ঈশা অম্বানী ও আনন্দ পিরামলের বিয়ে অনুষ্ঠিত হল বুধবার। দু’জনেরই পোশাকে ছিল সবুজ ও বেইজ রঙের ছোঁয়া। রোলস রয়েস গাড়িতে বরযাত্রীদের সঙ্গে এসেছিলেন আনন্দ। তার পরই প্রথামতো মালাবদল করেন তারা। পরস্পরের দিকে তাকিয়ে হেসেও ফেলেন। ঈশা ও আনন্দের বিয়ে উপলক্ষে অম্বানীদের বাসস্থান অ্যান্টিলিয়ায় এদিন বসেছিল চাঁদের হাট। রাজনৈতিক জগত থেকে বলিউড, সব জগতের ব্যক্তিত্বদেরই ঢল নেমেছিল এই বিয়েতে।

রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের মধ্যে প্রথমেই গিয়েছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। ঈশার চাচা অনিল অম্বানী সাদরে অভ্যর্থনা জানান তাকে। গিয়েছেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কংগ্রেস নেতা চিদম্বরমও। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথাও বলেন তিনি। বিয়েতে চির চেনা শাড়িতেই দেখা যায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এসেছিলেন তেলুগু দেশম প্রধান চন্দ্রবাবু নায়ডু। শুভেচ্ছা জানান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীস। ফড়ণবীস ছিলেন প্রি-ওয়েডিং সেরেমনিতেও। প্রাক্তন মার্কিন ফার্স্ট লেডি হিলারি ক্লিনটন ও মার্কিন রাজনীতিবিদ হুমা আবেদিন সন্ধের দিকেই যোগ দেন অ্যান্টিলিয়ায়। দু’জনের পরনেই ছিল ভারতীয় পোশাক। ছিলেন জন কেরিও। বলিউড তারকাদের সঙ্গে নাচতেও দেখা যায় তাদের।
বিয়েতে বলি জগতের কোন তারকা উপস্থিত ছিলেন না তা বলা মুশকিল। বলিউড বাদশা শাহরুখ খান এসেছিলেন স্ত্রী গৌরীর সঙ্গে। তবে প্রথমেই হাজির হন আমির খান। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী কিরণ রাও। সদ্যবিবাহিত দীপিকা পাড়–কোন ও রণদীপ সিংহ যোগ দিয়েছিলেন। দীপিকার জারদৌসি শাড়ি মন কেড়েছে প্রত্যেকের। ঈশার বিয়ে, আর প্রিয় বন্ধু প্রিয়ঙ্কা চোপড়া আসবেন না, তা কী হয়? প্রিয়ঙ্কা এলেন জমকালো লেহেঙ্গাতে। সঙ্গে ছিলেন স্বামী নিক জোনাস। আলিয়া ভট্টের ক্রপ টপ লেহেঙ্গা ও সনাতনী সাজ দেখে ক্যামেরার ঝলক তো থামতেই চাইছিল না। আলিয়ার ডিজাইনার ছিলেন মণীশ মলহোত্র। বনি কাপুর এসেছিলেন তাঁর দুই মেয়ে জাহ্নবী ও খুশি কাপুরের সঙ্গে। সোনম কাপুর এসেছিলেন বাবা অনিল কাপুরের সঙ্গে। শহিদ কাপুর এসেছিলেন স্ত্রী মীরা রাজপুতের সঙ্গে।
বচ্চন পরিবারের প্রত্যেকেই এসেছিলেন। শ্বেতা বচ্চন তার বাবা অমিতাভ, মা জয়া ও মেয়ের সঙ্গে একটি ছবিও পোস্ট করেন ইনস্টাগ্রামে। বচ্চন পরিবারে সবার প্রথমে নজর ছিল যার দিকে তিনি যদিও পরে আসেন। জমকালো লাল সনাতনী শাড়িতে তিনি যে সত্যিই মোহময়ী তা আবারও প্রমাণিত হল। ঐশ্বরিয়া রায় এলেন স্বামী অভিষেক ও মেয়ে আরাধ্যাকে সঙ্গে নিয়ে। তার শাড়ির ডিজাইনার ছিলেন সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়। দক্ষিণী ছবির সুপারস্টার রজনীকান্ত এসেছিলেন স্ত্রী ললিতার সঙ্গে। বলিউড তারকাদের মধ্যে আবারও পোশাকে নজর কাড়লেন রেখা। এসেছিলেন জ্যাকি শ্রফ, সুনীল শেঠী, মাধুরী দীক্ষিতরাও। করিনা কাপুর, স্বামী সাইফ আলি খান ও বড় বোন কারিশ্মা কাপুরের সঙ্গে এসেছিলেন ঈশাকে শুভেচ্ছা জানাতে। ছিলেন দিশা পাটানিও। বিদ্যা বালান এসেছিলেন স্বামীর সঙ্গে। এসেছিলেন সস্ত্রীক বিধুবিনোদ চোপড়া। ছিলেন করন জোহরও। শচিন টেন্ডুলকার তার স্ত্রী অঞ্জলি ও ছেলে অর্জুনকে নিয়ে এসেছিলেন। তিন জনেই সনাতনী পোশাকে পাপারাজ্জিদের জন্য পোজও দেন।
এদিন, প্রথামতো ঈশার বড় ভাই আকাশ ও যমজ ভাই অনন্ত ঘোড়ার পিঠে চড়ে আনন্দকে অ্যান্টিলিয়ায় নিয়ে আসেন। বরযাত্রীদের সঙ্গে ছিলেন পেশাদার নৃত্যশিল্পীরা। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের লোকশিল্পীরাও এতে অংশ নেন। মুকেশ ও নীতা অভ্যর্থনায় কোনও রকম ত্রুটি রাখেননি। বরং আর পাঁচ জন বাবা-মায়ের মতোই মেয়ের বিয়ের দিন একটানা কাজ করতেও দেখা গিয়েছে দুজনকে।