Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সেনান ইবনে সালমার সিন্ধুতে ইসলাম প্রচার

খালেদ সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী | প্রকাশের সময় : ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

উপমহাদেশে ইসলাম প্রচারের বিভিন্ন মাধ্যমের মধ্যে প্রধানত যাদের কথা উল্লেখ করা যায়, তারা হলেন, আওলিয়-মাশায়েখ-সুফিয়ায়ে কেরাম, সুলতান, ব্যবসায়ী, সওদাগর এবং মুসলিম পর্যটক। এখানে আমরা মুসলিম সুলতান, শাসক ও অভিযানকারীদের ভ‚মিকার কথা বলতে চাই।
প্রথমে সেনাপতি সেনান ইবনে সালমা সিন্ধুতে অভিযান চালিয়ে সীমিত এলাকায় প্রথম ইসলামী রাষ্ট্রপ্রতিষ্ঠা ছিল একটি মাইলফলক। সেনান ইবনে সালমার কথায় আসা যাক। ইসলামের সাধারণ ইতিহাস গ্রন্থসমূহে বহু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ও ইসলামের অনেক কৃতী সন্তানের পূর্ণ বিবরণ-পরিচিতির সন্ধান পাওয়া যায় না। অথচ এসব ঘটনার গুরুত্ব ও ব্যক্তিত্বের অবদানকে খাটো করে দেখার কোনো অবকাশ নেই।
উদাহরণ স্বরূপ সেনান ইবনে সালমার কথাই এখানে আমরা উল্লেখ করতে পারি। বহু বিজয় অভিযানে সেনান ইবনে সালমা জড়িত ছিলেন বলে জানা গেলেও এ সম্পর্কে অনেক ঐতিহাসিক নীরবতা অবলম্বন করেছেন। সিন্ধু বিজয়ের সাথে সেনানের নাম যারা উল্লেখ করেছেন তারা সিন্ধু অভিযানকে মোহাম্মদ ইবনে কাসেমের অভিযানের অনেক আগের ঘটনা বলে বর্ণনা করেছেন।
সেনান ইবনে সালমা একজন বিখ্যাত সেনাপতি ছিলেন, অনেকের বর্ণনায় এ কথাটুকুও পাওয়া যায় না। মোহাম্মদ ইবনে কাসেম কর্তৃক সিন্ধু বিজিত হলেও সিন্ধু অভিযান বহু আগেই পরিচালিত হয়েছিল। ইসলামের চতুর্থ খলিফা হজরত আলী (রা:)-এর আমলে প্রথম অভিযান পরিচালিত হয়েছিল। কিন্তু তাঁর শাহাদতের ফলে এই অভিযান স্থগিত হয়ে যায়।
হজরত আমীর মোয়াবিয়া (রা:)-এর আমলে পূর্ব সীমান্তে তেমন বিজয় অর্জিত না হলেও বিজয় ও অভিযান বৃদ্ধি পেয়েছিল। তাঁর যুগে হিন্দুস্থানে দ্বিমুখী আক্রমণ হয়েছিল। প্রথমত: একটি বাহিনী মোহাল্লব ইবনে আবিসফরা-এর নেতৃত্বে কাবুল জয় করে খাইবার গিরিপথ দিয়ে হিন্দুস্থানে প্রবেশ করে।
দ্বিতীয়ত : মুনজের এর অধীনে একটি বাহিনী মাকরানের পথ দিয়ে সিন্ধু আক্রমণ করে। মোহাল্লব ও তার সৈন্যরা হিন্দুস্থানের উত্তর সীমান্তে কয়েকটি স্থান দখল করে অতঃপর কালাতে পরপর আক্রমণ করে ও সফল হন। এ সময় মুসলমানগণ একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে লিপ্ত হয়। তারা কান্দাহার জয় করার পর সিন্ধুতে বাহিনী প্রেরণ করে, এই বাহিনী বুকান ও কারকান এলাকা জয় করে। হিজরী ৪৪ সালে মোহাল্লব ইবনে আবিসফরা কারকানের দিকে অগ্রসর হতে থাকেন। সেখানে ১২ জন তুর্কি সওয়ার তাঁর গতিরোধ করে তাঁকে ঘেরাও করে ফেলে, কিন্তু মোহাল্লবের হাতে তারা সবাই নিহত হয়।
অতঃপর আবদুল্লাহ ইবনে সওয়ার আবদা কারকানে আক্রমণ চালান এবং কিছু অর্থ সম্পদ গণিত হিসাবে অর্জন করেন। যুদ্ধে আবদুল্লাহ শহীদ হয়ে যাওয়ার পর সেনান ইবনে আবি সেনান হুগলি মাকরান প্রদেশের গোলযোগ ও বিদ্রোহ দমন এবং সেখানে শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেন।
এরপর রাশেদ ইবনে ইজদি এবং সেনান ইবনে সালমা বিভিন্ন সময়ে সেখানে তাদের বীরত্ব প্রদর্শন করেন এবং বহু বিজয় অর্জন করেন। সেনান ইবনে সালমার অভিযানের আর কোনো বিবরণ পাওয়া যায় না।
তবে কোনো কোনো ইতিহাসে উল্লেখ পাওয়া যায় যে, হিজরী ৪৮/৬৬৮ সালের ২১শে মার্চ তারিখে সেনান ইবনে সালমা সিন্ধুতে আগমন করেছিলেন। কাজেই বলা চলে যে, মোহাম্মদ ইবনে কাসেম-এর বহু পূর্বেই সেনান ইবনে সালমা সিন্ধুতে আগমন করেছিলেন।



 

Show all comments
  • আমিন মুন্সি ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:১২ এএম says : 0
    সিন্ধুতে ইসলাম প্রচারের ইতিহাসে সেনাপতি সেনান ইবনে সালমার নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখিত রয়েছে। এই মহাবীরই সিন্ধুতে অভিযান চালিয়ে সীমিত এলাকায় প্রথম ইসলামী রাষ্ট্রপ্রতিষ্ঠা করেন, যা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ এই বীরকে উত্তম প্রতিদান দিন।আমীন
    Total Reply(0) Reply
  • আলী ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:১৪ এএম says : 0
    সিন্ধু বিজয় মুসলমানদের জন্য এক ঐতিহাসিক বিজয়। অনেক গুলো বিজয়ের সমন্বয়ে েএই বিজয় লভ করে মুসলিমরা। এসব বিজয়ের অনেকগুলোর পেছনে সেনাপতি সেনান ইবনে সালমার অবদান অনস্বীকার্য।
    Total Reply(0) Reply
  • Shah Alam Khan ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:১৫ এএম says : 0
    মহান আল্লাহ এই মহাবীরকে জান্নাতবাসী করুন। বর্তমানে মুসলিমদের মাঝে এই ধরনের সেনাপতি দরকার।
    Total Reply(0) Reply
  • তাজ খান ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:১৬ এএম says : 0
    লেখকের প্রতি কৃতজ্ঞতা। লেখাটি পড়ে সিন্ধু বিজয় সম্পর্কে নতুন কিছু জানতে পারলাম। আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন।
    Total Reply(0) Reply
  • Zulfiqar Ahmed ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:১৮ এএম says : 0
    সেনান সিন্ধু বিজয়ের ক্ষেত্রে মোহাম্মদ ইবনে কাসেমের পথকে সহজ করেছেন। সবেই বিশ্বজগতের প্রতিপালকের ইচ্ছা।
    Total Reply(0) Reply
  • jack ali ৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ৪:৩১ পিএম says : 0
    O Allah send us********সেনান ইবনে সালমার*********** So that He can release us from the cruel Oppressor''''' Ameen'''''
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসলাম

৩ মার্চ, ২০২৩
২ মার্চ, ২০২৩
১ মার্চ, ২০২৩
২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন