Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সন্তানদের নিরাপত্তায় উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা

ব্যাচেলরদের বাসা ছাড়ার নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার: | প্রকাশের সময় : ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

রাজধানীতে থাকা সব ব্যাচেলরদের গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে বাসা ও মেস ছাড়তে নির্দেশ দিয়েছে নগরীর বাড়িওয়ালারা। পুলিশের বরাতে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে বাড়িওয়ালা ও ব্যাচেলর ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে জানা গেছে। নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদেরকে মেস বা বাসায় না আসার জন্য বলা হয়েছে।
নগরীর বিভিন্ন এলাকার বাসা বাড়িতে ও গেটে বাসা ছাড়া সংক্রান্ত একটি নোটিশও দেখা গেছে। নগরীর কয়েকটি থানার পুলিশ বিষয়টি স্বীকার করলেও এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে কোন নির্দেশনা নেই বলে জানানো হয়।
এদিকে হঠাৎ করে বাসা ছাড়ার এমন নির্দেশনায় হয়রানি ও চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ ব্যাচেলররা। তারা বলেন, হঠাৎ করে এমন সিদ্ধান্ত আসায় তারা দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়েছেন। এমন নির্দেশনায় অনেক অভিভাবকও সন্তানের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন।
গতকাল পান্থপথ, বাড্ডা, খিলক্ষেত, নিকুঞ্জ, মণিপুরি পাড়া ও মিরপুর এলাকায় বসবাসরত বেশ কয়েকজন ব্যাচেলর পুলিশের বরাতে বাড়িওয়ালার কাছ থেকে ফ্ল্যাট ছাড়ার নির্দেশনা পেয়েছেন। মেস আকারে থাকা আবাসিক ভবনের পাশাপাশি বিভিন্ন হোস্টেলেও পুলিশের পক্ষ থেকে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান হোস্টেলে থাকা ছাত্র-ছাত্রীরা। নির্দেশনা পাওয়ার পর বিপাকে পড়েছেন মেস ও হোস্টেলে থাকা ব্যাচেলররা। তারা বলছেন, এটি যেমন ভোগান্তির তেমনি হয়রানিও বটে।
নিকুঞ্জ-২ এ একটি মেসে থাকা ফ্রিল্যান্সার নাইমুর রহমান সুফি জানান, বাসার দারোয়ান জানিয়েছে থানা থেকে পুলিশ এসে বলে গেছে আজ (গতকাল) সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে সব ব্যাচেলরকে বাসা ছেড়ে চলে যেতে এবং ভোটের পরে ফিরতে।
ইমরান মাহফুজ নামে ইংরেজি দৈনিকের এক সাংবাদিক বলেন, তিনি পান্থপথে একটি বাসায় ভাড়া থাকেন। গতকাল সকালে বাসার গেটে ও নোটিশ বোর্ডে ‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা’র মধ্যে ব্যাচেলরদের বাসা ছাড়ার একটি নির্দেশনা দেখতে পান। এমনকি রুমে এসেও নোটিশটি কর্তৃপক্ষ দিয়ে গেছেন। ওই বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যায়, নির্বাচন উপলক্ষে ২৭ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোন ব্যাচেলর বর্ডার বাড়িতে থাকতে পারবেন না। ১ জানুয়ারি থেকে তারা বাসায় ফিরতে পারবেন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠানের চাকরির কাজে তাকে ঢাকায় থাকতে হবে বলে বাড়ির মালিককে জানালে মালিক তাকে ‘নিজ জিম্মায়’ থাকার কথা ছাফ জানিয়ে দেন। উদ্বিগ্ন এই সাংবাদিক বলেন, হঠাৎ করে এত অল্প সময়ে বিয়ে করাও সম্ভব না, তেমিন বাসা ছেড়ে গ্রামে যাওয়ারও কোন উপায় নেই। ফার্মগেটে মেসে থাকা এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, হঠাৎ এমন নির্দেশনা আসায় সন্তানকে বিপাকে পড়েছেন। তিনি একটি মেসে ও ছেলে আলাদা হোস্টেলে থাকায় উৎকণ্ঠা আরও বেশি। তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে নির্দেশনাটি দেওয়া হলে পরিস্থিতি সহজে সামাল দেওয়া যেত।
এদিকে বাসা ছাড়ার নির্দেশনার বিষয়ে ডিএমপির ডিসি (মিডিয়া) মো. মাসুদুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ডিএমপি থেকে এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। এটি একটি গুজব। যে কোনো বিষয়ে সত্যতা যাচাইয়ে তিনি ৯৯৯ নম্বরে কল করার অনুরোধ করেন।
তবে ক্ষিলখেত এলাকায় মেস বাসা ও হোস্টেল খালি করে দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন খিলক্ষেত থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, আমরা এ ধরনের নির্দেশনা দিয়েছি। আজ (গতকাল) সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে বাসা খালি করতে হবে। নির্বাচনের পরেই তারা আবার বাসায় ফিরে আসতে পারবেন। এছাড়া শ্যামপুর থানার ওসি মিজানুর রহমানসহ বেশ কয়েকটি থানার ওসিও বিষয়টি স্বীকার করেছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ব্যাচেলরদের বাসা ছাড়ার নির্দেশ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ