Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খুলনাঞ্চলে ভোট ঘিরে জনমনে সংশয় ছয়টি আসনের অধিকাংশ ভোটকেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ

পোলিং এজেন্ট নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে ঐক্যফ্রন্ট

আবু হেনা মুক্তি | প্রকাশের সময় : ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৫:৩৩ পিএম

বৃহত্তর খুলনাঞ্চলে শেষ মুহূর্তেও প্রচারণায় ভোটারদের কোনো ‘চমক’ দেখতে পারেনি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট! লাইম লাইটে আনতে পারেনি বিএনপি ঘরনার মাঠ পর্যায়ের আমজনতাকে। এজন্য জনমনে সংশয় শঙ্কা ক্রমেই দানা বাঁধছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অধিকাংশ ভোট কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও নেতাকর্মীরা রয়েছে মাঠ দখলে। তাদের মত করে ভোট উৎসবে মেতেছে তারা। মাঠে মাঠে যেন বাঁধাহীন নৌকার গণজোয়ার। আর বিক্ষিপ্তভাবে ভোটের মাঠে নেমে হামলা-মামলায় ‘বিপর্যস্ত’ হয়ে পড়েছে সরকার বিরোধী নেতা-কর্মীরা।

এদিকে বিএনপি জামায়াত প্রার্থীদের পোলিং এজেন্টে নিয়োগেও সঙ্কট দেখা দিয়েছে। যাদেরকে পোলিং এজেন্ট করা হয়েছিল তাদের অনেকেই জেলে এবং পলাতক। আর অনেকেই এখন এজেন্ট হতে ভয় পাচ্ছে। গতকালও ছিল ভোটের মাঠে কেবল নৌকার শোডাউন। আর ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীরা ছিল একপ্রকার অবরুদ্ধ। হামলা-মামলা গ্রেফতার মোকাবেলা করে গুটি কয়েক প্রার্থী ছাড়া তেমন কেউ মাঠে দাঁড়াতেই পারেনি।

অপরদিকে খুলনার ছয়টি আসনের অধিকাংশ ভোটকেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। মোট ৭৮৬টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৫৩৫টি-ই ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছে পুলিশ। অতীতে ওইসব কেন্দ্রে সহিংসতা, প্রার্থীর বাড়ি থেকে নিকটবর্তী ভোটকেন্দ্র, যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে বিবেচনায় রেখে এই তালিকা করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এসব কেন্দ্রে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ও ভোটগ্রহণের সরঞ্জাম আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে বিকল্প ব্যবস্থা রাখা হয়েছে

জানা যায়, খুলনার ছয়টি আসনের মধ্যে খুলনা-২ ও ৩ নির্বাচনী এলাকা মহানগরীতে অবস্থিত। এছাড়া খুলনা-১ ও ৫ এর কিছু অংশ মেট্রোপলিটন পুলিশের অধীনে রয়েছে। এখানকার ৩০৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ২৪২টিকে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়া জেলা পুলিশের অধীনে থাকা খুলনা-১, ৪, ৫ ও ৬ নির্বাচনী এলাকায় ৪৭৭টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে ২৯৩টি কেন্দ্র।

এদিকে গত বুধবার সকাল ৯টায় খুলনা-৩ আসনের জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সমর্থিত ও বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী নগরীর ১৫নং ওয়ার্ডে নির্বাচনী গণসংযোগ করার জন্য তার নিজস্ব বাসভবন থেকে বের হতে চাইলে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে।

বিপুলসংখ্যক পুলিশ এবং ডিবি কর্মকর্তারা তাকে এক প্রকার জোর করেই বাসার ভেতর ঢুকিয়ে দেয় এবং প্রার্থীর সামনে থেকেই বিএনপি কর্মী জসিম উদ্দিন খাজা, ইঞ্জি. শাহাবুদ্দিন সাবু ও আব্দুস সালামকে গ্রেফতার করে।

এদিকে বুধবার রাত ৮টার দিকে দুর্বৃত্তরা তার বাসভবনে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে। তারা গোয়ালখালিস্থ বকুলের বাসভবনে হামলা চালায়। দুর্বৃত্তরা তার বাসার সামনে থাকা পাঁচটি গাড়ি ভাঙচুর করে। যার মধ্যে প্রার্থী বকুলের ব্যবহৃত নিজ গাড়িটি রয়েছে।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এস এম কামাল হোসেন বলেছেন, খুলনা-বাগেরহাট ও সাতক্ষীয়ায় উৎসবমুখর পরিবেশে সংসদ নির্বাচনের প্রচারণা চলছে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় এই অঞ্চলে নৌকা প্রতীকের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তবে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনায় বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চেষ্টা করছে। আওয়ামী লীগের অফিস ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং কর্মীদের হত্যা করেছে। আহত হয়েছে অসংখ্য নেতাকর্মী। তারা নির্বাচনী মাঠে থাকবে না অথচ আওয়ামী লীগ বা মহাজোট প্রার্থীর বিরুদ্ধে একাধারে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। তারা নিজেদের পরাজয় নিশ্চিত ভেবেই এসব মিথ্যা প্রচারণায় মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।

খুলনা-২ (সদর-সোনাডাঙ্গা) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেছেন, ‘দলীয় সরকারের অধীনে দেশে কোনো অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। ভোট দেয়া নিয়ে ভোটারদের মাঝে সংশয় তেরি হয়েছে।’ বিএনপি কার্যালয়ের সামনে খুলনায় ধানের শীষের শেষ নির্বাচনী মিছিল পূর্ব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

সকল জাতীয় দুর্যোগে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর ভূমিকাকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে দুর্যোগময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সেনাবাহিনীর যথাযথ ও দৃঢ় পদক্ষেপ ছাড়া জনগণের ভোটের অধিকার রক্ষার আর কোন পথ খোলা নেই।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ