বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বিএনপিতে সদ্য যোগ দেয়া সাবেক এমপি গোলাম মাওলা রনির পটুয়াখালী-৩ আসনে মনোনয়নপত্র বৈধতা পাওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলে ভোটের রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ শুরু হয়েছে। অস্বস্তি বাড়ছে এবারের নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী সিইসি’র ভাগ্নে এসএম শাহজাদা ও তার অনুসারীদের। তবে বিষয়টি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে ঐ আসনে একাধিকবারের এমপি সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও ছাত্রনেতা আ.খ.ম জাহাঙ্গীর-এর অনুসারীদের মধ্যে। আ.খ.ম জাহাঙ্গীর ১৯৮৪ সাল থেকে একাধিকবার পটুয়াখালী-৩ আসনে এমপি নির্বাচিত হলেও এবার দল তার পরিবর্তে সিইসির ভাগ্নে এসএম শাহজাদাকে মনোনয়ন দিয়েছে। ফলে তার অনুসারীদের মধ্যে কিছুটা ক্ষোভ কাজ করছে। এসব কর্মীরা শাহজাদার পক্ষে ভোট প্রচারনায় কতটুকু মাঠে থাকবে সে বিষয়টি নিয়ে সন্দিহান রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল। অপরদিকে জাপার বিদায়ী মহাসচিব রুহুল আমীন হাওলাদারের মনোনয়ন এখনো বৈধতা পায়নি। পঙ্কজের সাজার তথ্য গোপনের বিষয়ে শুননী আজ অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে।
ভূলক্রমে হলফনামায় স্বাক্ষর না করায় গোলাম মাওলা রনির মনোনয়ন পত্র বাতিল করেছিলেন পটুয়াখালীর রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক। রাজনীতিতে নবীন হলেও যথেষ্ঠ কৌশলী গোলাম মাওলা রনি ২০০৮-এর নির্বাচনে পটুয়াখালী-৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেব ১ লাখ ২০ হাজার ১০ ভোট পেয়ে বিএনপি প্রার্থীকে প্রায় ৬০ হাজার ভোটে পরাজিত করেছিলেন। তবে তিনি ২০১৪-এর ভোটারবিহীন নির্বাচনে দলের কাছে মনোনয়ন চাননি। এর পর থেকে দলীয় রাজনীতিতে তিনি যথেষ্ঠ নিস্ক্রীয় ভূমিকা পালন করলেও অতি সম্প্রতি বিএনপিতে যোগদিয়ে মনোনয়ন লাভ করেন।
তবে ২০০৮ থেকে ’১৪ পর্যন্ত তার নির্বাচনী এলাকা গলাচিপায় নিজ দলের আ.খ.ম জাহাঙ্গীরের অনুসারী ছাড়াও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের সাথে খুব ভাল আচরণ না করায় এলাকায় কিছুটা বদনামও রয়েছে রনির। উপরন্তু এলাকার সাথেও তার সম্পর্কটি কখনোই নিবিড় ছিলনা। এসব নেতিবাচক বিষয়গুলো অতিক্রম করে বিএনপি প্রার্থী হিসেবে তিনি কতটা কি করতে পারবেন সে বিষয়ে এখনই মন্তব্য কোন মন্তব্য না করলেও রনি তার আসনে অতীতে বিএনপির প্রার্থীদের চেয়ে যে অনেক ভাল করবেন তা নিশ্চিত সকলেই।
পটুয়াখালী-৩ আসনে ২০০১-এর নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী প্রায় ৬২ হাজার ভোট পেলেও আওয়ামী লীগের আ.খ.ম জাহাঙ্গীর ৭৫ হাজার ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। ২০০৮-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী গোলাম মাওলা রনি ১ লাখ ২০ হাজার এবং বিএনপি প্রার্থী ৬১ হাজার ভোট লাভ করেন। ২০০৮-এর নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীর ৬১ হাজার ভোটের সাথে রনির পাওয়া ১ লাখ ২০ হাজারের অর্ধেক যোগ হলেও এবার মহাজোট প্রার্থীর ঘুম হারাম হয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকগণ।
এদিকে ঋণ খেলাপীর দায়ে মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া পটুয়াখালী-১ আসনে জাপার সদ্য বিদায়ী মহাসচিব রুহুল আমীন হালাদারের ভাগ্য এখনো ঝুলে আছে নির্বাচন কমিশনের আপীল শুনানিতে। তিনি ঐ আসনে মনোনয়ন ফিরে পেলেও মহাজোট প্রার্থী হওয়া নিয়ে নিশ্চয়তা নেই। কারণ আওয়ামী লীগের অন্যতম ঘাটি পটুয়াখালী সদরের ঐ আসনটি কোনমতেই ছাড় দিতে নারাজ স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। ইতোমধ্যেই দলের শীর্ষ পর্যায়ের সম্মতিতেই আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোঃ শাহজাহান মিয়া এলাকায় অনানুষ্ঠানিক প্রচারনায় রয়েছেন। অপরদিকে ঐক্য ফ্রন্ট প্রার্থী আলতাফ হোসেন চৌধুরীর মনোনয়নপত্র বৈধতা পাওয়ায় তিনিও নিশ্চিন্তে আছেন। ফলে শেষ পর্যন্ত পটুয়াখালী জেলা সদরে ভোটের লড়াই চিরাচরিতভাবেই আওয়ামী লীগ বনাম বিএনপি’র মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল।
এদিকে বরিশাল-৪ আসনে সেচ্ছাসেবক লীগের সম্পাদক ও মহাজোট প্রার্থী পঙ্কজ দেবনাথ বিচারিক আদালতে অবৈধ সম্পদের মামলায় ১৪ বছর সাজা হবার বিষয়টি গোপন করায় তার বিরুদ্ধে আপীল দায়ের হয়েছে নির্বাচন কমিশনে। বিষয়টি নিয়ে আজ কমিশনে শুনানীর সম্ভবনার কথা জানিয়েছে দায়িত্বশীল মহল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।