রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৬ (সিটি করপোরেশন, সদর ও সদর দক্ষিণ উপজেলা) আসনে প্রায় ৯০ হাজার সংখ্যালঘু ভোটার এবং ৩৫ হাজার বস্তিবাসীর ভোট হেভিওয়েট দুই প্রার্থী আ.লীগের হাজী আকম বাহাউদ্দিন বাহারের নৌকা নাকি বিএনপির হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের ধানের শীষ প্রতীকে পড়বে তা নিয়ে দুই দলেই চলছে হিসাব-নিকাশের অঙ্ক। এ দুই শ্রেণির সোয়া এক লাখ ভোটার জয়-পরাজয়ের ব্যারোমিটার হয়ে দাঁড়াবে।
ভোটগ্রহণের আর মাত্র ৯ দিন বাকি। এরই মধ্যে কুমিল্লা-৬ আসনে চার লাখ ভোটারের মধ্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রায় ৯০ হাজার ভোট এবং নগরীর ১২ হাজার বস্তি পরিবারের প্রায় ৩৫ হাজার ভোটের দিকে টার্গেট করেছে আ.লীগ ও বিএনপি। এ নির্বাচনে ভোটের সমীকরণে সংখ্যালঘু ও বস্তির প্রায় সোয়া লাখ ভোট হাজী বাহার ও হাজী ইয়াছিনের জন্য ব্যারোমিটার হয়ে দাঁড়াবে। সংখ্যালঘু ও বস্তিবাসীর ভোট যে বেশি টানতে পারবেন, জয়ের সম্ভাবনাটা তারই বেশি। তবে এ ক্ষেত্রে কুমিল্লা-৬ আসনে গত ১০ বছরে সংখ্যালঘুদের সার্বিক নিরাপত্তা, ধর্মীয় উপাসনালয়ের উন্নয়ন এবং বস্তিবাসীর জীবনমান উন্নয়নে এমপি হাজী বাহার অনবদ্য ভ‚মিকা রেখেছেন। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে নৌকার প্রার্থী হাজী বাহারের প্রতি এ দুই শ্রেণির ব্যাপক সমর্থন গড়ে উঠেছে। অন্য দিকে বিএনপির প্রার্থী ধানের শীষের হাজী ইয়াছিন নির্বাচনকে সামনে রেখে সংখ্যালঘু ও বস্তিবাসীর কাছে ভোট প্রার্থনা করে জয়ী হলে আগামীতে তাদের উন্নয়নে সব করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।
কুমিল্লা-৬ আসনে চার লাখ ১৫ হাজার ৭৪৮জন ভোটারের মধ্যে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ভোটার রয়েছেন প্রায় ৯০ হাজার। এর মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের ভোট বেশি। নির্বাচনে এখানে আ.লীগ ঘরনার প্রার্থীই এসব সম্প্রদায়ের ভোট বেশি পেয়ে থাকে। এবারো এর ব্যত্যয় ঘটবে না বলে মনে করছেন এখানকার হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের নেতারা। আবার নগরীতে হিন্দুদের একটি অংশের সমর্থন রয়েছে জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে। এমন হিন্দু ভোটারের সংখ্যা খুব বেশি নয়। তাই এ নির্বাচনেও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোট বিএনপি প্রার্থীর জন্য বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াবে। আগামী ৩০ ডিসেম্বর সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কুমিল্লার সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের সংগঠন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ, পূজা উদযাপন পরিষদ, আন্তর্জাতিক সংগঠন মাইনরিটি রাইটস কমিশন ও স্থানীয় সংগঠন মাইনরিটি রাইটস ফোরামসহ বিভিন্ন সংখ্যালঘু সংগঠন নড়েচড়ে ওঠেছে। এসব সংগঠন নৌকা পক্ষে এমপি হাজী বাহারের হয়ে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছে।
এদিকে কুমিল্লা-৬ আসনে আ.লীগ ও বিএনপি প্রার্থীর চেখে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে নগরীর প্রায় ৩৫ হাজার বস্তিবাসী ভোটার। এদের ভোট জয়-পরাজয়ে বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করছেন নগরীর বিশিষ্টজনরা। কুমিল্লা নগরীতে ৪৯টি বস্তি রয়েছে। এসব বস্তি বা কলোনির অধিকাংশ বাসিন্দা পেশায় রিকশা, অটো, ঠেলা-ভ্যানগাড়ি চালক, ফেরিওয়ালা, জুতা সেলাই-পালিশওয়ালা, ফুটপাথ ব্যবসায়ী, ক্ষুদ্রদোকানি, গৃহকর্মী ও ভিক্ষুক। দারিদ্র্য হ্রাসকরণ প্রকল্পের (ইউপিপিআরপি) হিসাব অনুযায়ী, নগরীর ৪৯টি বস্তিতে প্রায় ১২ হাজার পরিবার রয়েছে। এসব পরিবারে কম করে হলেও ৩৫ হাজার ভোটার রয়েছে। বস্তির ভোটব্যাংক নিজেদের কব্জায় রাখতে আ.লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী হাজী বাহার ও তার পরিবার এবং দলের নেতাকর্মীরা পৃথকভাবেই প্রচারণা, গণসংযোগ, উঠান বৈঠক করছেন পুরোদমে। বস্তিতে পয়ঃনিষ্কাশন, স্যানিটেশন, বিশুদ্ধ পানি এবং স্বাস্থ্যসেবার বিষয়গুলো তুলে ধরছেন আ.লীগের প্রার্থী হাজী বাহার। বস্তির হতদরিদ্র নিম্নআয়ের মানুষগুলোকে নতুন করে উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখিয়ে নৌকায় ভোট চাইছেন হাজী বাহার। অন্য দিকে বিএনপি প্রার্থী হাজী ইয়াছিনও আটঘাট বেঁধেই পা ফেলছেন নগরীর বস্তিগুলোতে। নির্বাচনকে সামনে রেখে বস্তিবাসীর কাছে তাদের জীবনমান উন্নয়নে তুলে ধরছেন নিজের পরিকল্পনা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।