Inqilab Logo

রোববার, ১৬ জুন ২০২৪, ০২ আষাঢ় ১৪৩১, ০৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

১৩ বছরের সাজার তথ্য গোপন করে মনোনয়নের বৈধতা পেলেন পংকজ নাথ

রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে বিএনপির প্রার্থীর অভিযোগ

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৭:৫৩ পিএম

দুর্নীতির মামলায় বিচারিক আদালতের দেয়া সাজার তথ্য গোপন করেই মনোনয়নপত্রের বৈধতা পেয়েছেন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-৪ আসনে মহাজোট প্রার্থী পঙ্কজ নাথ। এমনকি ২০১৪সালের নির্বাচনেও তিনি ঐ তথ্য গোপন করেন। বিষয়টি বরিশালের রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক জেলা প্রশাসক-এর কাছে অভিযোগ সহ অবহিত করার পরেও তা গুরুত্ব পায়নি বলে অভিযোগ করেছেন ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীর। তবে জেলা প্রশাসক এ ধরনের কোন অভিযোগ তার না পৌছার কথা জানিয়েছেন।
অবৈধ সম্পদ অর্জন, মানি লন্ডারিং, জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন-এর দায়ের করা মামলায় ২০০৭ সালের ২৬ আগস্ট বিচারিক আদালত স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক পংকজ দেবনাথ ও তার স্ত্রীকে পৃথক মেয়াদে সাজা প্রদান করেন। এর মধ্যে পঙ্কজ নাথকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ৩ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড সহ ১০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়। পাশাপাশি তার স্ত্রী মনিকা দেবনাথকে তিন বছর করে মোট ৬ বছরের কারাদন্ড সহ ২ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদন্ড দেয়া হয়।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোট মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বরিশাল-৪ আসন থেকে মনোনয়নপত্র ও হলফ নামায় তিনি তার পূর্বের সাজা কিংবা দুর্নীতির ওই মামলার বিষয়ে কিছুই উল্লেখ করেন নি। বর্তমান মামলাটি কোন পর্যায়ে রয়েছে সে বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়নি। অবশ্য আইনে রয়েছে ‘সাজা খাটার পাঁচ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন’। পঙ্কজ দেবনাথ ঐ সাজা ভোগ করেন নি।
গত ২৭ নভেম্বর হাইকোর্ট এক পর্যবেক্ষণে বলেন, নৈতিক স্খলনের কারণে দুই বছরের বেশি সাজাপ্রাপ্ত কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। আপিল বিভাগে বিচারাধীন থাকলেও কেউ নির্বাচন করতে পারবেন না। তবে সাজা স্থগিত হলে নির্বাচনে অংশ নেওয়া যাবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
অপরদিকে সংবিধানের ৬৬ (২)(ঘ) ধারা অনুযায়ী, যারা ফৌজদারি মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত আসামি তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। অভিযোগ রয়েছে, নির্বাচনে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে এসব আইনের কোনটিরই তোয়াক্কা করেননি মহাজোট প্রার্থী। সাজার তথ্য গোপন রেখেই তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
অবশ্য পঙ্কজ নাথ-এর একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, দুর্নীতির মামলায় পঙ্কজ নাথ ও তার স্ত্রীকে যে দন্ডাদেশ দেয়া হয়েছে তার বিরুদ্ধে তিনি আপিল করেছেন। আদালত ওই দন্ডাদেশ স্থগিত করেছে।
এদিকে বরিশাল-৪ আসনে ঐক্যফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী ও উত্তর জেলা বিএনপি’র সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদের দেয়া অভিযোগের এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যথাযথ পদ্ধতিতে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ সহকারে অভিযোগ করতে হবে। কিন্তু মহাজোটের ওই প্রার্থীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোন প্রমাণ বা অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তাছাড়া আমাদের কাছে এখন আর কিছু করার নেই। কোন অভিযোগ থাকলে সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে আপিল করতে হবে বলেও জানান তিনি।

 



 

Show all comments
  • Mohammed Kowaj Ali khan ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১১:১৪ পিএম says : 0
    আসলে নিরবাচন কমিশন সব কিচু জানলে ও বলবে জানে না। যাহা দেখিতেছি নিরবাচন কমিশনের খালি পক্ষপাতিত্ব আর মিত্যায় ভরা কায্যকলাপ।
    Total Reply(0) Reply
  • Md zahngir alam ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১১:৫৯ পিএম says : 0
    বাংলাদেশে আরো একটি জবরদোস্তি ভোটারবিহিন নির্বাচন হতে যাচ্ছে, সারা দুনিয়া জানে বাংলাদেশের বিচার বিভাগে কি হচ্ছে? নির্বাচন কামিশনে কি হচ্ছে ? প্রশাসনে কি হচ্ছে? বাংলাদেশে এমুর্হুতে 300 জন এম পি আছে, আছে মন্ত্রি পরিষদ, এম.পি মন্ত্রীরা দিব্বী ঘুরে বেড়াচেছ এবং সরকারী সুযোগ সুবিধা নিয়ে নির্বাচনী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে সেখানে কিভাবে আপনারা 17 কোটি লোক বর্তমান দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন আশা করেন? বোকা ! বোকা !! বোকা !!! বাংলাদেশের মানুষ এখনো কি বোকা? 2008 সালে সুযোগ দিয়ে দেওয়াতে আজ জনগনের মেন্ডেট ছাড়াই সংবিধান সকাল বিকাল পরিবর্তন করছে। 2008 সালের সাধারণ নির্বাচনও সঠিক হয়নি তখনর পর্দার আড়ালের অপশক্তি(ম ইউ আহমেদ, মাসুদ, বারী গং) তাদের অপকর্ম জায়েজ করতে আওয়ামীলীগের পক্ষাবম্বন করেছিল নিজেদের বাচানোর জন্য। দলীয় সরাকরের অধীনে নির্বাচন হবে এ মেন্ডেট আাওয়ামীলীগ যেহেতু 2008 সালের নির্বাচনী ইস্তেহারে আনেনি তাহলে ক্ষমতায় এসে যদি ইস্তেহার বর্হিভুত কিছু অর্থাৎ সংবিধান সংযোজন কিংবা বিয়োজন করে তার জন্য গণভোট থাকা বাধ্যতামূলক, কিন্তু এখন দেখছি ‘‘গণভোট’’ আর ‘‘না ভোট’’এখন কৌশলে হাইজেক হয়েগেছে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ