Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সিলেট-৬ শিক্ষামন্ত্রী নাহিদের আসনে ধানের শীষের প্রয়োজন শক্তিমান প্রার্থী

ফয়সাল আমীন | প্রকাশের সময় : ৬ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৫:৩৮ পিএম

সিলেটের নগরীর লাগোয়া উপজেলা গোলাপগঞ্জ ও সীমান্তবর্তী বিয়ানীবাজার উপজেলা নিয়ে গঠিত সিলেট-৬ আসন। গত টানা দুই সংসদে এই আসন থেকে প্রতিনিধিত্ব করছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য
নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে পালন করছেন শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব। সেই হিসেবে তিনি হেভিওয়েট প্রার্থী। তবে তার মনোনয়নকে ঘিরে নির্বাচনী এলাকাতে অন্তর্কোন্দল তুঙ্গে থাকলেও এখনও পর্যন্ত নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণের টিকিট পেয়েছেন তিনি। অন্যদিকে মহাজোটে নতুনভাবে যোগ দেয়া বিকল্পধারাও এই আসনে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য সিলেটের আরেক হেভিওয়েট প্রার্থী সমশের মবিন চৌধুরী বীরবিক্রমকে। এখনও চূড়ান্ত হয়নি এই আসনে মহাজোটের একক প্রার্থী কে।
অন্যদিকে এই আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে দুইজনকে। এরা হচ্ছেন সিলেট জেলা বিএনপির নেতা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ফয়সল আহমদ চৌধুরী ও জাসাসের কেন্দ্রীয় নেতা চিত্রনায়ক হেলাল খান। এদের দু‘জনের মধ্যে শক্ত অবস্থানে আছেন ফয়সল আহমদ চৌধুরী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কাজ সিলেট-৬ আসনে ভোটের মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন। চিত্রনায়ক হেলাল খান ঢাকায় বসবাস করায় তার তেমন শক্ত অবস্থান নেই।
অন্যদিকে এই আসন থেকে নির্বাচন করতে মাঠে আছেন ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান ও নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি মাওলানা অ্যাডভোকেট আবদুর রকিব। তিনি জাতীয় রাজনীতিতে পরিচিত মুখ হলেও ভোটের মাঠে তার তেমন জোরালো অবস্থান নেই। জামায়াত নেতা হাবিবুর রহমানের নাম শোনা গেলেও এই আসনে জামায়াতকে কোনভাবেই চাচেছ না জোটের শরীক দল বিএনপি
দুই উপজেলার বিএনপি নেতৃবৃন্দ ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যানরা সংবাদ সম্মেলন করে এই আসনে বিএনপির প্রার্থী প্রদানের দাবি জানিয়েছেন। তাদের দাবি এই আসনে বিএনপির শক্তিমান প্রার্থী প্রয়োজন। কেননা শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের বিপরীতে জনবিচ্ছিন্ন নেতাদের দিয়ে নির্বাচন করালে আসনটি হাতছাড়া হয়ে যাবে বলে মন্তব্য নেতাকর্মীদের।
তাদের মতো এই আসনের অন্তর্গত দুই উপজেলায় বিএনপির অবস্থান বেশ ভালো। দুই উপজেলার মোট ২১ ইউনিয়নের মধ্যে ১১টি ইউনিয়নেই বিএনপি নেতারা চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন। এখানকার নেতাকর্মীরা কোনভাবেই জামায়তের প্রার্থী মেনে নিতে নারাজ।
তাদের মতে এই আসনে নির্বাচনের লক্ষ্যে মাঠে কাজ করে যাওয়া জামায়ত নেতা মাওলানা হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ প্রীতির বিস্তর অভিযোগ বিএনপি নেতাকর্মীদের মুখে মুখে। তাদের মতে বিগত সিটি নির্বাচনে এই হাবিবুর রহমানের সরাসরি পৃষ্টপোষকতায় মেয়র পদে প্রার্থী দিয়েছিল জামায়াত। এরপর থেকে সিলেটের বিএনপি পরিবারের দুই চোখের বিষ হয়ে আছেন তিনি। প্রথম দিকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী তালিকাতে মাওলানা হাবিবের নাম আলোচিত হলেও পরে বিএনপি নেতাকর্মীদের আন্দোলনের মুখে বিএনপি আসনটিতে নিজেদের প্রার্থী দিয়েছে।
এখন দেখার বিষয় বিএনপি নেতা ফয়সল আহমদ চৌধুরী ও জাসাস নেতা হেলাল খানের মধ্যে কে পান ধানের শীষ। তাদের মধ্যে ভোটের মাঠে বেশ শক্ত অবস্থানে ফয়সল চৌধুরী। ঢাকায় বসবাসরত চিত্রনায়ক হেলাল খানের কদর খুব একটা নেই এলাকাতে।
সিলেট-৬ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নুরুল ইসলাম নাহিদ অস্বস্তিতে আছেন শমসের মবিন চৌধুরীকে নিয়ে। বিএনপির সাবেক নেতা শমসের মবিন সম্প্রতি বিকল্পধারায় যোগ দিয়ে প্রেসিডিয়াম সদস্য হয়েছেন। বিকল্পধারা যোগ দিয়েছে আওয়ামী লীগ জোটে। শমসের মবিনের জন্য সিলেট-৬ আসন দাবি করেছে বিকল্পধারা। শমসের মবিন মনোনয়নপত্রও দাখিল করেছেন। তাঁর মনোনয়নপত্র বৈধ বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন
শমসের মবিন নির্বাচন করতে বদ্ধপরিকর। এর ফলে শঙ্কিত নাহিদ। আওয়ামী লীগ যদি বিকল্পধারাকে আসনটি ছেড়ে দেয়, তবে এবার আর নির্বাচন করা হবে না নাহিদের।
অবশ্য নুরুল ইসলাম নাহিদ নির্বাচন করবেনই, এমন আত্মবিশ্বাসেই মহাজোটের চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণার অপেক্ষায় আছেন।
আর শমসের মবিন বলছেন, তিনি যাতে মহাজোটের প্রার্থী হন, সেজন্য কেন্দ্রে আলোচনা চলছে।
সিলেট-৬ আসন ছাড়া সিলেটের বাকি চারটি আসনের মধ্যে তিনটিতে নিজেদের প্রার্থী দিয়েছে আওয়ামী লীগ। তবে সিলেট-২ আসন সরাসরি ছেড়ে দেয়া হয়েছে জোটসঙ্গী জাতীয় পার্টিকে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ