বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
নৌ-পরিবহন মন্ত্রী, আলোচিত শ্রমিকনেতা শাজাহান খানের ভোটব্যাংকে এবার হানা দিতে প্রার্থী হয়েছেন একই দলের কার্যকরী সদস্য ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আল-আমীন মোল্লা। দুই জনের জনপ্রিয়তার কারণে এবারের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাদারীপুর-২ আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভবনা দেখছেন সাধারণ ভোটার ও নির্বাচন বিশ্লেষকরা। আর ভোটের ফলাফলে বরাবরই পিছনে থাকে বিএনপির প্রার্থীরা।
নির্বাচনী এলাকার ভোটার ও একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার একটি পৌরসভা, ১০টি ইউনিয়ন এবং রাজৈর উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১১টি ইউনিয়ন নিয়ে মাদারীপুর-২ সংসদীয় আসন গঠিত। এই আসনে এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত ও নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, একই দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন রাজৈর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আল-আমীন মোল্লা, মুক্তিযোদ্ধা এমএ কাদের মোল্লাসহ মোট ৭ জন প্রার্থী।
নির্ভরযোগ্য তথ্য মতে, এবার নির্বাচনে মূলত হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে শাজাহান খানের সাথে আল-আমীন মোল্লার। শাজাহান খান সদর উপজেলার আর আল-আমীন মোল্লা রাজৈর উপজেলার বাসিন্দা। ভোটের হিসেবে রাজৈর উপজেলার ভোটার সংখ্যা বেশি, সেখানে সদর উপজেলার যে’কটি ইউনিয়ন রয়েছে তাতেও আল-আমীন মোল্লার রয়েছে প্রভাব-আধিপত্য। তবে আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় কিছুটা ফুরফুটে ইমেজে রয়েছে ছয় বারের সংসদ সদস্য শাজাহান খান।
শাজাহান খান মাদারীপুর-২ আসন থেকে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। একই আসন থেকে পরবর্তীতে বাংলাদেশ আওয়মী লীগের মনোনয়ননে তিনি আরো পাঁচ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
অপরদিকে আল-আমীন মোল্লা মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও রাজৈর উপজেলার দুই বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ মোল্লার ছেলে। আল-আমীন মোল্লা নিজেও বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য ও ২০০৯ সালে রাজৈর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়।
এব্যাপারে আল-আমীন মোল্লা জানানা, ‘দীর্ঘ ২৮ বছর যাবত রাজৈর উপজেলায় কোন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়নি। ফলে এলাকার উন্নয়নও তেমনি হয়নি। এসব কারণে স্থানীয় লোকজনের দাবীর কারণে আমি প্রার্থী হয়েছি। আশা রাখি তাদের ভোটে আমি নির্বাচিত হয়ে এলাকার উন্নয়নে নিয়োজিত রাখবো। আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে যেসব ভোটারদের স্বাক্ষরসহ তালিকা দিয়েছি, তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভয়-ভীতি দিচ্ছেন। আমি বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের সুনজর দাবী করছি।’
আর নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, ‘দলীয় মনোনয়ন নিয়ে আমি নির্বাচন করছি। মাদারীপুরের এরই মধ্যে ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। আগামীতেও উন্নয়নের ধারা অবহ্যাত রাখবো। যে কেউ প্রার্থী হতেই পারে, আমি আহবান করবো সবাই যেন নির্বাচনী আচারণবিধি মেনে চলে।’
এব্যাপারে মাদারীপুর জেলা রির্টানিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের কাছে সকল প্রার্থীই সমান। কাউকে হয়রানি করার ইচ্ছে আমাদের নেই। যদি কেউ অভিযোগ করেন, তাহলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
উল্লেখ্য, মাদারীপুর ২ আসনে এবার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ, বিএনপি, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশসহ ৭ জন প্রার্থী। এই আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৭২৬ জন, যার মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭৬ হাজার ৬৪৭ জন, নারী ভোটার ১ লাখ ৭০ হাজার ৭৯ জন। মোট ১৪১টি ভোট কেন্দ্রে ৬৬৩টি ভোট কক্ষের মাধ্যমে ভোটাররা ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।