Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শত বাধা ভয় উপেক্ষা করে ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীরা মাঠে

দক্ষিণ-পশ্চিমে শেষমুহূর্তে প্রচারণা তুঙ্গে

মিজানুর রহমান তোতা | প্রকাশের সময় : ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৫:৪৩ পিএম | আপডেট : ৬:১৬ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৮

বাঁধা বিপত্তি, ভয়-ভীতি, হামলা মামলা ও ব্যাপক ধরপাকড়সহ হাজারো সমস্যা এবং পুরোপুরি প্রতিকুল পরিস্থিতিতেও দৃঢ় মনোবল নিয়ে ভোটের মাঠে টিকে আছেন দক্ষিণ-পশ্চিমের ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ও তাদের নেতা-কর্মীরা। ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ধানের শীষের যশোর সদরের প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের পুত্র অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে ঘোষণা দিয়েছেন, যতকিছুই হোক শেষপর্যন্ত নির্বাচনে টিকে থাকবো। তিনি সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেছেন, আমার আশেপাশের সব নেতা-কর্মীদের আটক করে আমাকে নিঃসঙ্গ করা হয়েছে। কবুও আমি ভয় পাই না, আমাকে গ্রেফতার করলেও আমার স্ত্রী মাঠে থাকবে। একই ধরণের কথা বলেছেন, মেহেরপুর, সাতক্ষীরা, কেশবপুর ও খুলনার ধানের শীষের প্রার্থী। গোটা দক্ষিণ-পশ্চিমের ৩৬টি আসনের অধিকাংশেই খুবই খারাপ অবস্থার মধ্যেও সাহস নিয়ে ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীরা ভোটের মাঠে সরব রয়েছেন। এর বিপরীতে মহাজোট প্রার্থীরা নির্বাচনের শুরু থেকেই পুরোপুরি অনুকুল পরিস্থিতিতে অত্যন্ত ফুরফুরে মেজাজে নির্বাচনী মাঠ কাঁপাচ্ছেন। ভোটের মাঠের এই চিত্র দেখে সচেতন মানুষ ও পর্যবেক্ষকদের মন্তব্য ‘এটি সব দলের অংশগ্রহণমূলক ভোট এটি ঠিক, কিন্তু মোটেও প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ নয়-একেবারেই একপক্ষীয় ভোট’।

আওয়ামী লীগের কয়েকজন প্রার্থী ও ভোট কর্মীর কথা, ‘আমরা তো কারো বাঁধা দিচ্ছি না, ওরা নিজেরাই ভয়ে ভোটের মাঠে নামছে না, এতে আমাদের কী করার আছে’। যশোর, খুলনা, কুস্টিয়া, ঝিনাইদহ ও মাগুরার বেশ কয়েকজন ভোটারদের সঙ্গে কথা হলো, তারা বললেন, ‘এ ক্যামন ভোট রে ভাই, ভোটের মাঠে নিয়ে যাবার জন্য ভোটারদের কদর থাকে। আর এ দেখছি উল্টো ভোটকেন্দ্রে যেন না যায়, অনেক এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি ধামকি দেওয়া হচ্ছে’। কয়েকজন পুলিশ অফিসারের কথা, ‘আমাদের ঢালাওভাবে দোষারোপ করা হচ্ছে, আমরা চাই সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন। কিছু অতি উৎসাহী পুলিশ বাড়াবাড়ি করে সরকারেরই ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে’।

একজন প্রবীণ রাজনৈতিক নেতা বললেন, ‘নির্বাচন করবেন মাঠে নামবেন না, এটা তো হয় না, দেশের বিভিন্নস্থানে তো ঝামেলা ঝঞ্জাট রক্তাক্ত অবস্থায়ও তো ভয়-ভীতি উপেক্ষা করে বিরোধী দলের প্রার্থী নেতা-কর্মীরা মাঠে নামার খবর পাচ্ছি বিভিন্ন মাধ্যমে। আসলে এই অঞ্চলের কিছু কিছু এলাকায় দেখছি নেতা, কর্মীদের মধ্যে ভয় ঢুকে গেছে। ভয় ঢুকিয়ে দিয়ে সফল হওয়াটাই তো প্রতিপক্ষদের কাজ। এক্ষেত্রে বলবো যারা ভয় ঢুকাতে পেরেছে তারা লাভবান হয়েছে। সাহস নিয়ে এগিয়ে আসলে ভোটের বর্তমান চিত্র থাকতো না। দৃশ্যপট পাল্টে যেত। তিনি বললেন, ‘ভয়কে জয় করে শুধু ভোটযুদ্ধ নয় যে কোন যুদ্ধ হোক কিংবা প্রতিযোগিতা খেলায়ও মাঠে নামতে হয়।’

নির্বাচনের বাকি আর মাত্র একদিন। শেষমুহূর্তে প্রচার-প্রচারণা এখন তুঙ্গে। গতকাল দিনভর দক্ষিণ-পশ্চিমের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা এলাকায় খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, মহাজোট ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী এখন জোর কদমে হাঁটছেন। একদন্ড ফুসরত নেই তাদের। কয়েকজন প্রার্থীর সঙ্গে মোবাইলে কথা বললে তারা প্রায় অভিন্ন সুরে জানান, ‘বলেন ভাই কী বলবেন, হাতে সময় খুব কম, দেখি শেষ চেষ্টা করে, খাওয়া ঘুম নেই ভাই, দৌড়ের ওপর আছি, দোয়া করবেন।’ সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ধীরে ধীরে ভোটে উত্তাপ আছে ঠিকই, তবে সংঘাত সহিংসতা ও প্রতিপক্ষকে ঘায়েলের মাত্রা কমবে বলে সব মহল থেকেই আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।

এদিকে,নামপ্রকাশ করতে নিষেধ করে একজন সরকারী কর্মকর্তা দৈনিক ইনকিলাবকে বললেন, গণতন্ত্র, দেশ ও জাতির স্বার্থে একটা গ্রহণযোগ্য অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হওয়া জরুরি দরকার। দেশে ও বিদেশে কোথাও যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়। আবেগতাড়িত না হয়ে গভীরভাবে পর্যালোচনা করে এই বিষয়টি মাথায় রেখে এখনো সময় আছে এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকলকে বৃহত্তর স্বার্থে বিশেষ ভুমিকা রাখা বাহ্ননীয়। তা না হলে বহুমুখী সঙ্কটের আশঙ্কা থাকবে প্রবল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ