বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফেনী-১ আসনে প্রার্থীদের ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চলছে। আসনটিতে খালেদা জিয়ার নির্বাচন করার কথা থাকলেও আইনি জটিলতার কারণে তিনি অংশ নিতে পারছেন না। ফলে খালেদা জিয়ার পরিবর্তে এ আসনে ধানের শীষের প্রতীক নিয়ে বিরামহীন প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সভাপতি মুন্সি রফিকুল আলম মজনু। এ আসনের তিনটি উপজেলায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দলের নেতাকর্মীদেরকে নিয়ে ধানের শীষের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। সরেজমিন দেখা যায়, দীর্ঘদিন পর ধানের শীষের প্রার্থী পেয়ে নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটাররা উজ্জীবিত। বিএনপির প্রার্থী মজনুকে প্রচারণায় পেয়ে শতশত নারী পুরুষকে হাত নেড়ে অভিনন্দন জানাতে দেখা গেছে। কিন্তু এ আসনের সাধারণ ভোটাদের মাঝে নির্বাচন নিয়ে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এলেও আতঙ্ক কাটছেনা। তারা সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কিত। জানতে চাইলে মজনু বলেন, এ আসনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বলতে কিছুই নেই। প্রশাসনের লোকজন নেতাকর্মীদের অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছে। নেতাকর্মীদের বাড়িতে প্রতিরাতে পুলিশ গিয়ে তল্লাশীর নামে হয়রানি করছে। তারা প্রতিনিয়ত গ্রেফতার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। প্রশাসন নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করছেনা।
তিনি বলেন, নির্বাচনী প্রচারণায় তেমন একটা অসুবিধা হচ্ছে না। তবে কিছু এলাকায় নেতাকর্মীদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে সেখানে অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। অনেক জায়গায় প্রচার মাইক ভাঙচুর, পোস্টার পেস্টুন ছিড়ে ফেলা হয়েছে। এসব ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনে অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানান। তিনি বলেন এবারের নির্বাচনকে আন্দোলনের অংশ হিসেবে নিয়েছি। লক্ষ হচ্ছে ৩০ তারিখের নির্বাচনে ধানের শীষকে বিজয়ী করা। গত রোববার মজনুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। এবিষয়ে মজনুর দাবি এটি একটি গুজব। তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে যে সব মামলা রয়েছে তিনি সব মামলায় জামিনে রয়েছেন। তিনি বলেন, ফেনী-১ আসনে ধানের শীষের গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ধানের শীষের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির লক্ষে একটি অসাধু মহল এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে। তিনি অপপ্রচারের তীব্রনিন্দা জানিয়ে এ ধরনের অপকর্ম থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার নিজ এলাকার এ আসনটি বিএনপির ভোট ব্যাংক হিসেবে পরিচিত।
এদিকে, এ আসনটিতে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন জাসদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার। তিনি এ আসনের তিনটি উপজেলায় প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। শিরিন আখতারকে স্থানীয় আ.লীগ নেতারা প্রথম থেকে প্রচার প্রচারণায় তেমন একটা সহযোগিতা করেনি। এ বিষয়ে উপজেলা আ.লীগের নেতাকর্মীরা জানান, শিরিন আখতার বিগত ৫ বছরে এলাকায় কোন কাঙ্খিত উন্নয়ন দেখাতে পারেনি। তার থেকে ৩ উপজেলার আ.লীগের নেতাকর্মীরা কোন ধরনের সুযোগ সুবিধা পাননি। তারা আরো অভিযোগ করেন এ আসনে নমিনেশন ফরম কিনার সময় তাদের সাথে যোগাযোগ করেনি। তাকে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে দেয়া হলেও তিনি এ পর্যন্ত গণসংযোগে নেতাকর্মীদের ডাকেননি। দলীয় নেতাকর্মীদের সহযোগিতা ছাড়া অনেকটা একঘরে অবস্থায় প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন শিরিন। এদিকে জেলা আ.লীগের সদস্য ও ফেনী সমিতি ঢাকার সভাপতি শেখ আবদুল্লাহ স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে তার প্রতীক আপেল মার্কা নিয়ে খুব জোরে শোরে মাঠে ময়দানে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। ফেনী-১ আসনের ফুলগাজী-পরশুরাম ও ছাগলানাইয়া এ তিন উপজেলার আ.লীগ সহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা মহজোটের প্রার্থী শিরিনের নৌকার পক্ষে কাজ না করে তার বিরুদ্ধে উল্লেখিত অভিযোগ এনে আপেল মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ আবদুল্লাহকে সমর্থন জানিয়ে কাজ করেছিলেন।
এদিকে গতকাল তার ঘনিষ্টজন সূত্রে জানা যায়, শেখ আবদুল্লাহ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে শিরিন আখতার ও শেখ আবদুল্লাহকে ফোন করে পাওয়া যায়নি। ফলে এ আসনে আপেল মার্কার প্রার্থী হঠাৎ সরে যাওয়ায় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। এছাড়া সর্বশেষ মহাজোটের নৌকা মার্কার প্রার্থীর পক্ষে উপজেলা আ.লীগের নেতাকর্মীরা ভিড়বেন কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এবার ভোটের মাঠে আরো একাধিক প্রার্থী থাকলেও নৌকা ও ধানের শীষের মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। এ আসনে বিভিন্ন দলের যারা নির্বাচন করছেন খেলাফত আন্দোলনের আনোয়ার উল্লাহ, বিএনএফের শাহরিয়াহ ইকবাল, ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী কাজী গোলাম কিবরিয়া, ইসলামী ফ্রন্টের কাজী নুরুল আলম ও মুসলীম লীগের প্রার্থী তারেকুল ইসলাম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানুর রহমান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।