং মসকরা করে বলছে ‘আপনাদেরকে নৌকার কর্মী দিয়ে গেলাম’। তিনি বলেন, তফসিল ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ২৫-৩০টি মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। আমার সাথে গণসংযোগসহ সরাসরি নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে যারা জড়িত তাদের প্রত্যেককে আসামী করা হয়েছে। গত কয়েক দিনে অর্ধ শাতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমাদের একজন কর্মীও ঘরে ঘুমাতে পারছেন না। কর্মীরা যাতে কেন্দ্রে যেতে না পারেন সেজন্য প্রত্যেকটি ওয়ার্ডের দায়িত্বশীল নেতাদের বাড়িতে আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা হানা দিচ্ছে’।
নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ভোটারদেরকে নির্বিঘ্নে কেন্দ্রে যেতে দিন, তাতে ফলাফল যাই হোক আমরা মেনে নেব। আমি গ্রেফতার হলেও সকল ভয়ভীতি উপেক্ষা করে কর্মীরা নির্বাচন চালিয়ে যাবে।’
তিনি আরো বলেন, এদেশের মানুষের ভোটাধিকার, বাক স্বাধীনতা, সাংবাদিকদের লেখনির স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। দেশের বর্তমান অবস্থা অব্যাহত থাকলে একদিন ‘সাংবাদিক’ শব্দটিও বিলুপ্ত হয়ে যাবে। কাজেই দেশপ্রেমিক সাংবাদিক হিসেবে নিরপেক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন ও প্রতিটি ভোট কেন্দ্রের বাস্তব চিত্র ধারণ করার জন্য তিনি সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ জানান।
তরুণ ভোটারদের উদ্দেশে সালাহউদ্দিন সরকার বলেন, তরুণরা এদেশের ভবিষ্যত। আগামী দিন সুন্দর বাংলাদেশ হবে নাকি বর্তমানের বাংলাদেশ হবে তরুণ প্রজন্মকেই সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কাজেই যারা এবার নতুন ভোটার হয়েছেন এবং বিগত দশ বছর ধরে যেসব তরুণ ভোটাররা ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে সেই তরুণ ভোটাররা যাতে এবারও ভোট দেয়া থেকে বঞ্চিত না হয় নির্বাচন কমিশনকে সেই ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি অনুরোধ জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. সরাফত হোসেন, গাজীপুর মহানগর কৃষকদলের সভাপতি সাবেক কাউন্সিলর মো. জাহাঙ্গীর আলম, ৫৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপিসাধারণ সম্পাদক সাবেক কাউন্সিলর শেখ মো. আলেক, ৫৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপিসাধারণ সম্পাদক শেখ মো. ইব্রাহিম।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ