বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মনোনয়ন বিচারে নরসিংদী জেলার পাঁচটি আসনেই বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছে বিএনপির মনোনয়ন বোর্ড। নরসিংদীর হারানো ঘাঁটি পুনরুদ্ধারে লাগসই এবং জনপ্রিয় ভোট যোদ্ধাদেরকেই মনোনয়ন দিয়েছে বোর্ডের সদস্যরা। অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে, জনগণ ভোট দিতে পারলে ১৯৯১ সালের মতোই ৫ টি আসনেই জয়ী হবে বিএনপি প্রার্থীরা। শনিবার সন্ধ্যায় নরসিংদী জেলার দুটি আসনে চূড়ান্ত মনোনয়ন ঘোষণার পর বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এই অভিমত ও আশা ব্যক্ত করেছেন। লাগসই মনোনয়ন দেয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কে অভিনন্দন জানিয়েছে বিএনপি নেতা কর্মী ও সমর্থকরা।
এছাড়া নরসিংদী-১ (সদর) আসনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন একজন সুযোগ্য প্রার্থী। ভোট কেন্দ্র দখল ও সিল মারামারি না হলে খায়রুল কবির খোকনের বিজয় সুনিশ্চিত। খোকনকে ষড়যন্ত্র করে জেলে পাঠানোর কারণে তার জনপ্রিয়তা আরো আগের চেয়ে বেড়েছে।
নরসিংদী-২ (পলাশ) আসনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ও এমপি ড. আব্দুল মঈন খানকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। একজন সৎ, ত্যাগী, নিষ্ঠাবান এবং সুযোগ্য ব্যক্তির মূল্যায়ন বলে বর্ণনা করেছে পলাশের নেতাকর্মীরা। এই আসনটি বিএনপির একটি ঘাঁটি। ড. মঈন খান এই আসন থেকে চার বার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। ২০১৪ সালে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়নি এবং ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ কেন্দ্র দখল ও সীল মেরে আসনটি দখলে নিয়েছে। ভোটাররা ভোট দিতে পারলে ড. আব্দুল মঈন খান বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হবেন।
বিএনপির সচেতন নেতাকর্মীদের মতে, নরসিংদী-৩ (শিবপুর) আসনে বিএনপির মনোনয়নের প্রক্রিয়া ছিল খুবই জটিল। এই আসনটি ছিল বিএনপির সাবেক মহাসচিব মরহুম আবদুল মান্নান ভূঁইয়ার। এবছর এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রার্থী ছিলেন ৮জন। এরমধ্যে কৌশলগত কারণে বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান এবং নরসিংদী সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও নরসিংদী জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মনজুর এলাহীকে মনোনয়নের চিঠি দেয়া হয়। এ অবস্থায় শিবপুর থানা বিএনপির নেতাকর্মীরা বিভ্রান্তিতে পতিত হয়। পূর্ব থেকেই প্রচারিত হয়ে আসছিল যে এ বছর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শিবপুর আসন থেকে প্রার্থী হবেন নরসিংদী সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মনজুর এলাহী। মনোনয়ন পাবার আশায় মঞ্জুর এলাহী নরসিংদী সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের পদ ইস্তফা দিয়ে মনোনয়নের জন্য আবেদন করেছিলেন। সেমতে নেতাকর্মীরা মনজুর এলাহীর নির্বাচন করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে। কিন্তু মনজুর এলাহীর পূর্বে অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া এবং ছাত্রদল নেতা আকরামুল হাসানকে মনোনয়ন দেয়া হয়। শেষ পর্যায়ে গিয়ে মনজুর এলাহী কে মনোনয়নের চিঠি দেয়ায় বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক সংশয়, সন্দেহ এবং হুতাশা দেখা দেয়। যদিও বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর বরাবর বলে আসছিলেন কৌশলগত কারণে তিন জনকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। শেষ পর্যন্ত মনজুর এলাহীকেই চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়া হবে। চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়ার প্রক্রিয়ায় মনজুর এলাহীর মনোনয়ন ঘোষণায় বিলম্ব হওয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
নরসিংদী-৪ (মনোহরদী-বেলাব) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক এমপি সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুল। এই আসনটি পুনরুদ্ধারেবহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে সরদার বকুলকে মনোনয়ন দেয়া বিএনপির উর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দের আরেকটি বিচক্ষণতা। এ আসন থেকে বকুল তিনবার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। সরদার বকুল এলাকায় এতটাই জনপ্রিয় যে মাঠ থেকে পালিয়ে যাবার প্রার্থী সে নয়। তার সমর্থক এ জানিয়েছে যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করে সে মাঠে থাকবে। সরল ভোট হলে বিপুল ভোটের ব্যবধানে সর্দার বকুল বিজয়ী হবে।
নরসিংদী-৫ (রায়পুরা) আসনে সাবেক এমপি আব্দুল আলী মৃধার বিকল্প কোন প্রার্থী তৈরি হয়নি। বিএনপির সাবেক মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়া, আব্দুল আলী মৃধার সকল সদস্য পদ স্থগিত করে যাওয়ার পর বিএনপির ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দ সেই স্থগিতাদেশ আর প্রত্যাহার করেনি। যার কারণে তিনি এ বছর মনোনয়ন চাইতে পারেন নি। এদিকে থেকে রায়পুরা আসনটি মূলত নেতৃত্বশূণ্য। এবছর এই আসনে মোট ১৪ জন প্রার্থী মনোনয়ন চেয়েছিলেন। এর মধ্যে মনোনয়ন বোর্ড মনোনয়নের চিঠি দিয়েছিল দুইজনকে। একজন হচ্ছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির নেতা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল ইসলাম বকুল এবং অপরজন রায়পুরা থানা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট নেসার আহমেদ। শনিবার সন্ধ্যায় চূড়ান্ত মনোনয়ন লাভ করেছেন ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল ইসলাম বকুল। এই আসনে তার ভবিষ্যত কি হবে তা এখনই বলতে পারছে না বিএনপি নেতাকর্মীরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।