Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভোটাররা কেন্দ্রে শান্তি চান

নারায়ণগঞ্জে ভোটের আলাপ

নারায়ণগঞ্জ থেকে মো. হাফিজুর রহমান মিন্টু | প্রকাশের সময় : ৯ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই সরগরম হয়ে উঠছে নারায়ণগঞ্জ জেলার পাঁচটি নির্বাচনী এলাকা। হাট-বাজারে, পথে-ঘাটে, চায়ের দোকানে সবর্ত্রই এখন নির্বাচনী আমেজ। নতুন ভোটারা পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে ব্যাকুল হয়ে অপেক্ষা করছেন।
না.গঞ্জের পাঁচটি আসনে ২০ লাখ ৪৫ হাজার ভোটার, কেন্দ্রে ৭৪২টি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নারায়ণঞ্জের পাঁচটি আসনের ভোটকেন্দ্রের খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। পাশাপাশি প্রতিটি কেন্দ্রের নারী ও পুরুষ ভোটাদের সংখ্যাও উল্লেখ করা হয়েছে। এবারের খসড়া তালিকায় নারায়ণগঞ্জ পাঁচটি আসনে সর্বমোট ৭৪২টি কেন্দ্রে ২০ লাখ ৪৫ হাজার ৪২৬ জন নারী ও পুরুষ ভোটার রয়েছে।

খসড়া তালিকায় দেয়া তথ্যে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে সর্বমোট ভোটকেন্দ্র ১২৬টি, যার মধ্যে পুরুষ ও মহিলা ভোটার সংখ্যা প্রায় তিন লাখ ৪৬ হাজার ৩৭১ জন। নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনে ভোটকেন্দ্র ১১৩টি, এর মধ্যে নারী ভোটার এক লাখ ৪১ হাজার ৬৩১ জন, আর পুরুষ ভোটার এক লাখ ৪৭ হাজার ৪৭ জন। নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁও) আসনে ভোটকেন্দ্র ১১৮টি, এর মধ্যে নারী ভোটার এক লাখ ৪৭ হাজার ৯৭ জন আর পুরুষ ভোটার এক লাখ ৫৬ হাজার ৭৩১ জন। নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে ভোটকেন্দ্র ২১৪টি, যেখানে মোট ভোটার সংখ্যা নারী ও পুরুষ মিলে ছয় লাখ ৫৯ হাজার ১১ জন। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর ও বন্দর) আসনে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১৭১টি, যেখানে সর্বমোট ভোটার সংখ্যা নারী ও পুরুষ মিলে চার লাখ ৪৭ হাজার ৫৩৮ জন।
নির্বাচন কমিশনের দেয়া খসড়া তালিকা হিসাবে এবার একাদশ জাতীয় নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি আসনে ৭৪২টি কেন্দ্রে সর্বমোট ২০ লাখ ৪৫ হাজার ৪২৬ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ পাবেন।

এবারের সংসদ নির্বাচন নিয়ে মানুষের আগ্রহের কমতি নেই। চলতি পথে নির্বাচনী ভাবনা জানান নগরীর হোটেল ব্যবসায়ী জয়নাল। তিনি বলেন, আমার ভোট আমি দেবো, আর নিরাপদে সুস্থ শরীরে বাড়ি ফেরার নিশ্চয়তা পেলে সমস্ত কাজকর্ম ফেলে ভোটকেন্দ্রের দিকে ছুটে যাবো। কি ধরনের প্রার্থীকে ভোট দেবেন প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, যার মধ্যে এলাকার উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড, সন্ত্রাস এবং মাদকমুক্ত সমাজ গড়ার অভিলাষ রয়েছে, সেই প্রার্থীকে আমার মূল্যবান ভোট দেবো।

রিকশাচালক আতিক জানান, ভোটকেন্দ্রে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকলে ভোটকেন্দ্রে যাবো আর যদি দেখি ভোটকেন্দ্রে মারামারি-ফালাফালির সম্ভাবনা রয়েছে, তা হলে ভোটকেন্দ্রে যাবো না। ভোটকেন্দ্রে পবিত্র ভোট দিতে গিয়ে রক্তাক্ত শরীরে বাড়ি ফেরার ইচ্ছা আমার নেই।
বন্দর গুদারাঘাটে চায়ের দোকানে চা-পানরত আবুল খায়ের জানান, একদলের নেতাকর্মীরা জেলে, তারা একসাথে ৮-১০ জন কোনো স্থানে বসে থাকতে দেখলে পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে যায়, আর অন্যদলের নেতাকর্মীরা চুটিয়ে তাদের নির্বাচনী প্রচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এ কেমন নিরপেক্ষ নির্বাচন। তিনি জানান, দেশবাসী আর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন দেখতে চায় না। তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্রে কোনো সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বা কোনো পেশিশক্তির কসরত দেখতে চাই না। দেখতে চাই শান্তিপূর্ণ পরিবেশ। যেন আমি আমার ভোট দিয়ে সুস্থ শরীরে বাড়ি ফিরতে পারি।

মাদরাসা শিক্ষক জানান, সীমা লঙ্গনকারীরা যন্ত্রণা দিতে পারে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত পরাজয় বরণ করতে বাধ্য হয়। সরকার গায়েবি মামলা দিয়ে জনগণের বিপক্ষে মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে। জনগণ এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চায়। যদি গ্রহণযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের সুযোগ জনগণ একবার পায়, তবে এর জবাব ব্যালটের মাধ্যমেই দেবে।
প্রকৌশলী হেদায়েত হোসেন নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, সব দলের অংশগ্রহণে একাদশ জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারাদেশের ভোটারদের মাঝে এক উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। তিনি জানান, বর্তমান সরকারের ১০ বছরে দেশের সর্বক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে, যা সারা বিশ্বে উন্নয়নের রোলমডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। তিনি জানান, যাদের দ্বারা এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে, আমি তাদের পক্ষে আছি। দেশ এগিয়ে যাক, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকুক।
এলাকাবাসীর চাওয়া, ভোটকেন্দ্রে কোনো সন্ত্রাসী কর্মকান্ড দেখতে চাই না, শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ পরিবেশে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে চাই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ