Inqilab Logo

সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

গাজী চায় ধরে রাখতে, কাজী চায় রুখতে

নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ)

মোঃ খলিল সিকদার, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে ঃ | প্রকাশের সময় : ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

ভোটের বাকি মাত্র দুদিন। এরই মধ্যে চায়ের দোকান থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লা, মাঠ-ঘাটসহ চারদিকে বইছে নির্বাচনী ঝড়। সারাদেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনেও বইছে নির্বাচনী হাওয়া। এবার নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসন থেকে মোট আট জন প্রার্থী হয়েছেন। এ আসনের প্রার্থীরা যার যার মতো প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। কেউ মাইকিং করে, কেউ উঠোন বৈঠন করে, কেউ বাড়ি বাড়ি হেঁটে, কেউ পথ সভা করে, আবার কেউ লিফলেট বিতরণ করে, কেউ কেউ সামাজিক মাধ্যম ফেইসবুকে ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করেছেন। তবে ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতেও প্রস্তুত রয়েছেন। ২৮ ডিসেম্বর (আজ) সকাল ৮ টা থেকে প্রচার প্রচারনা বন্ধ করার নির্দেশ রয়েছে। এ কারনে প্রার্থীরা প্রচার প্রাচারণার কাজ আগেই ভাগেই সেরে ফেলেছেন।
এবারের নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে তার সামনে থাকছে হ্যাট্রিকের হাতছানি। তাই গোলাম দস্তগীর চাচ্ছেন এ আসনটি ধরে রাখতে। তবে, এবার ছাড় দিতে চান না বিএনপি মনোনীত প্রার্থী কাজী মনিরুজ্জামান মনিরও। বড় দুই দলের এই দুই প্রার্থী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গিয়ে মাইকিং, কেউ উঠোন বৈঠক, বাড়ি বাড়ি হেঁটে, পথ সভা করে, লিফলেট বিতরণ করে, সামাজিক মাধ্যম ফেইসবুকে ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করেছেন। নির্বাচনের মাঠে এগিয়ে রয়েছেন গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক)। বিএনপি প্রার্থী কাজী মনিরুজ্জামান মনির প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে অনেকটা ধীর গতিতে।
নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের প্রার্থীরা হলেন, বিএনপি মনোনিত প্রার্থী (ধানের শীষ) কাজী মনিরুজ্জামান মনির, আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থী (নৌকা) গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক)। এ ছাড়া অন্যান্য দলের প্রার্থীরা হলেন, জাকের পার্টির মনোনীত প্রার্থী (গোলাপ ফুল) মাহফুজুর রহমান, জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী (লাঙ্গল) আজম খাঁন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী (হাত পাখা) ইমদাদুল্লাহ, বাংলাদেশ কমিউনিষ্ট পার্টির মনোনীত প্রার্থী (কাস্তে) মনিরুজ্জামান চন্দন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রেহান আফজাল ও হাবিবুর রহমান হাবিব।
নেতাকর্মী ও স্থানীয় ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ নির্বাচনে আটঘাঁট বেঁধে নেমেছেন গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক) এর পক্ষের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে তার সমর্থকরা। এখানে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান ভুঁইয়ার সঙ্গে গোলাম দস্তগীর গাজীর (বীর প্রতীক) বিরোধ ছিলো। নৌকা প্রতীক পাওয়ার আগ মুহুর্ত পর্যন্ত আওয়ামীলীগের দুই ভাগে বিভক্ত থাকায় এ আসনে ভরাডুবির আশঙ্কা করেছিলো দলটির নেতাকর্মীরা। কিন্তু চুড়ান্ত মনোনয়ন পাওয়ার পর তাদের কোন্দল ও বিরোধ মিটিয়ে এক সাথে হয়ে নৌকার প্রচারণায় মাঠে নেমে পড়ায় এখানে এখন নৌকা শক্ত অবস্থানে রয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ড ও পাড়ামহল্লায় এখন আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা নৌকা প্রতীকের জন্য দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন। ভুলতা ফ্লাইওভার, শীতলক্ষ্যা সেতু, স্কুল-কলেজের ভবন নির্মাণ, রাস্তাঘাটের উন্নয়নসহ গত ১০ বছরে ৩২’শ কোটি টাকার উন্নয়ন মুলক চিত্র সাধারন মানুষের কাছে তুলে ধরছেন তারা।
অপর দিকে, এ আসনে কাজী মনিরুজ্জামান মনিরকে মনোনয়ন দেয়ার পর থেকেই মোস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপু ও অ্যাড. তৈমুর আলম খন্দকার সমর্থকরা নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে দাঁড়ায়। তবে গত কয়েক দিনে কয়েকটি নির্বাচনী প্রচারণায় অ্যাড. তৈমুর আলম খন্দকার মাঠে থাকায় নেতাকর্মীদের মাঝে অনেকটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। তারা এখনও জয়ের ব্যপারে আশাবাদী।
জাকের পার্টির মনোনিত প্রার্থী (গোলাপ ফুল) মাহফুজুর রহমানের তেমন কোন পরিচিতি নেই। নিজের অবস্থান তৈরি করতে তিনি প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এখানে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী (লাঙ্গল) আজম খাঁনের অবস্থা নেই বললেই চলে। এ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রার্থী হয়েছেন ইমদাদুল্লাহ। ইমদাদুল্লাহ’র পক্ষে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ রূপগঞ্জ শাখার নেতাকর্মীরা প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। অপর দিকে, বাংলাদেশ কমিউনিষ্ট পার্টির মনোনিত প্রার্থী (কাস্তে) মনিরুজ্জামান চন্দন প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রেহান আফজালকে এখানকার ভোটররা চেনেননা বলেই চলে। তবে, তিনি নিজেকে পরিচিত করার লক্ষ্যে কয়েকটি স্থানে লিফলেট বিতরণ ও রূপগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। আর হাবিবুর রহমান হাবিব নির্বাচনী কোন কার্যক্রম করছেন না ।
এবার ১২৭টি কেন্দ্রের ৬৯৩টি বুথে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ আসনে মহিলা ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৭৮ হাজার ৩৫৪, পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭১ হাজার ৪৩৩, মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৮৮৭টি। ইতিমধ্যে জেলা রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার ভোট গ্রহনের পুরোপুরি প্রস্তুতি নিয়েছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার আবুল ফাতে মোঃ সফিকুল ইসলাম বলেন, ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার লক্ষ্যে সকল প্রকার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সার্বিক নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশসহ আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য প্রস্তুত রয়েছে। কোন প্রকার ঝামেলার চেষ্টা করলে ছাড় দেয়া হবেনা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গাজী চায় ধরে রাখতে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ