বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বাংলাদেশের রাস্তায় ২০ বছরের অধিক পুরনো বাস, মিনিবাস জাতীয় যাত্রীবাহী যানবাহন চলাচল করতে পারবে না। একইভাবে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যানসহ সমজাতীয় পণ্যবাহী যানবাহনের সর্বোচ্চ বয়স হবে ২৫ বছর। দুর্ঘটনা কমাতে ও পরিবেশ দূষণ রোধে যানবাহনের এ আয়ুষ্কাল নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। যা ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। স¤প্রতি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কার্যালয়ে বুয়েটসহ সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ আয়ুষ্কাল নির্ধারণ করা হয়।
তবে সরকার নির্ধারিত এ আয়ুষ্কাল আন্তর্জাতিক মানদন্ডের চেয়ে অনেক বেশি বলে মনে করছেন পরিবহন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, সাধারণত বড় বাসের ক্ষেত্রে গড় আয়ু ধরা হয় সর্বোচ্চ ১২ বছর। ছোট বাসের ক্ষেত্রে তা ৭-১০ বছর। নির্মাতা কোম্পানিগুলোও বাসের গড় আয়ু সর্বোচ্চ ১২ বছরের মধ্যে নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। সুইডিশ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ভলভোর একটি বড় বাসের গড় আয়ু ১২ বছর। যা সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ মাইল পর্যন্ত চলতে পারে।
আন্তর্জাতিক মানদন্ডে বড় ট্রাকের গড় আয়ু সর্বোচ্চ ১২ বছর। মাঝারি ও ছোট ট্রাকের গড় আয়ু ৭-১০ বছর। অথচ আমাদের দেশে যানবাহনের আয়ু নির্ধারণ করা হচ্ছে ২০-২৫ বছর। এ সিদ্ধান্তের ফলে একদিকে যেমন আমাদের পরিবেশের ক্ষতি হবে, তেমনি সড়ক দুর্ঘটনার হারও কমানো যাবে না।
দেশে সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ পুরনো লক্কড়-ঝক্কড়, ফিটনেসবিহীন যানবাহন। শুধু দুর্ঘটনা নয়, পরিবেশ দূষণেও সমান দায়ী এসব যানবাহন। ইউএসএআইডির তথ্য মতে, বাংলাদেশে বছরে যে পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ হয়, তার ১৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ উৎপাদন করে পরিবহন খাত। পুরনো ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচলের কারণে প্রতিদিনই দেশের কোনো না কোনো সড়কে দুর্ঘটনা ঘটছে। এতে প্রাণ হারাচ্ছেন অনেকেই।
বর্তমানে সারা দেশে নিবন্ধিত ট্রাক, কার্গো ও কাভার্ড ভ্যানের সংখ্যা ১ লাখ ৮০ হাজার। এর মধ্যে প্রায় ৯২ হাজার বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যানের বয়স ১০ বছর বা তার চেয়ে বেশি।
১৯৮৩ সালের মোটরযান আইন অনুযায়ী চাকা, ইঞ্জিনক্ষমতা ও ধরন বিবেচনায় নিয়ে ৪০ ধরনের যানের নিবন্ধন দেয় বিআরটিএ। সংস্থাটির হিসাব বলছে, সারা দেশে নিবন্ধিত বাস ও মিনিবাসের সংখ্যা ৭৪ হাজার। এর ৫৩ হাজারের বয়স ১০ বছর বা তার চেয়ে বেশি। দেশে ২০ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সের বাসের সংখ্যা কত, সে সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারেননি বিআরটিএর কর্মকর্তারা। তবে তারা ধারণা দিয়েছেন, সংখ্যাটি ১৮-২০ হাজারের মধ্যে হতে পারে, যেগুলোর বেশির ভাগই এখনো চলাচল করছে। যানবাহনের নতুন আয়ুষ্কাল নির্ধারণ সড়কে দুর্ঘটনা রোধ করবে বলে দাবি করেছেন বিআরটিএর পরিচালক (রোড সেফটি) মাহবুব-ই-রব্বানি। তিনি বলেন, দেশের সড়ক-মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন, পুরনো, জরাজীর্ণ যানবাহন চলাচল ঠেকাতে নতুন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ বয়সসীমা নির্ধারণে বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দলের কাছ থেকে পরামর্শ নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি খাতটির সব স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেই এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, কোনো বাস বা ট্রাকের আয়ুষ্কাল শেষ হয়ে গেলে তা ডাম্পিং করা হবে।
ঢাকায় ২০ বছরের পুরনো বাসের বিরুদ্ধে প্রায়ই অভিযানে নামে বিআরটিএ। তবে অভিযান সত্তে¡ও থেমে নেই পুরনো বাসের চলাচল। বিআরটিএ’র পাশাপাশি পুরনো বাস চলাচল রোধে উদ্যোগী হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনও।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।