Inqilab Logo

বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খুলনায় ভোট নিয়ে জনতার ভাবনা

আবু হেনা মুক্তি | প্রকাশের সময় : ৭ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৭ এএম

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নানা প্রতিশ্রæতি দিয়ে ভোটারদের দুয়ারে হাজির হচ্ছেন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা। খুলনার সংসদীয় ছয়টি আসনে লড়াই হবে নৌকা ও ধানের শীষে। তবে অতীতের তুলনায় এবার ভোটের আগাম হিসাব-নিকাশ কষছেন দুই শিবিরের প্রার্থীই। সাংগঠনিক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সব প্রার্থীই নতুন ভোটার বা তরুণ প্রজন্মকেই কাছে টানছেন। খুলনার ছয়টি আসনে এবার দেড় লক্ষাধিক নতুন ভোটার ফ্যাক্টর হবে ফলাফল নির্ধারণে, এমনই ধারণা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

এদিকে নতুন ভোটার ও পুরানো ভোটাররা কেমন প্রার্থীকে ভোট দিতে চাইছেন, এ বিষয়ে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কথা হয় কয়েক জনের সাথে। বিভিন্ন জনের বিভিন্ন চাওয়া পাওয়ার কথা তুলে ধরা হলো। বিএল কলেজছাত্রী শিউলী আক্তার উপমা বলেন, এবারই প্রথমবারের মতো ভোট দেবো। দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে কোন রাজনৈতিক দল কী করেছে, তরুণদের কর্মসংস্থান ও সাধারণ মানুষ কিভাবে শান্তিতে থাকতে পারবেন সবকিছু বিবেচনায় এনে তারপর আমার ভোট দেবো।

খুলনার এনজিও কর্মী পারভীন আরা মনে করেন, দেশের উন্নয়ন ও দাবি বাস্তবায়নে ভ‚মিকা রাখতে পারবেন এমন নির্বাচনে প্রার্থীকেই আমরা বেছে নেবো। তবে আমরা চাই নিশ্চিন্তে ভোট দিতে। আমাদের একটিই সেøাগান আমার ভোট আমি দেবো যাকে খুশি তাকে দেবো। বাস্তুহারাবাসী ট্রাকড্রাইভার রফিকুল ইসলাম বলেন, খুলনা নগরীর উন্নয়নে যিনি আন্তরিক, তাকেই সংসদ সদস্য হিসেবে দেখতে চাই। হয়রানি ছাড়া মানুষ উপকৃত হবে এমন মানুষকেই বেছে নিতে চাই। এ ছাড়া সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিকেই জনপ্রতিনিধি হিসেবে চাই।
মৎস্য ব্যবসায়ী জাকির ইসলাম বলেন, জনবান্ধব ব্যক্তিকেই সংসদ সদস্য হিসেবে দেখতে চাই। যিনি মানুষের সুখ-দুঃখে সঙ্গে থাকবেন এবং জনদাবিকে প্রাধান্য দেবেন এমন কেউ নির্বাচিত হলে মানুষ উপকৃত হবে। তিনি আরো বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি খুলনার সাধারণ ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তবে, এবারের নির্বাচনে সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটে অংশ নেবেন। সে ক্ষেত্রে ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ ও ভোটারদের নিরাপত্তার দাবি জানান তিনি।

চা-বিক্রেতা মো. মেহেদী হাসান জানান, মানুষের সার্বিক কল্যাণে যিনি নিজেকে নিয়োজিত রাখবেন, তেমন ব্যক্তিকেই সংসদ সদস্য নির্বাচিত করা প্রয়োজন। নির্বাচিত প্রতিনিধি মানুষের সুখ-দুঃখে পাশে থাকবেন। এ কথায় খুলনাঞ্চলের জন্য যিনি মঙ্গলজনক কাজ করবেন তাকেই সংসদ সদস্য হিসেবে দেখতে চাই। এ ব্যাপারে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজনের খুলনা জেলা সম্পাদক অ্যাডভোকেট কুদরত-ই খুদা বলেন, ‘খুলনার প্রায় দেড় লাখ নতুন ভোটারের অধিকাংশই সুশিক্ষিত। তারা দলীয় প্রভাবের বাইরে থেকে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে ভোট দেবেন। ভোটের হিসেবের পাশাপাশি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণও নিশ্চিত করতে ভাবতে হবে প্রার্থীদের। এবার নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে না পারলে সাধারণ ভোটাররা নির্বাচন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেন।’ বিশ্লেষকরা বলছেন, শিক্ষা, উন্নয়ন, অবকাঠামো, কর্মসংস্থানে চার দাবি বিবেচনায় নিয়েছেন নতুন ভোটাররা। তারা দাবি আদায়ে সক্ষম মানুষকেই জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করবে।

অপর দিকে, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা-২ আসনের ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেছেন, সরকারের সকল অন্যায় অত্যাচার, খুন, গুম, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনগণ স্বোচ্চার। জনগণ তার ভোটের অধিকার ফিরে পেতে চায়। বিএনপির জনগণের সেই ভোটের অধিকার এবং গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে নেমেছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সেই আন্দোলনের অংশ। এ নির্বাচন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির। নির্বাচনের ধানের শীষের বিজয়ের মধ্যদিয়ে জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনা হবে।
খুলনা-২ আসনে আ.লীগ মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী সেখ সালাহ উদ্দিন জুয়েল বলেছেন, আমি খুলনার সন্তান। খুলনার মাটি মানুষের সাথে আমার সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের জায়গা থেকেই খুলনার মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। অতীতে যেমন এই অঞ্চলের মানুষকে নিয়ে একে অন্যের সাথে মিলে একাকার হয়ে কাজ করেছি, তেমনি আগামীতেও সবাইকে নিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একসাথে কাজ করতে চাই।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন দেশের মানুষের জন্য জেল-জুলুম, অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করে শেষ পর্যন্ত জীবন দিয়েছেন। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও জীবন বাজি রেখে মানুষের অধিকার, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠাসহ সকল উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি দেশের প্রত্যেকটি জেলা উপজেলায় একযোগে উন্নয়ন কর্মকাÐ চালিয়ে যাচ্ছেন। তার এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে নৌকাকে বিজয়ী করে আনতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ