বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে আওয়ামী লীগের নৌকা এবং বিদ্রোহী প্রার্থী সংঘাতের মধ্য দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছে। নৌকা-বিদ্রোহী সমর্থকদের ৭ নেতা-কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছে। গত ১০ ডিসেম্বর (সোমবার) রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার নানুপুর বাজারে মহাজোট মনোনীত নৌকার প্রার্থী সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী ও বিদ্রোহী প্রার্থী আপেল প্রতীকের এটিএম পেয়ারুল ইসলামের সমর্থকদের মাঝে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যায় ফটিকছড়ির ধর্মপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান কাজী মাহমুদুল হকের বাড়ীতে কিছু যুবক গালিগালাজ করে হামলা চালাতে গেলে তিনি ফোনে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এটিএম পেয়ারুল ইসলাম ও নেতা-কর্মীদের অবহিত করেন। ফোন পেয়ে সমর্থকরা স্থানীয় আজাদী বাজারে পৌঁছে বিদ্রোহী প্রার্থী এটিএম পেয়ারুল ইসলাম ও উপজেলা আ’লীগের সেক্রেটারী নাজিম উদ্দীন মুহুরীর নেতৃত্বে প্রতিবাদ মিছিল শুরু করে। মিছিল শেষে তারা পার্শ্ববর্তী নানুপুর বাজারে পৌঁছে গণসংযোগোত্তর নানুপুর স্কুল মার্কেট সম্মূখে পথসভা করছিল। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ নৌকা প্রতীকের সমর্থকেরা আওয়ামীলীগ নেতা এইচএম আবু তৈয়বের নেতৃত্বে একটি মিছিল আজাদী বাজার হয়ে নানুপুর বাজারে পৌঁছে। মিছিলটি বাজারের উত্তর তেমুহনী মোড়ে পৌঁছলে ওখানে পথসভারত বিদ্রোহী প্রার্থীর লোকজন ‘আপেল মার্কা’র স্লোগান আরম্ভ করে। শুরু হয় উভয় পক্ষের পাল্টা-পাল্টি মিছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ সময় (রাত সাড়ে ৯টার দিকে) উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা শুরু হলে দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। তখন আ’লীগ নেতা এইচএম আবু তৈয়ব নৌকা সমর্থকদের নিবৃত করে বিদ্রোহী সমর্থকদের উত্তর দিকে পাঠিয়ে দেয়। এক পর্যায়ে নৌকা সমর্থকরা বিদ্রোহী প্রার্থীর নেতা নাজিম উদ্দীন মুহুরীকে ইটপাটকেল করলে তাদের পক্ষ থেকে শর্টগানের গুলি ছুড়তে থাকে। এতে গুলিবিদ্ধ হয় ৭ নেতা-কর্মী। তারা হলেন, আব্দুল কুদ্দুস (৫০), কাঁকন (২৭), সৈয়দ সৌরভ হোসেন (২৫), সৈয়দ এমদাদ হোসেন (৫৬), রাশেদুল আলম (২৫), মোহাম্মদ আজম (২৬), নুরুল আমিন (৩০)। গুলিবিদ্ধরা সবাই নৌকার সমর্থক বলে জানা গেছে।
তাদের দ্রুত উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করে। এ সময় গুলিবিদ্ধ যুবলীগ নেতা আব্দুল কুদ্দুস অভিযোগ করেন, ‘আমরা নাজিরহাটে নৌকার সমর্থনে সংবাদ সম্মেলন শেষে নানুপুর বাজারে পৌঁছে গণসংযোগ-মিছিল করছিলাম। বিদ্রোহীরা আমাদের মিছিলে বাধা দিয়ে অতর্কিতভাবে উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দীন মুহুরী নিজেই আমাদের উদ্দেশ্য করে গুলি ছুড়ে। এতে আমিসহ ৭ নেতা-কর্মী গুলিবিদ্ধ হই।
এ ব্যাপারে উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দীন মুহুরী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমরা কারো উপর আক্রমণ করিনি। গুলি করার প্রশ্নই আসেনা। আমাদের প্রার্থী এটিএম পেয়ারুল ইসলামসহ আমরা আমাদের উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মাহমুদুল হকের বাড়ী থেকে ফেরার পথে নানুপুর বাজারে পৌঁছলে তারা আমাদের উপর আক্রমণ করে- ইটপাটকেল ছুড়ে। এতে আমাদের শফিউল আলম, মোহাম্মদ শফি, মোহাম্মদ করিম আহত হয় এবং আমার ব্যবহৃত গাড়ী ভেঙ্গেও দেয়।
এ ব্যাপারে ফটিকছড়ি থানার ওসি বাবুল আকতার বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ওই ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তবে মহাজোট মনোনীত প্রার্থী এবং বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘাতে ফটিকছড়ি জুড়ে আতংক বিরাজ করছে। যে কোন মুহুর্তে অঘটনের আশংকায় জনগণ শংকিত এবং উৎকণ্ঠিত!
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।