বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
শেষ মুহূর্তে গাইবান্ধার চারটি সংসদীয় আসনে প্রচারণা জমে উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার এসব আসনের উপজেলা ও জেলা শহরগুলো বিভিন্ন দলের প্রচারণায় মুখরিত ছিল। দুপুর দুইটার পর থেকেই প্রচারণা জমে উঠে। কখনো মিছিলে, কখনো নেচে গেয়ে, কখনো ছন্দ মিলিয়ে ভোট প্রার্থনা করা হয়। নৌকার চেয়ে ধানের শীষের প্রচারণা ছিল কম। বিএনপি অল্প সংখ্যক মাইক দিয়ে প্রচার সীমাবদ্ধ রাখে।
এরমধ্যে গতকাল গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনে মহাজোটের প্রার্থী শামীম হায়দার পাটোয়ারি উপজেলার সোনারায়, দহবন্দ ও ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নে গণসংযোগ করেন। তার সঙ্গে সুন্দরগঞ্জ পৌর মেয়র ও ১৫টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন। গতকাল বিকেলে তিনি দহবন্দ ইউনিয়নের গোপালচরণ গ্রামে উঠান বৈঠক করেন। বৈঠকে শামীম হায়দার বলেন, পুনরায় নির্বাচিত হলে উপজেলার ৫০ হাজার বেকার যুবক যুবতীর কর্মসংস্থান, নদী ভাঙ্গনে স্থায়ী এবং প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে পাঠাগার নির্মাণ করবো। এ ছাড়া এখানে বিএনপি প্রার্থী জামায়াত নেতা মাজেদুর রহমান বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন।
গাইবান্ধা-২ (সদর) আসনে মহাজোট প্রার্থী মাহাবুব আরা বেগমের নৌকা মার্কার সমর্থনে গতকাল দুপুরে গাইবান্ধা শহরে মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি গাইবান্ধা শহরের শহীদ মিনার থেকে বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে গাইবান্ধা ইসলামিয়া হাইস্কুল মাঠে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে মহাজোট প্রার্থী মাহাবুব আরা বেগম ভোট প্রার্থনা করে সমাপনী বক্তব্য রাখেন।
এ ছাড়া এখানকার বিএনপি প্রার্থী আবদুর রশিদ সরকার গাইবান্ধা সদর উপজেলার বাদিয়াখালি ও জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন। এসব সভায় আবদুর রশিদ বলেন জনগণ পরিবর্তন চায়। আপনরা ধানের শীষে ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগের দু:শাসন থেকে দেশ ও মানুষকে রক্ষা করুণ। বিকেলে শহরের বিজয়স্তম্ভ চত্বরে সিপিবি প্রার্থী মিহির ঘোষের সমর্থনে নির্বাচনী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনটি আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। এখানে জাতীয় পার্টি প্রার্থী কাজী মশিউর রহমান গতকাল দিনভর গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভা ও উপজেলার নাকাইহাট, হরিরামপুর, রথের বাজার, রাখালবুরুজ, ফুলবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন। কাজী মশিউর রহমান গতকাল দুপুরে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা শহরের চৌরাস্তা মোড়ে এক পথসভায় বলেন সাধারণ মানুষ জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। আপনারাও লাঙ্গলে ভোট দিবেন।
এখানকার আওয়ামী লীগ প্রার্থী মনোয়ার হোসেন চৌধুরী গতকাল দিনভর গণসংযোগ করেন। তিনি গতকাল উপজেলার রাহাহার, কাটাবাড়ি, ফুলবাড়ি ও কামদিয়া ইউনিয়নে গণসংযোগ করেন এবং বিভিন্ন স্থানে পথসভা করেন। এসময় গোবিন্দগঞ্জ পৌর মেয়র আতাউর রহমান সরকার তার সঙ্গে ছিলেন। এসব সভায় তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নৌকা প্রতীকে ভোট দিন।
গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনটি আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির জন্য উন্মুক্ত। এখানে বর্তমান ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া এবারও আওয়ামী লীগের প্রার্থী। এ আসনে মহাজোটের প্রার্থী ফজলে রাব্বী মিয়া গতকাল বিকেলে ফুলছড়ি উপজেলার কালিরবাজার নাপিতেরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে নির্বাচনী জনসভা করেন। জনসভায় তিনি বলেন, যোগ্যতা, দক্ষতা ও উন্নয়ন বিবেচনায় ভোট দিতে হবে। এবার শেখ হাসিনার নৌকার গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, এবার নির্বাচিত হলে দুই উপজেলার উন্নয়ন হবে।
এখানে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে মাঠে আছেন বিশিষ্ট আইনজীবী গোলাম শহীদ রনজু। তিনি গতকাল ফুলছড়ি উপজেলার উদাখালি ও উড়িয়া ইউনিয়নে গণসংযোগ ও পথসভা করেন।
এ আসনে বিএনপি প্রার্থী ফারুক আলম সরকার ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ভোট চেয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তিনি গতকাল দিনভর সাঘাটা উপজেলার মুক্তিনগর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ও পাড়া-মহল্লায় সাধারণ মানুষের কাছে ধানেরশীষের ভোট চেয়ে গণসংযোগ করেন। গতকাল দুপুরে মুক্তিনগর ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামে উঠোন বৈঠকে ফারুক আলম বলেন, শান্তির প্রতীক ধানের শীষ। মানুষের শান্তিতে বেচে থাকার জন্য ধানের শীষের বিকল্প নেই। গণতন্ত্র আজ বন্দি উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় নেত্রীকে জেলে রেখে এ সরকার গণতন্ত্রকেই বন্দি করেছে। তিনি সব বাধা অতিক্রম করে ৩০ ডিসেম্বর সবাইকে ভোট প্রদান নিশ্চিত করার আহবান জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।