Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

কুমিল্লায় হিমেল হাওয়ায় ভোটের আমেজ

উন্নয়নের পাশাপাশি সুশাসনের প্রত্যাশা ভোটারদের

কুমিল্লা থেকে সাদিক মামুন | প্রকাশের সময় : ১০ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

দুয়ারে ভোট। হাতে সময় নেই। আসি আসি করছে ভোটের মাহেন্দ্রক্ষণ ৩০ ডিসেম্বর। পৌষের ঠিক মাঝামাঝি সময়ে কনকনে শীতের সকালে ভোটকেন্দ্রে দেখা মিলবে ভোটারের দীর্ঘসারি। কুমিল্লায় মহাজোট ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দেয়ার পর থেকেই অনানুষ্ঠানিকভাবেই ভোটারের দুয়ারে পা রাখতে শুরু করেন। কুমিল্লার ১১টি আসনে শীতের সকাল-সন্ধ্যায় হিমেল হাওয়ায় প্রার্থীদের কুশলাদি বিনিময়, দোয়া আর ভোটারের মন গলানোর পালা শুরু হয়েছে আরও আগ থেকে। আজ সোমবার জেলা নির্বাচন অফিস থেকে প্রতীক বরাদ্দের পর ভোটের পালে জোরেশোরে হাওয়া লাগবে কুমিল্লা জুড়ে। প্রতীক পেয়ে হিমেল হাওয়ায় নৌকা-ধানের শীষ নিয়ে মেতে ওঠবেন কর্মী সমর্থকরা।

কুমিল্লার ১১টি আসনে এবারে ভোটার সংখ্যা ৩৮ লাখ ৭৮ হাজার ৬০৪ জন। যা দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চেয়ে বেড়ে ৫ লাখের বেশি দাঁড়িয়েছে। কুমিল্লার শহর গ্রাম-গঞ্জে এখন কেবলই ভোটের আমেজ। গ্রাম-গঞ্জের ছোট-বড় চা দোকান থেকে শুরু করে শহরের হোটেল-রেস্তোরা, রাস্তার পাশের ভাসমান চায়ের দোকান আর অফিস, বাসা-বাড়ির ড্রইংরুম পর্যন্ত এখন আওয়াজ একটাই নৌকা-ধানের শীষ। প্রার্থী, কর্মী, সমর্থক আর সাধারণ ভোটারের সেই আওয়াজে সবপথ মিশে যাচ্ছে ভোটের মাঠে। কুমিল্লার ১১টি আসনে আ.লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ও প্রধান শরিক দল বিএনপি নিয়ে গঠিত ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছেন। গতকাল আ.লীগ ও বিএনপির চূড়ান্ত প্রার্থীদের বাইরে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তারা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এদিকে প্রকৃতিতে এখন দিন দিন তাপমাত্রা কমছে। কিন্তু বাড়ছে নির্বাচনী তাপমাত্রা। জেলা নির্বাচন অফিস থেকে আজ প্রতীক বরাদ্দ দেবে প্রার্থীদের। শুরু হবে নৌকা ধানের শীষের মূল প্রচারণা। আটঘাট বেঁধে ভোটারের দুয়ারে যেতে প্রস্তুত প্রার্থীরা। আর তার সাথে কর্মি সমর্থকদের আনন্দঘন হৈহুল্লোরের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নির্বাচনী পরিবেশ শীতের হিমেল হাওয়াকেও গরম করে তুলবে। কুমিল্লার ১১টি আসনে নৌকা প্রতীকে ধারাবাহিক জয় চায় আ.লীগ। আর আসন পুনরুদ্ধারে বিএনপির জন্য এবারের নির্বাচন ভোটের মাঠের মর্যাদার লড়াই।

কুমিল্লার বিশিষ্টজনরা ভোটের মাঠের এ লড়াইকে গণতন্ত্রের উৎসব মনে করছেন। সচেতন নাগরিক কমিটি কুমিল্লার সভাপতি বদরুল হুদা জেনু বলেন, উন্নয়নের সঙ্গে সুশাসন চান ভোটাররা। এ নির্বাচনের মধ্যদিয়ে যারাই দেশ পরিচালনা করবেন তাদের কাছে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক সরকার, গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণসহ কার্যকর সংসদ এবং জনগণের কাছে দায়বদ্ধতা থেকে বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠনই সবার কাম্য।

নারী নেত্রী পাপড়ি বসু বলেন, ভোট উৎসব শুরু হয়ে গেছে। কুমিল্লার সর্বস্তরের মানুষ এই উৎসবের অংশিদার। যারা ক্ষমতায় আসবেন তাদের কাছে প্রত্যাশা ও দাবি তারা যেনো মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলেন। সাংস্কৃতিক সংগঠক চন্দন দাস জানান, আগামী সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা থাকবে প্রতিটি উপজেলায় মুক্তমঞ্চ তৈরি এবং লোকজ সংস্কৃতির চেতনা তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে জেলা উপজেলা পর্যায়ে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিদের মধ্য থেকে প্রতিনিধি নির্বাচিত করা। কুমিল্লা শহরের গাংচর এলাকার চাকরি প্রত্যাশি গৃহিণী নাসরিন আক্তার জানান, আগামীতে যারাই সরকার গঠন করবেন সেই সরকার যেনো নারী ও শিশুবান্ধব রাষ্ট্র গঠনের ওপর বেশি গুরুত্ব দেন এবং কুমিল্লায় গবেষণাধর্মী উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি ও নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে উদ্যোগী হোন। কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্রী নাজনীন আক্তার নতুন ভোটার। আনন্দ নিয়েই ভোট দিবেন। আর আগামীতে যারা সরকার গঠন করবে তাদের কাছে তার প্রত্যাশা, তথ্য-প্রযুক্তিতে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। শিক্ষার চলমান অবস্থার উন্নয়ন এবং গ্রামে শিক্ষার অবকাঠামো তৈরির ওপর জোর দিতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ