বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ, সংবাদ সম্মেলন, মামলা এবং গণগ্রেফতারের ঘটনায় বগুড়ায় নির্বাচনী মাঠে এখন ভীষণ উত্তেজনা। এবার সরকারি দলের প্রভাবশালী প্রার্থীর পক্ষ থেকেও হামলার অভিযোগ এবং প্রশাসন ও পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করা হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুরে বগুড়া প্রেসক্লাবে প্রভাবশালী সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নানের সমর্থকদের পক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সোনাতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে ‘২০ ডিসেম্বর বগুড়ার সংসদীয় আসন-১ এর আওতাভুক্ত সোনাতলা উপজেলার চরপাড়ায় বিএনপিপ্রার্থী কাজি রফিকুল ইসলাম নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে জিপ, মাইক্রো ও ৩ শতাধিক মোটর বাইকসহ উপস্থিত হলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশের উপস্থিতিতেই হামলা চালায়। বিএনপি হামলাকারীদের মধ্যে ছিল বগুড়া জেলা যুবদলের সভাপতি শিপার আল বখতিয়ার ও তার সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী। তাদের হামলায় আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নারী নেত্রীসহ ৩০ জন মারাত্মক আহত হয়। আহতরা বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজ মোহাম্মদের নির্দেশের কারণে পুলিশ এই হামলার সময় নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। এছাড়া বিজিবিও উল্টো আওয়ামী লীগের প্রতিবাদী নেতাকর্মীদেরই লাঠিপেটা করেছে যা খুবই দুঃখজনক। সংবাদ সম্মেলনে সোনাতলা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি জিয়াউল আলম শ্যাম্পু, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা মিনহাদুজ্জামান লিটন, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে এই সংবাদ সম্মেলনের পরেই বগুড়া জেলা বিএনপি কার্যালয়ে আয়োজিত অপর একটি সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বগুড়া ১, ২, ৩, ও ৪ সংসদীয় আসনে মহাজোট সমর্থিত প্রার্থীদের সমর্থকদের লাগাতার হামলা, মিথ্যা মামলা এবং পুলিশের গ্রেফতার ও হয়রানির কারণে তারা নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারছেন না। এই সুযোগে ফাঁকা মাঠে একতরফা নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছে প্রতিপক্ষ প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০ ডিসেম্বর বগুড়ার ১ সংসদীয় আসনের বিএনপিপ্রার্থী কাজি রফিক সোনাতলায় সমর্থকদের নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় গেলে আগে থেকে চরপাড়ায় অবস্থান নিয়ে থাকা আওয়ামী লীগের সশস্ত্র নেতাকর্মীরা পুলিশের সামনেই তাদের বাধা দেয় ও হামলা চালায়। এসময় হামলাকারীদের প্রতিহত করতে গেলে বিএনপি যুবদলের ১৯ নেতাকর্মীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে বিএনপির প্রার্থী কাজি রফিকসহ প্রথম সারির ৭১ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ১৬শ’ জনকে আসামী করে পৃথক দৃটি মামলা করেছে আওয়ামী লীগ। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি ভিপি সাইফুল, সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন চান, বগুড়া ১ সংসদীয় আসনের প্রার্থী কাজি রফিকুল ইসলাম, বগুড়া ৪ সংসদীয় আসনের প্রার্থী মোশারফ হোসেন, বগুড়া ৫ সংসদীয় আসনের প্রার্থী জিএম সিরাজসহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বগুড়া ৪ সংসদীয় আসনে দায়ের করা একটি কাল্পনিক বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় ১নং আসামী করা হয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক হাসানাত আলী হাবিবকে। বিষ্ফোরক আইনের ওই মামলাটি করা হয়েছে এই কারণে যে, তিনি যেন ভোটের ২/১দিন আগে যেন এলাকায় আসতে না পারেন এবং নিজের ভোটটাও না দিতে পারেন শুধুমাত্র সেই কারণেই। বিষয়টি সম্পর্কে জানার জন্য হাসানাত আলী হাবিবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ইনকিলাবকে জানান, তিনি পেশাগত ব্যস্ততার কারণে এলাকায় যেতে পারেন না। শুক্রবার ছুটির দিনেও তিনি সান্ধ্যকালীন কোর্সে ক্লাস নিয়ে থাকেন, তারপরও বিনা তদন্তে তার বিরুদ্ধে কীভাবে মামলা নিলো পুলিশ বুঝতে পারছি না। মামলাটির সত্যতা সম্পর্কেও তিনি সন্দিহান। তবে ওই আসনের বিএনপিপ্রার্থী মোশারফ নিশ্চিত করেন, মামলার ঘটনাটি সত্য। এদিকে বগুড়া ৬ আসনের প্রার্থী মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীগের নির্বাচন সমন্বয়কারীসহ দেড় শতাধিক সিনিয়র নেতাকর্মীর নামে বগুড়া সদর থানায় বগুড়া-২ আসনে মাহমুদুর রহমান মান্নার প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারী মীর শাহে আলমসহ ৩৪ নেতাকর্মীর নামে মামলা করে তাদের ঘরছাড়া করা হয়েছে বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।