বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ি) আসনে উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ার ক্ষোভে দলের মনোনীত এমপি প্রার্থী কেন্দ্রীয় নেতা মোখলেছুর রহমান বস্তুর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন নেতারা। সরাসরি আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উপজেলা কমিটি। অপরদিকে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে জনরোষের ভয়ে এলাকা ছাড়া জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত বর্তমান এমপি মামুনুর রশিদ জোয়ার্দার।
দলীয় সূত্র জানায়, জামালপুর-৪ আসনে জাতীয় পার্টি থেকে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন বর্তমান এমপি মামুনুর রশিদ জোয়ার্দার, ছাত্রসমাজের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক মোখলেছুর রহমান বস্তু, জেলা জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি এড মোজাম্মেল হক ও উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ। আসনটি জোটগত কারণে জাতীয় পার্টির হলেও দলীয় সিদ্ধান্তে দেশের অধিকাংশ আসনে উন্মুক্ত নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় এখানে মোখলেছুর রহমান বস্তুকে লাঙ্গল প্রতীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।
এদিকে দলীয় প্রতীক হাতে পেয়ে মোখলেছুর রহমান বস্তু তাঁর কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে এলাকায় প্রচারণা ও গণসংযোগ শুরু করলেও বেঁকে বসে জাতীয় পার্টির উপজেলা কমিটি। উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ার ক্ষোভে মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবে নাÑ বলে নেতারা প্রার্থীকে জানিয়ে দেন। তাঁরা দফায় দফায় বৈঠক করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ডা. মুরাদ হাসানের পক্ষে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন। ফলে তৃণমূলের কিছু কর্মী-সমর্থক নিয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থী প্রচারণা চালাচ্ছেন। তবে বিজয় দিবসের শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ ও কয়েকটি গণসংযোগে প্রার্থীর সাথে সিনিয়র নেতাদের মধ্যে শুধুমাত্র উপজেলা জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি লুৎফর রহমান, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান মাস্টার ও যুব সংহতির যুগ্ম আহ্বায়ক ফরহাদ হোসেনকে দেখা গেছে।
এ ব্যাপারে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোখলেছুর রহমান বস্তু জানান, ‘দলীয় প্রতীক পেয়ে বারবার জাতীয় পার্টির অফিসে গিয়েছি, সিনিয়র নেতাদের পায়ে হাত দিয়ে সেলাম করেছি, সবার দোয়া ও সমর্থন চেয়েছি। কিন্তু উপজেলা কমিটির নেতাদের কোনো সদুত্তর পাইনি। তবুও লাঙ্গলের সম্মান ও দলীয় আদর্শ রক্ষায় নির্বাচনী প্রচারণা চলছে।’
এদিকে উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘দলীয় মনোনয়নের জন্য কমিটি থেকে আমাকে মনোনীত করেছিল, কিন্তু মোখলেছুর রহমান বস্তু কিভাবে মনোনয়ন পেলো তা আমরা জানি না। মনোনয়ন দিলেই তো হবে না, আমরা তাঁর সাথে থাকতে পারবো না। কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, আমরা আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবো। তবে জেলা কমিটি নির্দেশ দিলে লাঙ্গলের পক্ষে কাজ করা হবে।’
এদিকে জাতীয় পার্টির বর্তমান এমপি ঢাকায় অবস্থান করছেন। গত পাঁচ বছরে এমপি মামুনুর রশিদ জোয়ার্দার ও তাঁর ছোটভাই এনামুল হক জোয়ার্দারের বিরুদ্ধে সরকারি বরাদ্দের সিংহভাগ হরিলুট, নিয়োগ বাণিজ্য, ডিও লেটার বিক্রি, বিএনপি-জামাতের পৃষ্ঠপোষকতাসহ বিভিন্ন অভিযোগে এবার দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হন তিনি। বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দিলেও অসম্পূর্ণ তথ্য ও হলফনামায় স্বাক্ষর না থাকায় তাঁর প্রার্থীতা বাতিল হয়। অভিযোগ রয়েছে, জনরোষের আতঙ্কে এখন তিনি এলাকা ছাড়া।
অভিযোগ অস্বীকার করে এমপি মামুনুর রশিদ জোয়ার্দার বলেন, ‘আমি ঢাকায় আছি। তবে নির্বাচনে কাজ করতে হবে। আমি মহাজোটের পক্ষে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।