বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ঘনিয়ে আসছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের দিন। কুমিল্লার ১১টি আসনে আগ থেকেই মাঠ গোছানো আওয়ামী লীগের। আর হামলা, মামলা, গ্রেফতার ও পুলিশি আতঙ্কে মাঠের রাজনীতিতে সাড়ে চার বছরেরও বেশি সময় অনেকটা নিস্ক্রিয় ছিল বিএনপি। সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে কুমিল্লা বিএনপির নেতাকর্মী ও মনোনয়নপ্রত্যাশীরা নড়েচড়ে ওঠেছেন। কুমিল্লার ১১টি আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রধান শরিক বিএনপি ৯টিতে এবং এলডিপি ও জামায়াতের দুই প্রার্থী থাকলেও ভোটের মাঠে কৌশলী অবস্থান নিয়ে এগুচ্ছে বিএনপি। এ কৌশলে সৃষ্টি হচ্ছে নতুন মেরুকরণ। যে মেরুকরণে ৩টি আসনে বিএনপির জয়ের সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। অন্যদিকে বিএনপির নতুন মেরুকরণে কঠিন সমীকরণের মুখে পড়বে ৩টি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী।
কুমিল্লা-২ (হোমনা ও তিতাস) আসনটি বিএনপির দূর্গ হিসেবেই পরিচিতি। এ আসনের পাঁচবারের নির্বাচিত এমপি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বর্ষিয়ান রাজনীতিক এমকে আনোয়ার মৃত্যুবরণ করলে এখানে কে প্রার্থী হবেন এনিয়ে দলটি টানাপোড়নে ছিল। শেষ পর্যন্ত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এ আসনে প্রার্থী হলে স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলে হোমনা তিতাসের বিএনপি নেতাকর্মী সমর্থকরা। ড. মোশাররফ কুমিল্লা-১ দাউদকান্দি-মেঘনা আসনেও প্রার্থী হয়েছেন। কুমিল্লা-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নারী উদ্যোক্তা সেলিমা আহমাদ মেরী। রাজনীতিতে তিনি নতুন মুখ। কিন্তু এ আসনে আওয়ামী লীগের মধ্যে নেতৃত্ব দ্বিধাদ্ব›দ্ব রয়েছে। আওয়ামী লীগের বেশ কজন ত্যাগী ও তৃণমূলের নেতা মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের নতুন মুখের প্রার্থী পেয়ে বিএনপিতে নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়ভাবে এখানে বিএনপির ভোটের প্রভাব রয়েছে। আর এভাবকে ভোটেরদিন মাঠে কাজে লাগাতে কৌশলী হয়ে ওঠেছে বিএনপি। যার মধ্যদিয়ে আসনটি পুনরুদ্ধার চায় বিএনপি।
কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনে মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের অনুপস্থিতিতেও বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা শক্তিশালী। এখানে বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন কায়কোবাদের ভাই কাজী মুজিবুল হক। রাজনীতিতে কাজী মুজিব নতুন মুখ হলেও মুরাদনগরে কায়কোাবাদ পরিবারের প্রতি দলের নেতাকর্মী, সমর্থক ও সাধারণ মানুষের আস্থা তাকে জয়ের মুখ দেখাতে পারে। এখানেও কাজী মুজিবকে ঘিরে স্থানীয় বিএনপিতে নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুনের জন্য বড় কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে কাজী মুজিব। এছাড়া এখানে আওয়ামী লীগে যে গ্রুপিং রয়েছে তা ভোটে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। যদিও বলা হচ্ছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা জাহাঙ্গীর আলম সরকারের সাথে ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুনের মধ্যে দ্ব›েদ্বর অবসান ঘটে ঐক্য। কিন্তু ভোটের মাঠে এই ঐক্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে কিনা এনিয়ে দলের অনেকেই সন্দিহান।
কুমিল্লা-৮ (বরুড়া) আসনে বিএনপির প্রার্থী সাবেক এমপি জাকারিয়া তাহের সুমনের ক্লিন ইমেজের রাজনীতিবিদ হিসেবে এলাকায় ব্যাপক পিরিচিতি রয়েছে। আধুনিক বরুড়া প্রতিষ্ঠার রূপকার ছিলেন সুমনের পিতা সাবেক এমপি আবকু তাহের। বিগত সময়ে স্থানীয় সরকারের সবকটি নির্বাচনে বরুড়া উপজেলায় বিএনপির সংখ্যাগরিষ্ঠ জয় ওঠে এসেছে। বরুড়া উপজেলার পৌরসভাসহ বেশিরভাগ ইউনিয়নে বিএনপির ভোটের প্রভার রয়েছে। বিএনপি প্রার্থী জাকারিয়া সমুনের জন্য এ নির্বাচন বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ তৃণমূল পর্যায়ে তিনি দলকে যেভাবে গুছিয়েছেন তার প্রতিফলন দেখাতে চান এবারের নির্বাচনে। আর তাই বরুড়া বিএনপি ভোটের মাঠে এগুচ্ছে নতুন মেরুকরণ নিয়ে।
অন্যদিকে, ৯বছর ধরে বরুড়ায় দলীয় কোন্দলে আ.লীগের রাজনীতিতে হ-য-ব-র-ল অবস্থা। দলীয় কোন্দলের কারণে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নাছিমুল আলম চৌধুরী এবারে অনেকটা কোনঠাসা। এছাড়া বর্তমান এমপি নুরুল ইসলাম মিলনও প্রার্থী হয়েছেন জাতীয় পার্টি থেকে। একদিকে আ.লীগের দলীয় কোন্দল অপরদিকে জাপা প্রার্থীর চাপ সাবেক এমপি নজরুলকে ভোটের মাঠের কঠিন সমীকরণে বেকায়দায় ফেলবে বলে মনে করছেন জেলার রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।