নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বয়স পেরিয়ে গেছে ৩৬। তবে বল হাতে নিলে যেন এখনও তারুণ্যের রুদ্রপ্রতীক বনে যান আব্দুর রাজ্জাক। অনেক দিন থেকেই জাতীয় দলে ব্রত্য এই ঘূর্ণির জাদুকর আবারো দেখানে নিজের দ্যুতি। গতবারের মতো এবারো বিসিএলের সেরা উইকেট সংগ্রাহক হয়েছেন দক্ষিণাঞ্চল অধিনায়ক। এই নিয়ে তার ঝুলিতেই সবশেষ পাঁচ আসরে চতুর্থবার সেরা বোলারের ট্রফিটি। তবে ব্যাটিংয়ে প্রথমবারের মত তালিকার শীর্ষ স্থানে নাম লিখিয়েছেন অনেক দিন ধরে জাতীয় দলের বাইরে থাকা এনামুল হক বিজয়।
পঞ্চম রাউন্ড শেষে সানজামুল ইসলামের চেয়ে এক উইকেট পিছিয়ে ছিলেন রাজ্জাক। ষষ্ঠ ও শেষ রাউন্ডে দক্ষিণাঞ্চলের বাঁহাতি এই স্পিনার ১২ উইকেট নিয়ে দলকে এনে দিলেন বিসিএলের চতুর্থ শিরোপা। সানজামুলকে অনেকটা পেছনে ফেলে সবশেষ পাঁচ আসরে চতুর্থবারের মতো পেলেন সর্বোচ্চ উইকেট।
তৃতীয় আসরে প্রথমবারের মতো সর্বোচ্চ উইকেট পেয়েছিলেন রাজ্জাক। পরের আসরে ৩৮ উইকেট নিয়ে তিনিই ছিলেন চূড়ায়। সেরার আসনে ছিলেন না পঞ্চম আসরে। গতবার ৪৩ আবার শীর্ষে ছিলেন রাজ্জাক। এবার ২৪.৮৮ গড়ে নিলেন ৩৪ উইকেট।
জাতীয় দলে উপেক্ষিত রাজ্জাক ঘরোয়া ক্রিকেটে দেখিয়ে চলেছেন নিজের সামর্থ্য। এবারের বিসিএলে চারবার নিয়েছেন পাঁচ উইকেট, একবার ১০ উইকেট। ইনিংস সেরা ৭/৬৯। ১৪৪ রানে ১২ উইকেট নিয়ে ২০১৮-১৯ মৌসুমে বিসিএলের সেরা বোলিং ফিগার তারই।
গত এনসিএলে ২০ উইকেট নিয়ে চতুর্থ স্থানে থাকা সানজামুল বিসিএলে নিলেন ২৯ উইকেট। তার ইনিংস সেরা ৬/১০৩। উত্তরাঞ্চলের বাঁহাতি এই স্পিনার পাঁচ উইকেট নেন চারবার।
দুই অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনারের পেছনে থাকা অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান ২৯.৩০ গড়ে নেন ২৩ উইকেট। ক্যারিয়ারে এই প্রথম কোনো টুর্নামেন্টে সেরা পাঁচে জায়গা পেলেন তিনি। মেহেদির ইনিংস সেরা ৫/৭২। ক্যারিয়ারে এটাই তার প্রথম পাঁচ উইকেট।
বোলিংয়ে তিনে থাকা মেহেদি ৯১.৮০ গড়ে ৪৫৯ রান করে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তালিকায় আছেন পাঁচ নম্বরে।
একমাত্র পেসার হিসেবে এবারের আসরে ১০ উইকেট নেওয়া ইবাদত হোসেন আছেন চার নম্বরে। ২৫.৯৫ গড়ে ২১ উইকেট নেন উত্তরাঞ্চলের এই পেসার। তার ইনিংস সেরা ৬/৫১, ম্যাচ সেরা ১০/১৩৯।
পাঁচ নম্বরে আছেন টুর্নামেন্টের রানার্সআপ পূর্বাঞ্চলের আবু জায়েদ চৌধুরী। ২৫.০৫ গড়ে এই পেসার নেন ২০ উইকেট। জাতীয় দলে জায়গা হারানো এই তরুণের ইনিংস সেরা ৬/৭৪।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের আরেক টুর্নামেন্ট এনসিএলের গত আসরের সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক নাঈম হাসান বিসিএলে খেলেন মোটে এক ম্যাচ। তরুণ এই অফ স্পিনার সেই ম্যাচে ৯১ রান দিয়ে নেন ১০ উইকেট। তার ৮/৪৭ এবারের আসরে ইনিংসে সেরা বোলিং ফিগার।
এদিয়ে প্রথমবারের মতো বিসিএলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকার শীর্ষে থেকে টুর্নামেন্ট শেষ করেছেন এনামুল হক। এনসিএলের পর বিসিএলেও সেরা পাঁচে থাকলেন নাঈম ইসলাম ও রনি তালুকদার। দুই জনের মাঝে জায়গা করে নিয়েছেন জুনায়েদ সিদ্দিক। অলরাউন্ড নৈপুণ্যে উজ্জ্বল মেহেদি হাসান বোলিংয়ের মতো ব্যাটিংয়েও আছেন সেরা পাঁচে।
এবারের আসরে একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে ছয়শর বেশি রান করেন চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণাঞ্চলের ওপেনার এনামুল। তার ৬৫৮ রানের ২০০ আসে ষষ্ঠ ও শেষ রাউন্ডে। এবারের আসরে নিজের সেরা ১৮০ রান করেন সেই ম্যাচেই। ৬৫.৮০ গড়ে রান করা এনামুলের ব্যাট থেকে আসে দুটি সেঞ্চুরি ও তিনটি ফিফটি।
লম্বা সময় ধরে জাতীয় দলের বাইরে থাকা নাঈম ৪৪৪ রান করে এনসিএলে ছিলেন চার নম্বরে। ৫২২ রান করে বিসিএলে দুই নম্বরে আছেন উত্তরাঞ্চলের এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। ৫২.২০ গড়ে রান করা নাঈমের ব্যাট থেকে আসে দুটি সেঞ্চুরি ও তিনটি ফিফটি। তার সেরা ১৩৭। জুনায়েদ আছেন তালিকার তিন নম্বরে। ৫০ গড়ে ৫০০ রান করতে উত্তরাঞ্চলের বাঁহাতি ওপেনার হাঁকান একটি সেঞ্চুরি ও চারটি ফিফটি। তার সেরা ১১২।
এনসিএলে ৪২৬ রান করে পাঁচ নম্বরে থাকা রনি এগিয়েছেন এক ধাপ। বিসিএলে ৪৬ গড়ে ৪৬০ রান করে আছেন চার নম্বরে। পূর্বাঞ্চলের এই ওপেনারের ব্যাট থেকে আসে একটি সেঞ্চুরি ও তিনটি ফিফটি।
দক্ষিণাঞ্চলের শিরোপা জয়ে ব্যাটে-বল দারুণ অবদান রাখা মেহেদী আছেন পাঁচ নম্বরে। ২৩ উইকেট নিয়ে এই অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার সেরা উইকেট শিকারির তালিকায় আছেন তিন নম্বরে। সেরা পাঁচে থাকা ব্যাটসম্যানের মধ্যে কেবল মেহেদীরই নেই কোনো সেঞ্চুরি। তার চার ফিফটির সবচেয়ে বড়টি ৮৬ রানের। পাঁচ ইনিংসে অপরাজিত থাকা মেহেদি ৯১.৮০ গড়ে করেন ৪৫৯ রান।
বিসিএলের এবারের আসরে চারশর বেশি রান আছে মাহমুদুল হাসান, মুমিনুল হক, ইয়াসির আলী ও আব্দুল মজিদের। এবারের আসরে নেই কোনো ডাবল সেঞ্চুরি। সর্বোচ্চ মুমিনুলের ১৯৪। মাত্র ৫ ইনিংসে দুটি করে ফিফটি আর সেঞ্চুরিতে ১০৪ গড়ে ৪১৬ রান করেন পূর্বাঞ্চলের মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান ইয়াসির। টুর্নামেন্টে একমাত্র তারই গড় তিন অঙ্ক ছুঁয়েছে।
আসরের সেরা ৫
ব্যাটসম্যান ম্যাচ/ইনি. রান সর্বোচ্চ গড় স্ট্রাইক ১০০/৫০
আনামুল হক (দক্ষিণাঞ্চল) ৬/১২ ৬৫৮ ১৮০ ৬৫.৮০ ৬১.২৬ ২/৩
নাঈম ইসলাম (উত্তরাঞ্চল) ৬/১০ ৫২২ ১৩৭ ৫২.২০ ৪৪.৩১ ২/৩
জুনায়েদ সিদ্দিকী (উত্তরাঞ্চল) ৬/১১ ৫০০ ১১২ ৫০.০০ ৫৫.৯৯ ১/৪
রনি তালুকদার (পূর্বাঞ্চল) ৬/১০ ৪৬০ ১৮৫ ৪৬.০০ ৬৮.৬৫ ১/৩
মেহেদী হাসান (দক্ষিণাঞ্চল) ৬/১০ ৪৫৯ ৮৬ ৯১.৮০ ৭১.৩৮ ০/৪
বোলার ম্যাচ/ইনি উই. ইনি.সেরা ম্যাচেসেরা গড় ইকো ৫/১০
আব্দুর রাজ্জাক (দক্ষিণাঞ্চল) ৬/১০ ৩৪ ৭/৬৯ ১২/১৪৪ ২৪.৮৮ ২.৮৮ ৪/১
সানজামুল ইসলাম (উত্তরাঞ্চল) ৬/১০ ২৯ ৬/১০৩ ৮/২৩৭ ৩১.২০ ?? ৪/০
মেহেদী হাসান (দক্ষিণাঞ্চল) ৬/১০ ২৩ ৫/৭২ ৭/১১৩ ২৯.৩০ ৩.০৪ ১/০
এবাদত হোসেন (উত্তরাঞ্চল) ৫/৮ ২১ ৬/৫১ ১০/১৩৯ ২৫.৯৫ ৩.৫৮ ১/১
আবু জায়েদ রাহী (পূর্বাঞ্চল) ৫/৯ ২০ ৬/৭৪ ৬/৭৪ ২৫.০৫ ৩.৭২ ১/০
পয়েন্ট টেবিল
দল ম্যাচ জয় ড্র হার পয়েন্ট
দক্ষিণাঞ্চল ৬ ২ ৩ ১ ৩১.৮৮
পূর্বাঞ্চল ৬ ১ ৫ ০ ২৯.১৪
মধ্যাঞ্চল ৬ ১ ৩ ২ ২৩.৩৭
উত্তরাঞ্চল ৬ ০ ৫ ১ ১৮.৬১
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।