Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এদেশের মানুষ এখন পরিবর্তন চায়- মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

মানুষ আর স্বৈরাচারের অধীনে থাকতে চায় না, দুর্নীতি থেকে মুক্তি চায়।

পার্বতীপুর (দিনাজপুর) সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২২ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৩:২৫ পিএম | আপডেট : ৫:৪১ পিএম, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৮

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মহাসচিব মীর্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মানুষ এখন স্বৈরশাসন থেকে মুক্তি চায়, মানুষ তার অধিকার চায়, কৃষক তার উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য চায়, শ্রমিক তার ন্যায্য মুজুরী চায়, মানুষ এখন স্বৈরশাসনের অবসান চায়, এজন্য তিনি দেশকে স্বৈরশাসন থেকে রক্ষা করতে আগামী ৩০ডিসেম্বর ধানের শীষ মার্কায় ভোট দেয়ার আহবান জানান। প্রশাসনের লোকদের উদ্যেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা কোন দল বা ব্যক্তির কর্মচারী নন। নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করুন, সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে দায়িত্ব পালন করবেন না, নিরপেক্ষ থাকুন, আপনারা এদেশের নাগরিক, বাঙ্গালী মায়ের সন্তান। একইসাথে তিনি বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, কোন উস্কানি বা সংঘর্ষে না জড়িয়ে ধানের শীষ মার্কায় ভোট দিতে জনগনকে উদ্বুদ্ধ করুন। ভোট প্রদান ও গননা শেষে ভোট কেন্দ্র পাহারায় রাখুন। কেন্দ্র ভিত্তিক ভোটের ফলাফল শিট বুঝে নিবেন।

শনিবার বেলা ১২টায় দিনাজপুর-৫(ফুলবাড়ী-পার্বতীপুর) নির্বাচনী এলাকা পার্বতীপুর পৌর শহরের বাস টার্মিনালে নির্বাচনী পথসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন। নির্বাচনী পথসভায় পার্বতীপুর উপজেলা বিএনপিসাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দিন এর সভাপতিত্বে, অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দিনাজপুর-৫আসনের ঐক্য ফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী ও জেলা বিএনপির আহবায়ক এজেডএম রেজওয়ানুর হক, দিনাজপুর-৪ আসনের মনোনীত প্রার্থী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান, রংপুর -৫ আসনের প্রার্থী মোহাম্মদ আলী সরদার,সাবেক সংসদ রেজিনা ইসলাম, ফুলবাড়ী উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও ফুলবাড়ী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ খুরশিদ আলম মতি, উপজেলা বিএনপিসাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহম্মেদ চৌধুরী খোকন ,বিএনপি নেতা জাকারিয়া বাচ্চু ও বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এর পর তিনি দিনাজপুর-৪ আসনের ঘুঘুরাতলী এলাকায় বক্তব্য রাখেন।

এর আগে তিনি সৈয়দপুর বিমান বন্দরে নেমে পার্বতীপুর বাস টার্মিনালের পথসভায় উপস্থিত হোন। মির্জা ফকরুলের আগমনকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই পার্বতীপুরসহ আশপাশ এলাকার হাজার হাজার নারী পুরুষ সমাবেশ স্থলে সমবেত হতে থাকেন। নির্ধারিত সময় দুপুর সাড়ে ১২ টার আগেই টার্মিনাল এলাকা লোকে লোকারন্য হয়ে পড়ে। পথসভা পরিণত হয় জনসমুদ্রে। সময় স্বল্পতায় তিনি মাত্র ৫ মিনিট বক্তব্য রাখেন। কিন্তু ৫ মিনিটের বক্তব্যেই মানুষ আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়ে। গোগন বিদারী শ্লোগানে এলাকা প্রকম্পিত হয়ে উঠে। এখান থেকে তিনি চিরিরবন্দরের ঘুঘুরাতলী’র উদ্দেশ্যে রওয়ানা হোন। জন¯্রােত ঠেলে মির্জা ফকরুল যখন ঘুঘুরাতলী এলাকায় আসেন তখন মানুষের বাধ ভাঙ্গা জোয়ার দেখে তিনি নিজেই আবেগতারিত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, এই জন¯্রােত কেবল শ্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। তিনি সাধারন জনগনের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা এই উৎফুল্লতা আমাকে নিশ্চিত করেছে আগামী ৩০ ডিসেম্বর বতর্মান জালিম সরকারের পতন অনিবার্য। তিনি সাবধান করে বলেন, সরকার বুঝে গেছে এদেশের মানুষ কি চায়। তাইতো শত ষড়যন্ত্রের পর এখন ব্যালট পেপার ছাপানো ও মুজিব কোট পড়ে ভোট কারচুপির কাল্পনিক অভিযোগ উত্থাপন করা হচ্ছে। মুজিব কোট পড়ে নয় বরং মুজিব কোটধারীদের হাত থেকে নিজেদের অধিকার রক্ষায় জনগন সোচ্চার হয়েছে।

বিএনপির মহাসচিব মীর্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গত ১০বছর থেকে বিরোধী দলের নেতা কর্মিরা বাড়ীতে থাকতে পারেনি, তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখে বলেন কি অপরাধ করেছিল সেই মা,যার সন্তানকে তুলে নিয়ে গেছে, গত ৫ বছর থেকে সেই সন্তানের কোন খোঁজ নাই। কি অপরাধ করেছে সেই বোন, যার স্বামীকে তুলে নিয়ে গেছে এখন পর্যন্ত তাদের খোঁজ নাই, কি অপরাধ করেছে সেই সন্তান তার পিতার কোন খোঁজ নাই। এখানে শেষ নয়, বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতা কর্মিকে মিথ্যা মামলায় বছরের পর বছর কারাগারে নির্যাতন করছে। মীর্জা ফকরুল ইসলাম বলেন এখন মানুষ এই খুন গুম নির্যাতনের হাত থেকে মুক্তি চায়, আমাদের মা বোন নিরাপত্তা চায়, বেকারেরা চাকুরী চায়, কৃষক তার উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য চায়, শ্রমিক তার ন্যায্য মজুরী চায়, আমরা নাগীকরা শান্তিতে বাস করতে চাই। এই খুন গুম দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে, নাগরীককে শান্তি দিতে হবে, এই স্বৈরাচারী শাসন বন্ধ করতে হবে এই জন্য আগামী ৩০ ডিসেম্বর ধানের শীষ মার্কায় ভোট দিতে হবে। তিনি নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে বলেন, এখন পর্যন্ত নির্বাচনের কোন পরিবেশ তৈরী হয়নি। তিনি বলেন নির্বাচন কমিশনকে একটি ঠুটো জগন্নাথ করে রেখেছে, সারা দেশে বিরোধী দলের নেতা কর্মিকে গ্রেফতার করছে এবং ধানের শীষ মার্কার মিছিল মিটিংয়ে হামলা করছে। তিনি আইন শৃংখলা বাহিনীর উদ্দেশ্যে বলেন, আপরা কোন বিশেষ দলের কর্মকর্তা-কর্মচারী নন, আপনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারী। আপনারা জনগনের দায়িত্ব পালন করবেন, কোন বিশেষ দলের নয়। বক্তব্য শেষে ঐক্য ফ্রন্টের প্রার্থী এজেডএম রেজওয়ানুল হক,আক্তারুজ্জামান মিয়া ও মোহাম্মদ আলী সরদারকে হাত তুলে পরিচয় করে দেন। এদিকে দলের মহাসচিব মীর্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীরের আগমন ও নির্বাচনী পথসভাটিকে সফল করতে সকাল থেকে পার্বতীপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতা কর্মিরা খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে সভা স্থলে আসতে শুরু করে, বেলা বাড়ার সাথে সাথে পথসভাটি জনসমুদ্রে রুপ নেয়, দলের মহাসচিব যখন সভাস্থলে উপস্থিত হয়, সেই সময় সভাস্থলটি কানায় কানায় পরিপুর্ন হয়ে উঠে এবং মুহুমুহু স্লোগানে মুখরীত হয়ে উঠে নির্বাচনী জনসভাটি। পরে তিনি তার নিজ নির্বাচনী এলাকা ঠাকুরগাঁও এর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হোন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ