Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আলোকচিত্রী আনোয়ার হোসেনের দাফন সম্পন্ন

স্টাফ রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

সহকর্মী, সংস্কৃতিকর্মী ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় সিক্ত হলেন খ্যাতিমান আলোকচিত্রী জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী চিত্রগ্রাহক আনোয়ার হোসেন।
গতকাল সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে জানাজার পর মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এর আগে বেলা ১১টার দিকে আনোয়ার হোসেনের লাশ নিয়ে যাওয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে সেখানে নাগরিক শ্রদ্ধা নিবেদন পর্বে তার কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রতিনিধি ও অধিকারকর্মীরা। আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী মরিয়ম হোসেন এবং দুই ছেলে আকাশ হোসেন ও মেঘদূত হোসেন শহীদ মিনারে উপস্থিত ছিলেন এ সময়।গত শনিবার পান্থপথের হোটেল ওলিও ড্রিম হেভেনের একটি কক্ষের দরজা ভেঙে পুলিশ ৭০ বছর বয়সী আনোয়ার হোসেনের লাশ উদ্ধার করে। ফ্রান্সপ্রবাসী এই আলোকচিত্রী একটি প্রতিযোগিতার বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য ঢাকায় এসে ওই হোটেলে উঠেছিলেন। ঘুমের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে বলে ঘনিষ্ঠজনদের ধারণা।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষে অতিরিক্ত সচিব মান্নান ইলিয়াছ, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পক্ষে মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, বাংলা একাডেমি পরিবার, বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট, দৃক ও পাঠশালা, ছাত্র ইউনিয়ন, মুভিয়ানা ফ্লিম সোসাইটি, স্বাধীনতা শিক্ষক সোসাইটি, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম, মুক্তিযুদ্ধ ৭১, বিডি ফটোগ্রাফার্স ইউনিটি ক্লাব, ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ অব বাংলাদেশ বাংলাদেশ ফটোগ্রাফি অ্যাসোসিয়েশন, জাতীয় কবিতা পরিষদ, চিত্রালী পাঠক-পাঠিকা চলচ্চিত্র সংসদ, রণেশ দাশগুপ্ত চলচ্চিত্র সংসদ, শিল্পী ফকির আলমগীর, স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, নাট্য ব্যক্তিত্ব খ ম হারুনসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন শ্রদ্ধা জানায় আনোয়ার হোসেনের প্রতি। পরিবাবরে পক্ষ থেকে শিল্পীর মামাতো ভাই ড. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, সবেমাত্র যুদ্ধ শুরু হয়েছে। এমন সময় উনি একবার গ্রামে গেলেন। এরপর গ্রামের সকল কিশোর-কিশোরীদের একত্রিত করে সর্বপ্রথম তিনি আমাদের জাতীয় সঙ্গীত শেখালেন। আমরা গোল হয়ে বসতাম, আর আনোয়ার ভাই শেখাতেন- আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি। এর আগে বীর এই মুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। এ সময় ঢাকার জেলা প্রশাসকের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ম্যাজিস্ট্রেট তাজওয়ার আকরাম।
১৯৪৮ সালের ৬ অক্টোবর পুরান ঢাকায় আনোয়ার হোসেনের জন্ম। আরমানিটোলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বোর্ডে তৃতীয় হয়েছিলেন তিনি। নটর ডেম কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে ভর্তি হয়েছিলেন বুয়েটের স্থাপত্যবিদ্যা বিভাগে। সেখানেও ভালো ফল করেন। তবে একসময় সিনেমাটোগ্রাফি পড়তে চলে যান ভারতে। ১৯৬৭ সালে আলোকচিত্রী হিসেবে জীবন শুরু করেন তিনি। সূর্য দীঘল বাড়ী, এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী, পুরস্কার, অন্য জীবন, লালসালু, শ্যামলছায়া চলচ্চিত্রের চিত্রগ্রাহক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান আনোয়ার হোসেন। কমনওয়েলথ গোল্ড মেডেলসহ ৬৮টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। ১৯৯৫ সালে ফ্রান্সে চলে যান আনোয়ার হোসেন। ১৯৯৬ সালে ফরাসি মেয়ে মারিয়ামকে বিয়ে করেন তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আনোয়ার হোসেনের দাফন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ