রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
রাজনৈতিক দিক থেকে বরিশাল বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ আসন ভোলা-২। বোরহানউদ্দিন-দৌলতখান এ দুটি উপজেলা নিয়ে এ আসন। এ আসনে ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ৯৭ হাজার ৫১ জন। নির্বাচন এলেই সবার নজর, আলোচনা ও সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দু থাকে সংসদীয় এ আসনকে ঘিরে। অনেকের মতে, এ আসনটিতে আ.লীগ-বিএনপি ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় হেভিওয়েট নেতারা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এ আসনে স্বাধীনতা পরবর্তী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ভাষাসৈনিক রেজা-এ করিম চুন্নু মিয়া, এরপর টানা কয়েকবার বর্তমান বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা ছিদ্দিকুর রহমান, বিএনপি দলীয় সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোশারফ হোসেন শাহজাহান, ব্যবসায়ী হাফিজ ইব্রাহীম। সর্বশেষ ১৪ সালের দলীয় মনোনয়ন পান বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের ভাতিজা আলী আজম মুকুল। ওই নির্বাচনে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু সমর্থিত জেপি প্রাথী মো. সালাউদ্দিন মিয়াকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে এমপি নির্বাচিত হন তিনি। দ্বিতীয়বার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আ.লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে এলাকায় এসে দিন রাত মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন বর্তমান সংসদ সদস্য প্রার্থী আলহাজ আলী আজম মুকুল। ভোটকেন্দ্র কমিটি থেকে শুরু করে, দলীয় কোন্দল দূর করে অভিমান করে দীর্ঘ দিন দলীয় কার্যক্রম থেকে দূরে থাকা নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের কাছে টেনে নিয়ে উঠান বৈঠকসহ সব প্রচার-প্রচারণা কার্যক্রম চালাচ্ছেন। প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে ভবিষ্যতের আশায় এলাকায় প্রথমই ওয়ার্ড থেকে উপজেলা পর্যায়ে যোগ্য লোকদের সমন্বয়ে সকল কমিটি গঠনের কাজ সমাপ্ত করেন তিনি। অনেকের মতে, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের ভাতিজা হওয়ায় তার কাছ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ ও সহযোগিতা পাচ্ছেন তিনি। এ জন্যই তাকে আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি। বোরহানউদ্দিন উপজেলা আ.লীগের নেতা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সাইফুদ্দিন সবুজ তালুকদার ও দৌলতখান পৌর মেয়র মো. জাকির হোসেন জানান, আলী আজম মুকুল এমপি নির্বাচিত হয়ে এলাকায় রেকর্ড সংখ্যক সময় দিয়েছেন, দুই উপজেলায় আ.লীগের অত্যাধুনিক উপজেলা দলীয় কার্যালয় নির্মাণ করার পাশাপাশি এলাকায় আগের তুলনায় অনেক উন্নয়ন কাজ ও দল-মতের ঊর্ধ্বে থেকে কাজ করে জনপ্রিয়তা অর্জন করে শক্ত অবস্থানে আছেন।
অপর দিকে, দ্বিতীয়বার মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল-মামুনের বড় ভাই হাফিজ ইব্রাহীম। তিনি এখনো এলাকায় আসেননি। ঢাকা বসে দলীয় কর্মীদের কাজ চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। প্রার্থীর অনুপস্থিতে কর্মীরা অসহায় বোধ করছেন। এতে দলীয় কর্মীরা হতাশ হয়ে পরেছেন। তাদের কাজ চলছে গোপনে। ওপেন কোনো কাজ করতে পারছেন না বলে অভিযোগ বিএনপি দলীয় নেতাকর্মীদের। বিএনপি কর্মীদের দাবি, হাফিজ ইব্রাহীম ক্ষমতায় থাকা সময়ে ভোলা জেলার সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন কাজ করেছে বোরহানউদ্দিন ও দৌলতখানে। তার পরে সরকার ক্ষমতায় থেকে নির্বাচনের ও বিভিন্ন কারণে দলীয় নেতাকর্মীরাও অনেকটা চুপচাপ রয়েছেন। তবে বোরহানউদ্দিন উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সরোয়ার আলম জানান, তারাও বসে নেই। তারা অনেক আগেই ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা কমিটিসহ ভোটকেন্দ্র কমিটি প্রস্তুত করে রেখেছেন। কিন্তু নির্বাচনের মাঠ লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডসহ সুস্থ নির্বাচনের পরিবেশ অনুপস্থিত। তাদের দলীয় কর্মীদের বিভিন্নভাবে চাপের মধ্যে কাজ করতে হচ্ছে। তারা প্রকাশ্যে কাজ করতে না পারলেও গোপনে কাজ করে চলেছেন।
এদিকে বিএনপি মাঠে না থাকায় তেমন একটা নির্বাচনী আমেজ নেই বলেই সাধারণ ভোটাররা মনে করছেন। অনেকটা এক তরফাভাবেই চলছে নির্বাচনী প্রচার। গ্রাম-গঞ্জে চায়ের দোকানে নির্বাচন নিয়ে নানা গুঞ্জন। ভোটারদের সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কা থাকলেও তারা ২০১৪ সালের মত নির্বাচন দেখতে চায় না। ভোটারদের প্রত্যাশা একটাই তারা যেন নিরাপদে কেন্দ্রে গিয়ে তাদের পবিত্র ভোটটা দিতে পারে। ভোটারদের মাঝে ভোট নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। তাদের মতে, আ.লীগ সমর্থীত প্রার্থী আলী আজম মুকুলের সাথে নির্বাচনে যিনি বিএনপি সমর্থীত প্রাথী হাফিজ ইব্রাহীমের ভোটযুদ্ধ হবে সমানে সমানে। কিন্তু প্রতিপক্ষ বিএনপি প্রার্থী মাঠেই অনুপস্থিত। কারণ হিসেবে তারা বলেন, দু’জনই এ আসন থেকে একবার করে এমপি নির্বাচিত হয়েছে। এলাকা সম্পর্কে দু’জনেরই সমান অভিজ্ঞতা রয়েছে। এলাকার উন্নয়নে উভয়ের অনেক অবদান রয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত ৩০ তারিখে দিকে তাকিয়ে আছে সাধারণ ভোটাররা। সাধারণ ভোটারদের দাবি, তারা যেন তাদের পবিত্র আমানত ভোটটা সঠিকভাবে দিতে পারে সে ব্যবস্থা করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।