Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

‘দেখেশুনেই দেবো ভোট’

যশোর থেকে শাহেদ রহমান | প্রকাশের সময় : ৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

‘ভাইরে ভোট তো এসে গেলো, এখনো তো পরিবেশ ঠিক হলো না, ভোট ঠিকঠাক মতো হবে তো?’ পথ চলতে ভোটের আলাপে এসব কথা বলাবলি করছেন অনেক ভোটার। গত রোববার যশোরের চৌগাছা উপজেলা মোড়ে চায়ের দোকানে বেশ কয়েকজন বসে আলাপ করছিলেন ভোট নিয়ে। একজন বললেন, ‘শুনলাম সব প্রার্থীর সমান সুযোগ দেয়া হবে বলে সিইসি ঘোষণা দিয়েছেন। ভোটের মাঠে হালহকিকত দেখে তো তা মনে হচ্ছে না। এখনো চলছে ধরপাকড়। ভোটের দিন যত কাছে আসছে ততই ঝামেলা মনে হচ্ছে’। আরেকজন বললেন, ‘যাই বলো ভাই এতদিন তো বিরোধীদলের কেউ ঘর থেকে বের হতে পারেনি, মামলা, হামলা, জেল জুলুম হুলিয়ায় দৌড়ের ওপর ছিল। ভোটের কারণে তো তারা চাঙা হয়েছে, সাহস পেয়েছে, মাঠ কাপাচ্ছে, পরিবেশ তো ঠিকই আছে। এর চেয়ে আর কি পরিবেশ দরকার। এখন ভোটের দিন ভোটাররা ঠিকঠাক মতো ভোট দিতে পারলেই হলো।

চৌগাছা থেকে ফেরার পথে যশোরের চুড়ামনকাঠিতে একজন পরিচিত লোকের সঙ্গে কথা হলো। জিজ্ঞাসা করলেন, সাংবাদিক সাহেব ভোটের খবর কী, কারা কারা প্রার্থী হচ্ছেন, মূল লড়াই তো আ.লীগ ও বিএনপির মধ্যেই হবে, অন্যরা খামাখা দাঁড়িয়ে ভোটগুলো শুধু শুধু নষ্ট করছেন। ভোটের দিন কি পরিস্থিতি হবে এবার- খবর রাখেন?’। আসলেই সচেতন ভোটাররা খুব হিসাব-নিকাশ করেন ভোট এলে। তারা কী পেয়েছেন আর কী পাননি, কারা কেমন আচরণ করেছেন তার হিসাব করতেও কম করেন না। যশোর অঞ্চলের বিভিন্ন শ্রেণী ও মানুষের কথা, রাজনৈতিক নেতা এবং জনপ্রতিনিধিদের দলীয় আদর্শের চেয়ে দেশ ও জাতির স্বার্থ কাজ করা উচিত। যেটি করলে ঐতিহ্যবাহী জেলাটির চেহারা বদলে যেতো। কিন্তু এমন আশা অনেকটা দূরাশায় পরিণত হয়েছে। বাস্তবে চোখে পড়ার মতো কোনো উন্নয়ন হয়নি।

বিশ্লেষকদের কথা, কৃষি, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্যে সম্ভাবনাময জেলাটি বরাবরই অবহেলিত। এখানে সবজি, রজনীগন্ধা ও মাছের রেণুপোনা দেশের মোট চাহিদার বেশির ভাগ উৎপাদনে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে দীর্ঘ দিন ধরে। সবচেয়ে যে দাবি প্রাধান্য পায় তা হচ্ছে কৃষিভিত্তিক শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন। পরিকল্পনা ছিল, ঘোষণাও দেয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে আলোর মুখ দেখেনি। যশোরের এমপিদের তরফ থেকে তার কোনোটিই হয়নি দীর্ঘ দিনেও। দাবি পূরণ না হলেও এমপিদের চেষ্টা আছে, এটি দেখলেও তো অন্তত মানুষ আশ্বস্ত হতো। জনপ্রতিনিধিদের বিভিন্ন সভা-সমাবেশে ভালো ভালো কথা শুনি। কিন্তু তাদের কর্মকান্ডে আমজনতার আশার আলো দেখানোর মতো কিছু থাকে না। বরং অনেকে এমপির কর্মকান্ড হয়েছে বিতর্কিত এবং ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার অভিযোগ। তাদের মানসিকতা ছিল এমন যে, আর ক্ষমতায় আসতে পারব কি পারব না, সুযোগ পেয়েছি, যে যার মতো আখের গুছিয়ে নেই’। কোনো কোনো এমপির এলাকায় কি কি উন্নয়ন হয়েছে, কোন সমস্যার সমাধান হয়েছে কি-না বা সমাধানের চেষ্টা চলছে, পরিকল্পনার মধ্যেই বা কি রয়েছে, কি হয়নি, জনপ্রত্যাশা কি- এসবের ধার ধারেননি তারা মোটেও। এ কথাগুলো ভোটের মাঠে পথ চলতে কানে ভেসে ওঠে। অনেক ভোটার মুখ ফুটে বলেও ফেলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ