Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফেনী-১ আসনে খালেদা জিয়ার বিকল্প মজনু, মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন নুর আহাম্মদ মজুমদারও

ছাগলনাইয়া থেকে মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন | প্রকাশের সময় : ৩০ নভেম্বর, ২০১৮, ৭:৩২ পিএম

ফেনী-১ (ছাগলনাইয়া - পরশুরাম-ফুলগাজী) আসনে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র জমা দেয়া হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে রিটার্নিং অফিসার জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজ্জামানের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেত্রী রেহানা আক্তার রানু। খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্রের প্রস্তাবক আবুল কাসেম ও সমর্থক হিসেবে স্বাক্ষর করেন আহাম্মদ আযম চৌধুরী। বেগম খালেদা জিয়া আইনি জটিলতায় নির্বাচন করতে না পারে তার বিকল্প হিসেবে ফেনী-১ আসনে দল থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সভাপতি মুন্সি রফিকুল আলম মজনুকে। খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে না পারলে রফিকুল আলম মজনুকে বিকল্প হিসেবে রাখা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানাগেছে। ইতিমধ্যে তিনি তার মনোনয়নপত্র জমাও দিয়েছেন। এছাড়াও ছাগলনাইয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি নুর আহাম্মদ মজুমদারও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ছাগলনাইয়া উপজেলা বিএনপিসাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র মোঃ আলমগীর বিএ জানান, কোন কারণে মেডাম নির্বাচন করতে না পারলে বিকল্প হিসেবে এখন পর্যন্ত রফিকুল আলম মজনুর নাম রয়েছে। যেহেতু নুর আহাম্মদ মজুমদার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন চুড়ান্ত পর্যায়ে দিয়ে দল যাকেই মনোনয়ন দিবে আমরা সকলেই তার পক্ষে কাজ করব। নুর আহাম্মদ মজুমদারের সমর্থকরা তাকে দল থেকে মনোনয়ন দেয়ার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকসহ বিভিন্নভাবে দলীয় হাই কমান্ডের কাছে দাবী জানিয়ে আসছে। তাদের দাবী নুর আহাম্মদ মজুমদার দু’সময়ে দলের হাল ধরেছেন। ফেনী জেলা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট আবু তাহের জানান, ফেনী-১ আসনে আমরা বেগম জিয়ার মনোনয়নপত্র দাখিল করেছি। তিনিই আমাদের প্রার্থী। তবে আইনি জটিলতায় যদি বেগম খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে না পারেন। সেক্ষেত্রে বিকল্প হিসেবে যুবদল নেতা রফিকুল আলম মজনুর মনোনয়ন পত্র আমরা জমা দিয়েছি। জানাগেছে, রফিকুল আলম মজনু ঢাকা মহানগর যুবদল দক্ষিণের সভাপতি। ১৯৯১ সালের ২৭ ফেরুয়ারি দেশের ৫ম সাধারণ নির্বাচনে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া প্রথম ফেনী-১ আসনসহ ৫টি আসনে বিজয়ী হন। কিন্তু ফেনী-১ রেখে বাকি গুলো ছেড়ে দেন। তিনি এ আসন থেকে প্রধানমন্ত্রী হন একই সাথে দেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হওয়ারও গৌরব অর্জন করেন। এর পর ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেরুয়ারি, ১৯৯৬ সালের ১২ জুন, এ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে তিনি বিজয়ী হয়ে ছেড়ে দিলে তার ছোট সাঈদ এস্কান্দার বিনাপ্রতিদ্ধদ্বিতায় এ আসনে এমপি নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরও খালেদা জিয়া নির্বাচিত হন এ আসন থেকে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি বিএনপি ভোট না করায় ১৪ দলীয় জোট মনোনিত জাসদ সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার বিনা প্রতিদন্ধীতায় এমপি নির্বাচিত হন। মজনু সমর্থকদের দাবী খালেদা জিয়া ভোট করতে না পারলে মজনুই হচ্ছেন বিএনপির প্রার্থী। মজনু ফেনী সদর উপজেলার সাতসতি গ্রামে ১৯৭২ সালের ১ মার্চ জন্ম গ্রহণ করেন। ( ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদরের সীমান্ত ঘেঁষা গ্রাম) তার বাবার নাম গোলাম মোস্তফা। বাবা রেলওয়েতে চাকরি করার সুবাদে ঢাকায় বসবাস। তিনি এসএসসি পাশ করেছেন শাহাজানপুর রেলওয়ে হাইস্কুল থেকে ১৯৮৭ সালে। ১৯৮৯ সালে নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি। ১৯৯২ সালে বি কম পাশ করেন ঢাকা সিটি কলেজ থেকে। ১৯৯৪ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে এম কম পাশ করেন। ছাত্র রাজনীতি শুরু করেন ১৯৯০ সালে ঢাকা মহানগর তৎকালীন ৩৪ নম্বর ওর্য়াড ছাত্রদলের সভাপতি দিয়ে। ১৯৯৪ সালে তৎকালীন বৃহত্তর মতিঝিল থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৯৬ সালে একই থানা ছাত্র দলের সভাপতি হন। ২০০৯ সালে ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ও ২০১৬ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। ফেনী-১ আসনে খালেদা জিয়ার বিকল্প প্রার্থী হিসেবে আবদুল আউয়াল মিন্টুকে দলীয় মনোনয়নপত্র দেওয়া হয়েছিল। তিনি নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে আইনজীবীর মাধ্যমে যাবতীয় প্রস্তুতিও নিয়েছিলেন। কিন্তু কিন্তু মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিনে ফেনী জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা অফিসে মনোনয়নপত্র জমা দেননি মিন্টু। এ নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। নির্বাচন না করলে মিন্টু কেন দলীয় মনোনয়নপত্র নিয়েছিলেন? অবশ্য আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচনে অংশগ্রহণের চেয়ে নির্বাচন পরিচালনায় তার সময় দেওয়া ও অবদান রাখা উচিত। দলের বৃহত্তর স্বার্থে নির্বাচন না করে দলের নির্বাচনের কার্যক্রমকে এগিয়ে নেওয়ার সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দলের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নির্বাচন করার চেয়ে নির্বাচনী কাজে সময় ও শ্রম দেওয়া জরুরি। তিনি বলেন, দলও মনে করে, নির্বাচন পরিচালনার কাজে তার সম্পৃক্ত থাকা প্রয়োজন। তার মনোনয়নপত্র দাখিল নিয়ে যেসব খবর গণমাধ্যমে আসছে, তা সঠিক নয়। এ নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে একটি মহল।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ