Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে মাচায় তরমুজ চাষে সাফল্য

গোদাগাড়ী (রাজশাহী) সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:৪০ পিএম

মানুষের জীবনের লক্ষ্য কখনও পূরণ আবার কখনও হয় না। পরিবেশ, সমাজ, আর্থিক কারণে অনেকের জীবনের লক্ষ্য পূরন হয় না। ভাল মেডিকেল কলেজ, সেরা বিশ্ব বিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়েও আর্থিক কারণে ভর্তি হতে পারে না পত্রিকার পাতা খুললে এমন সংবাদ প্রায় চোখে পড়ে। তবে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার চৈতন্যপুর এলাকার মনিরুজ্জামানের স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া শেষ করে কৃষি কাজের মাধ্যমে নিজকে আত্ননির্ভরশীল করে তোলা ও দেশর জন্য কাজ করা। তার এ স্বপ্ন সফল হয়েছে। মনির এখন এ অঞ্চলের কৃষকদের মাঝে মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাকে দেখে এ অঞ্চলের অনেক শিক্ষিত বেকার যুবক চাকুরীর পেছনে না ছুটে কৃষির মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি হিসাবে গড়ে তোলা, সেটা সফল হতে চলছে।
এবার মনির মাচায় হলুদ রঙের তরমুজ চাষ করে ভালো সফল হয়েছে। তরমুজটি দেখতে হলুদ হলেও ভেতরটা আমাদের দেশী তরমুজের মত লাল ও খেতে মিষ্টি। রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার চৈতন্যপুর এলাকায় বিঘা প্রতি ১০ হাজার টাকা করে ১৭ বিঘা জমি লিজ নিয়ে গড়ে তুলেছে তার কৃষি খামার। এ খামারের অংশ হিসাবে ৩ বিঘা জমিতে মাচায় চাষ করেছে হলুদ রঙের তরমুজ। তরমুজে সাফল্য পেয়েছে ভাল। এ তরমুজ দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন অঞ্চলে বাজার বিক্রি হচ্ছে। বিশেষ করে রাজশাহী ও ঢাকার বাজারে বাজারজাত করছে সে। প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, দেশের ৩টি অঞ্চলে এ হলুদ রঙের তরমুজ চাষ হচ্ছে। অঞ্চলগুলো হলো যশোর, কুষ্টিয়া ও রাজশাহী। রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় গত বছরও ইসরিপুর এলাকায় কিছু জমিতে এ তরমুজ চাষ হয়েছিল। গত বুধবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শ্রমিকরা মাচা থেকে তরমুজ তোলা ও বাজারজাত করার জন্য প্যাকেট করতে ব্যাস্ত সময় পার করছিল। প্রতিটি তমেুজের ওজন ২ কেজি থেকে ৩ কেজি ৮০০ গ্রাম পর্যন্ত হচ্ছে।
মনিরুজ্জামান জানায়, মাচায় তরমুজ চাষ করতে বীজ, সার, সেচ ও শ্রমিক খরচসহ প্রতি বিঘাতে ব্যয় হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। তিন বিঘা তরমুজ চাষে তার মোট খরচ হয়েছে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় তরমুজের ফলন হচ্ছে প্রায় ৭০ মন। তিন বিঘায় তার তরমুজ চাষ করে আয় হবে প্রায় ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা। তিন বিঘায় তার লাভ হবে ৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা। ১২ মাস হলুদ তুরমুজের চাষ হচ্ছে। হাইব্রিড জাতের এ তরমুজের বীজ কুষ্টিয়া থেকে এনে সে চাষ শুরু করেছে।
মনির আরো জানায়, গোদাগাড়ী উপজেলায় সে প্রথম স্টবেরী ও পেয়ারা চাষ শুরু করে। তার সাফল্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে পেয়ারা চাষে বিপ্লব ঘটেছে এ উপজেলায়। সে আশা করছে তরমুজ চাষেও বিপ্লব ঘটবে ইনসাল্লাহ। তার কৃষি খামার তরমুজের পাশাপাশি স্টবেরি, স্কচ, পেয়ারা, শসা, লাউ, কপি ও পেপের চাষ করছে। তিনি আরও বলেন গোদাগাড়ীর মাটি ও আরহাওয়া এধরণের ফসল চাষের জন্য উপযোগী।
এ বিষয়ে গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, হলুদ রঙ তরমুজটি অসময়ের ফসল। অসময়ের ফসল চাষ করা একটু সেনসেটিভ হলেও খুব লাভ, জনক ফসল। কোন কৃষক যদি এ ফসল চাষ করে তাহলে তাকে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে চাষের জন্য কারিগরি সহায়তা দেয়া হবে। আগামীতে এ ধরণের চাষ আরও বৃদ্ধি পাবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কৃষি সংবাদ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ