পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে তাদের বসত ভিটায় ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য সেখানে নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার।
তিনি বলেন, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার মতো সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে মিয়ানমারকে। আর তাদের প্রত্যাবাসন হতে হবে অবশ্যই স্বেচ্ছামূলক। এছাড়া নিরাপদ এবং স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে নিয়ে কাজ করবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (০৪ ডিসেম্বর) বিকেলে কক্সবাজারের উখিয়ার বালু খালীতে নতুন স্থাপিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের রবার্ট মিলারএ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা আশ্রয় দিতে গিয়ে কক্সবাজারের পরিবেশের যে ক্ষতি হয়েছে, তা অপূরণীয়। কীভাবে এ ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যায় এবং পরিবেশ ফিরিয়ে আনা যায় এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র সরকার সহায়তা করবে।মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, কেবল মাত্র শুধু রোহিঙ্গাদের জন্য নয়, কক্সবাজারের জনগণের জন্যও যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা অব্যাহত রাখবে।
এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত বিমান যোগে তিন দিনের সফরে কক্সবাজার যান। সেখানে পৌঁছে দুপুর ১২টার দিকে বান্দরবনের নাইক্ষংছড়ির ঘুনধুমতুমব্রু সীমান্তের কোণার পাড়ার শূন্য রেখার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। সেখানে রোহিঙ্গা নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এ সময় রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি বাংলাদেশে নতুন এসেছি, তাই আপনাদের দেখার জন্য এখানে এসেছি। এসেছি আপনাদের সুখ-দুঃখের কথা জানার জন্য।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের নিরাপদে স্বদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য বহির্বিশ্ব ও জাতিসংঘের মাধ্যমে মিয়ানমারকে চাপ প্রয়োগ করেছে। যে কারণে মিয়ানমার আপনাদের ফেরত নেওয়ার কথা বলছে।
আপনাদের যদি বাড়ি-ঘরসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয় তাহলে আপনারা রাখাইনে ফিরে যাবেন কিনা? মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এই প্রশ্নের জবাবে এক রোহিঙ্গা নেতা বলেন, আমাদের এখানে আর এক মূহুর্তও থাকতে ইচ্ছে করছেনা। আমরা যে কোন সময় স্বদেশে ফিরে যেতে রাজি। তবে মিয়ানমারে অবস্থানরত অন্যান্য জাতি গোষ্ঠিরমত আমাদেরও সম্পূর্ণ নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সেটি জাতিসংঘের সার্বিক নিরাপত্তার অধীনে।
পরে মার্কিন রাষ্ট্রদূত দুপুর দেড়টার দিকে বালুখালী টিভি টাওয়ার সংলগ্ন ঘুমধুমইউএনএইচসি আর কর্তৃক নির্মিত ট্রানজিট ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। ক্যাম্পে সদ্য মিয়ানমার থেকে আসা ৯ সদস্যের দুই পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে চান, তারা কেন এসেছেন? এ সময় মিয়ানমারের বুচিদং নাইক্ষ্যংপাড়া থেকে আসা আমানউল্লাহ (৫৫) জানান, সেখানে মিয়ানমার সেনারা পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে এনভিসিকার্ড নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। বাড়ি থেকে বের হতে দিচ্ছে না। এ কারণে তারা বাধ্য হয়ে এপারে চলে এসেছেন।
তাদের সঙ্গে কথা বলার পর মার্কিন রাষ্ট্রদূত বালুখালী ময়নারঘোনা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। এ সময় রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গাদের বেশ কয়েকটি থাকার ঘর ঘুরে দেখেন। পরে ময়নারঘোনা ক্যাম্প ও ব্লকের ৫০ মাঝির সঙ্গে কথা বলেন। মার্কিন রাষ্টদূত জানতে চান, তারা কেমন আছেন? জবাবে মাঝিরা জানান, তারা এখানে খুব ভাল আছেন। নিয়মিত ত্রাণ সামগ্রী পাচ্ছেন। পাশাপাশি চিকিৎসা সেবা ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় দিন ভালো কাটালেও তারামিয়া নমারে ফিরে যেতে চান।
রাষ্ট্রদূতকে আবু তাহের মাঝি জানান, কয়েকটি এনজিও সংস্থার কারণে ১৫ নভেম্বর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হয় নি। এজন্য তারা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, সরাসরি জাতিসংঘের তত্বাবধানে নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করে তাদের সহায়-সম্পদ ফেরত দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করলে রোহিঙ্গাদের এখানে কেউ আটকে রাখতে পারবে না। কারণ স্বদেশে মায়া সবার আছে। এ সময় রাষ্ট্রদূত তাদেরকে সম্মানের সঙ্গে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র সবসময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে আশ্বস্ত করেন।
এরপর দুপুর দেড়টায় তিনি বালুখালী ট্রানজিট ক্যাম্প, আড়াইটায় কুতুপালং ও বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পরিচালিত যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক বিভিন্ন দাতা সংস্থার কর্মকান্ড পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি নির্যাতিত রোহিঙ্গা, ক্যাম্পে দায়িত্ব রত সরকারী ও আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথাও বলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।