Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নানামুখি পরিকল্পিত প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করতে হবে ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীদের

সিলেটে মহাজোট প্রার্থীদের প্রভাব

ফয়সাল আমীন | প্রকাশের সময় : ৭ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৪:৩৬ পিএম | আপডেট : ৪:৩৮ পিএম, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৮

পরিকল্পিত ছকে নির্বাচনে বিজয় লাভের অধীর অপেক্ষায় ক্ষণ গণনায় দিন কাটছে মহাজোট প্রার্থীদের। দলে স্থানীয় অভ্যন্তরীন দৃশ্যমান বিরোধ ছাড়া বাধাহীন এই সব প্রার্থীরা। দীর্ঘ ১০ বছরে চড়ি ঘুরিয়েছেন প্রসাশন সহ সর্বস্তরে এই এমপি প্রার্থীরা। মন মেজাজে রয়েছে প্রভাব খাটানের অভিজ্ঞতা। এখনও এমপি সাব শব্দে সমীহ করছেন সকলে তাদের। স্যার ডাক তো আছেই সহযোগী যন্ত্রের। নির্বাচনী পরিবেশেও আগের মতোই দাপুটে তারা। আশেপাশে রয়েছেন নিজ বলয়ের জী-হুজুরের দল। খবর দিচ্ছেন জয়ের পথে ডিস্টার্ব হতে পারে কে কিভাবে। সেই অনুসারে প্রতিকার প্রতিরোধ করে মাঠ খালি করতে তৎপরতা চালাচ্ছেন। হুকুম করছেন পরিস্কার হয়ে যাচ্ছে বাধাও। অন্যদিকে, বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা মাঠে সক্রিয় হতে পারছেন না এখনও। প্রার্থী চুড়ান্ত না হওয়ায়ও এর একটি কারন। তবে মাঠে নামার মধ্যে দিয়ে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বাধার মুখে পড়বেন তারা এমন শংকা তাদের মধ্যে। নির্বাচনী কেন্দ্রিক ভরসার কোন স্থানই তাদের জন্য অনুকূল নয়। ক্ষমতা থেকে দুরে থাকায় প্রশাসনিক ডিলিংয়ে সম্ভাব্য অনেক প্রার্থীর নেই কোন অভিজ্ঞতা। নির্বাচনী মাঠে স্যার ডাকার লোকও নেই তাদের। মাঠে-ময়দানে মর্যাদাগত বৈষম্যও তাদের চাপে রাখবে। কর্মী-সমর্থকদের মাথায় মামলা-হুলিয়া থাকায় আইনী ধরপাকড় মোবাবেলা করায় তটস্থ থাকতে হবে তাদের। সেই সাথে চুল থেকে পান খসলে জবাবদিহিতার চাপ তো থাকবেই। বিএনপি প্রার্থীদের আষ্টেপৃষ্টে বলবৎ থাকবে আইনের সক্রিয় চোখ। সিলেটের ৬টি আসনের মধ্যে মর্যাদাপূর্ণ সিলেট -১ আসনে ইনাম আহমদ চৌধুরী বিএনপির প্রার্থী হলে, কিছুটা রিলাক্সে নির্বাচনী যুদ্ধের সুযোগ পেতে পারেন তিনি। সাবেক আমলা হিসেবে তার প্রতি সমীহ থাকতে পারে প্রতিপক্ষ প্রার্থী ্ও সহযোগি অংগের। কিন্তু বাকী আসনগুলোতে অভাবনীয় চাপে থাকবেন প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকরা ঐক্যফ্রন্টের। দলের তৃণমুল নেতাকর্মীরা এমন আশংকাই করছেন। সিলেট-৬ আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। দলে স্থানীয়ভাবে কোন্দল দৃশ্যমান থাকলেও সহযোগি অন্যদের নিকট তার অবস্থান সমীহের। যারা নির্বাচনে জয় পরাজয়ের অপ্রত্যাশিত ফ্যাক্টর। নিজের মর্জিতে সাজিয়ে রেখেছেন সেই স্তরগুলো। তার নির্বাচনী এলাকাতে প্রগতিশীল শ্রেণীর প্রভাব রয়েছে। জামায়াত-শিবির নিয়ে রয়েছে চরম এ্যালর্জি। ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী জামায়াতের কেউ হলে, তো কথাই নেই। মাঠে দায় হয়ে যাবে ঠিকে থাকা। জামায়াত প্রার্থীর কারনে বিএনপির নেতাকর্মীরা পড়বে বেকায়দায়। সেখানে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান, নেজামে ইসলাম পাটির সভাপতি এডভোকেট আব্দুর রকিবও ধানের শীষের প্রার্থী হতে পারন। জাতীয় পর্যায়ে আব্দুল রকিবের পরিচিতি ও সুনাম পরীক্ষিত। নির্লোভ ও আদর্শের জন্য নিবেদিতও তিনি। প্রবীন এই নেতাকে ঐক্যফ্রন্ট মূল্যায়ন করে প্রার্থী করলে, ভোট রাজীনিতির প্রচলিত মাঠে কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে তাকে। কারন তার পক্ষে স্থানীয় বিএনপি-জামায়াত তথা ঐক্যফ্রন্টের সহযোগিতা নিয়ে বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠবে। আ‘লীগ প্রার্থী নাহিদের বিশাল ব্যািক্ত প্রভাবও এই আসনে কার্যকরী । বিএনপির কোন প্রার্থী ধানের শীর্ষ নিয়ে নির্বাচন করলে, ভোট গণনার পর জয়-বিজয় নিশ্চিত হতে পারে এই আসনে। এই আসনে আওয়ামীলীগের সাথে সর্ম্পক রেখে মাঠে মোটামোটি সক্রিয় ছিল বিএনপি। দূর্দিনে স্থানীয় আওয়ামীলীগের সহযোগিতাও পেয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। রাজনীতিক চরিত্রের বিপরীতে আতœীয়তার একটি সুদৃড় বন্ধনে আটকে রয়েছে বিএনপি-আওয়ামীলীগে রাজনীতিকরা। নির্বাচন কেন্দ্রিক যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলা অনেকটা সহজ হবে বিএনপির কোন প্রার্থী এই আসনে মনোনয়ন পেলে। নতুবা নৌকার চেয়ে ব্যক্তি নাহিদকে পছন্দ করতে পারে ভোটের মাঠে ধানের শীষের ভোটাররা। সিলেট-৫ আসনে ধানের শীষ নিয়ে জামায়াতের সাবেক এমপি ফরিদ উদ্দিন নির্বাচন করলে প্রবল চাপে থাকতে পারেন তিনি। তারা আশেপাশে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারনায় সক্রিয় থাকবে বিশেষ করে নিজ দলের কর্মী সমর্থক। দেখা যাবে এদের বেশিরভাগই সরকার বিরোধী নাশকতা মামলার আসামী। তাদের মধ্যে ফেরারীর সংখ্যাও তো থাকবেই। নির্ভাবনায় নির্বাচনী মাঠে থাকতে পারবে না তারা। বুকে ভয় নিয়েই পথ চলতে হবে নানামুখি কৌশলে. গ্রেফতার এড়াতে। সিলেট-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী হতে পারেন সাবেক এমপি দিলদার হোসেন সেলিম। সেলিমের প্রশাসনিক ক্ষেত্রে ডিলিংয়ের অতীত অভিজ্ঞতা থাকলেও ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রশাসনিক স্তরের সাথে তা কতটুকু মানিয়ে নিতে পারেন তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। ক্ষমতার বাহিরে দীর্ঘ দিন থাকায় শুধু মোবাবেলা করেই গেছেন, প্রভাব খাটনোর সুযোগ হয়ে উঠেনি তার। তবে নিজ এলাকায় ব্যাপক জনসমর্থনে সমৃদ্ধ তিনি। সিলেট-৩ আসনে সাবেক এমপি শফি আহমদ চৌধুরী বা যুবদলের কেন্দ্রিয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী প্রার্থী হতে পারেন ঐক্যফ্রন্টের । দু‘জনেরই প্রশাসনিক লেবেলে সংযোগ থাকার অভিজ্ঞতা রয়েছে। বয়সের কারনে শফি চৌধুরী উদ্যামী না হওয়ায়, মানসিক তেজদীপ্ত থাকতে পারছেন না তিনি। যদি একান্ত মনোনয়ন নিশ্চিত হয় তার তবে জয়-পরাজয় যাই হোক দলের সাথে সর্ম্পক ছেদ ঘটতে পারে তার। মাঠ-রাজনীতির ইতি ঘটবে, জয়ী হলে সংসদে, পরাজিত হলে ঘরে ফিরবেন তিনি। কাইয়ুম চৌধুরী মনোনয়ন পেলে, কর্মী-সমর্থকের মাঠ রাজনীতির পথ দীর্ঘ হবে। সেই সাথে প্রতিপক্ষ প্রার্থীও বেকায়দায় পড়বেন। এখনও রাজনীতিতে ভবিষ্যত রয়েছে কাইয়ুম চৌধুরীর। দাপুটে একটি রাজনীতিক চরিত্র রয়েছে তার। কর্মী-সমর্থকদের সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ায়ও পরীক্ষিত তিনি। তার কারনে সাহসী থাকবে নেতাকর্মীরা। ডিজিটাল প্রশাসনিক লেবেলের সাথে তার পরিচয় ও ডিলিংয়ে মানিতে নিতে পারবেন বলে মনে করছে কর্মী সমর্থকরা। সিলেট-২ আসনে প্রার্থী হচ্ছেন ইলিয়াস পত্নি তাহসনিা রুশদী লুনা। লুনা নিজেই একটি ব্রান্ড। সেকারনে তেমন বেগ পেতে হবে না তার। তার প্রতিদ্বন্দ্বি মহাজোটের সাবেক এমপি ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া। বাই চান্স এই এমপি মুলত সার্বিক বিচারে ভোট রাজনীতিতে কোনঠাসা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ