রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
বাগমারা (রাজশাহী) উপজেলা সংবাদদাতা
রাজশাহীর বাগমারায় মওসুমের বোরো ধান কাটা-মাড়ায় নিয়ে কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। মাঠের পর মাঠ জুড়ে এখন বোরো ধানের হিল্লোল। এবারে অনুকূল আবহাওয়ায় বোরো ধানের চাষ ও ফলন ভালো হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন মাঠে ধান পেকে গেছে। তবে ধান চাষে যে পরিমাণ টাকা খরচ হয়েছে ধানের মূল্য কমে তা উৎপাদন খরচ জুটছে না। সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের মূল্য বৃদ্ধিতে ধানচাষে এলাকার কৃষকরা চরম হতাশায় ভোগছেন। অনেকেই মহাজন ও ব্যাংক ঋণের টাকায় ফসল করে ন্যায্য মূল্য না পেয়ে ভিটে মাটি বিক্রি করে নিঃস্ব হতে বসেছেন। কৃষকদের অভিযোগ কৃষি উৎপাদনের প্রধান উপকরণ সার, ডিজেল ও কীটনাশকের দাম বাড়ছে প্রতি নিয়তই। কিন্তু কৃষকদের কৃষি পণ্যের দাম বাড়ছে না। এতে করে কেউ বুঝতে পারে না কৃষকের দুরবস্থা। কৃষককে দাবিয়ে দেখছেন দেশের উন্নয়ন, আর বলা হচ্ছে মধ্য নিম্ন আয়ের দেশ। সরকার গ্রাম পর্যায়ের কৃষকদের কথা না ভেবে কৃষি উপকরণের দাম বাড়িয়ে চলেছে। গ্রামের কৃষকদের অবলম্বন কৃষি। অন্য কোন উপায় না থাকায় বাধ্য হয়ে আদি পেশা কৃষি উৎপাদনে ধানচাষ অব্যাহত রেখেছেন। জানা যায়, এ এলাকার লোক কৃষির উপর নির্ভরশীল। কয়েক বছর থেকে ধানে লোকশান টানছে এ অঞ্চলের কৃষকরা। ধানের দাম বাড়বে এ আশায় প্রতি বছরের ন্যায় কৃষকরা এবারেও বুক ভরা আশা নিয়ে বোরো ধান চাষ করে বিপাকে পড়েছেন। উপজেলার বালানগর গ্রামের কৃষক আঃ মতিন, কাজেম আলী, আলতাফ হোসেনসহ অনেকে জানান, চার যুগ ধরে তিনি কৃষি কাজ করে আসছেন। কিন্তু এ বছরের ন্যায় এত ধানে লোকশানের মুখ কখনও তারা দেখেননি। সরকারি ভাবে ধানের দাম বাড়ানোর কথা কাগজে-কলমে রয়। তাদের নাগালে জোটে না। বর্তমানে বাজারে সব জিনিসের মূল্য বেশি কিন্তু কৃষকের উৎপাদিত প্রচলিত আবাদ ধান, গম, ভূট্টা, সবজি আবাদের মূল্য কম। পক্ষান্তরে কৃষি চাষের উপকরণসহ অপ্রচলিত আবাদ মরিচ, লবণ, আদা, হলুদসহ অন্যসব দ্রব্যের মূল্য বেশি। এছাড়া শ্রমিকের মূল্য ৫ গুণ বেড়ে যাওয়ায় কৃষি কাজে নিয়োজিতরা চরম বেকায়দায় পড়েছেন। ১০ বছর আগে ১ মণ ধান ৮৫০/- টাকা থেকে ৯০০/- টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর এ কয়েক বছর ধরে ১মণ ধান ৭০০/- টাকা থেকে ৬০০/- টাকায় বিক্রি চলছে। এতে কৃষিতে কয়েক বছর ধরে কৃষকরা কোন অর্থ যোগাতে পারেননি। লোকশানের পরিমাণ এত বেশি হয়েছে মহাজনের ঋণের টাকা যোগাতে তারা গরু ও জমি বিক্রি করতে হচ্ছে। গোপালপুর গ্রামে ফিরোজ উদ্দিন, শ্যামপুর গ্রামের আলতাফ হোসেনসহ কয়েক জন কৃষক জানান, এবারে বোরো ধানের আবাদ ভালো হয়েছে, কিন্তু কম মূল্যের কারণে বিঘাই ৮/১০ হাজার টাকা তাকে লোকশান গুণতে হবে। বীজ, পাওয়ারটিলারের ডিজেল খরচ, শ্রমিক খরচ দিয়ে ১ বিঘা জমিতে ১৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। যে ধান ১০০০/- টাকা থেকে ১২০০/- টাকায় বিক্রি হবার কথা তা না হয়ে মাত্র ৫০০/- থেকে ৬০০/- টাকায় বিক্রি করতে হবে। এতে ধান চাষে লাভের চেয়ে লোকশান গুণতে হচ্ছে। দেউলিয়া গ্রামের কৃষক মুকবুল হোসেন, দুলাল হোসেন, আব্দুর মালেকসহ অনেকে জানান, বহুকাল ধরে তারা কৃষি কাজে জড়িত, বর্তমানে কৃষি কাজে তারা নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। কিন্তু কি উপায় বিকল্প কোন পথ নেই তাই লোকশানের বোঝা মাথায় নিয়েও বোরো ধান চাষ করেছেন। ক্ষেতের ধান পেকে গেছে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। শ্রমিকের মজুরী যখন ১০০/- টাকা ছিল তখন ধান বিক্রি করেছে ৯০০/- টাকায়। ধানের দাম এখন ৫/৬শ’ টাকা শ্রমিকের মুজরী ৪০০/-টাকা। এতে করে ধান কাটা নিয়ে মহা বিপাকে রয়েছেন বলে জানান তারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।