বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন অনানুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণার পরে দক্ষিণাঞ্চলে মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মী সহ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। জাতীয় পার্টিকে দুটি, জেপি এবং ওয়ার্কার্স পার্টিকে ১টি করে আসন ছাড় দেয়া হলেও বরিশাল সদর আসন নিয়ে মাঠ পর্যায়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব রয়েছে। বেশীরভাগ আসনে খুব একটা পরিবর্তন না হলেও পটুয়াখালী-১ ও পিরোজপুর-১ আসনটি নিয়ে সাধারণ মানুষের বড় অংশই খুশি হয়েছেন বলে মনে হচ্ছে। গতকাল প্রাথমিক মনোনয়নে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দক্ষিণাঞ্চলের ২১টির মধ্যে ৪টি আসন জোট শরিক ও গত ৫ বছরের কথিত বিরোধী দলকে ছাড় দেয়া হবে বলে মনে হচ্ছে। তবে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে তালিকা প্রকাশের পরে সব পরিষ্কার হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল। দক্ষিণাঞ্চলে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মহাজোট শরিক ও ঘরের বিরোধী দলকে বরিশাল-৩ ও বরিশাল-৬ এবং পিরোজপুর-২ ও পিরোজপুর-৩ আসনগুলো ছাড় দেয়া হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। এর মধ্যে বরিশাল-৬ ও পিরোজপুর-৩ জাতীয় পার্টিকে এবং বরিশাল-৩ ওয়ার্কার্স পার্টি ও পিরোজপুর-২ জেপির আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
তবে বরিশাল সদর আসনটি তে আওয়ামী লীগেরই দু জনের নাম দেখে দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছেন সাধারণ মানুষ সহ দলীয় নেতা-কর্মীরা। কর্নেল (অবঃ) জাহিদ ফারুক শামিম ২০০৮-এর নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীর কাছে পরাজয়ের পরে বরিশালে দলীয় রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। দীর্ঘদিন বরিশালের রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে দুরে ঢাকায় থেকে স¤প্রতি তিনি আবার দলের কেন্দ্রে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করছিলেন। অপরদিকে গত ৫ বছর এমপি থাকা জেবুন্নেসা আফরোজ রাজনীতিতে নবীন হলেও এতদিন দলীয় সব কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ছিলেন। গতকাল জাহিদ ফারুক শামিমের পক্ষ থেকে নগরীতে তার ছবি নিয়ে মিছিল বের করা হয়। তবে তাতে মূলধারার তেমন কোন নেতা-কর্মীকে দেখা যায়নি।
তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের মতে, বরিশাল বিভাগীয় সদরের আসনটি ১৯৭৩ সালের পরে কোন সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ঘরে না আশায় এখানের মনোনয়ন প্রদানে সবদিক বিবেচনার কোন বিকল্প নেই।
এদিকে দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলার ২১টি সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে খুব একটা পরিবর্তন না হলেও মহাজোটের এতদিনের লালিত বিরোধী দল জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমীন হাওলাদারের পটুয়াখালী-১ আসনটি এবার ছাড় দেয়া হচ্ছে না। ফলে মহাখুশি পটুয়াখালী আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। ২০১৪-এর বিতর্কিত নির্বাচনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েও আওয়ামী লীগের অশির্বাদে পটুয়াখালী-১ আসনে এমপি ছিলেন রুহুল আমীন হাওলাদার। তবে গত ৫ বছর তার সাথে এলাকার মাটি ও মানুষের কোন যোগাযোগ ছিলনা। অপরদিকে পিরোজপুর সদরের একচ্ছত্র আধিপত্য দীর্ঘদিন পরে আবদুল আউয়ালের কাছ থেকে ছুটে যাওয়ায় তার অনুসারী ছাড়া দলের বেশীরভাগ নেতা-কর্মী ও সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ মানুষ উৎফুল্ল মনোভাব ব্যক্ত করেছেন। তবে মনোনয়ন লাভকারী প্রার্থী শ ম রেজাউল করিমের সাথেও এলাকার আমজনতা সহ মাঠ পর্যায়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের সম্পর্ক নিবিড় নয় বলে মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল।
অপরদিকে পিরোজপুর-৩ আসনটিও জাপাকে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে এ আসনে অনেক দল ঘুরে জাপায় যোগদানকারী ডা. রুস্তম আলী ফরাজী মনোনয়ন পাচ্ছেন। পিরোজপুর-২ আসনে জেপি’র আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকেই ছাড় দেয়া হচ্ছে। বরিশাল-৩ আসনটি এবারো সম্ভবত ওয়ার্কার্স পার্টিকে ছেড়ে দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। রাশেদ খান মেননের নিজস্ব ঐ এলাকায় গত নির্বাচনে তারই অনুসারী এড. টিপু সুলতান সাবেক এমপি জাপার গোলাম কিবরিয়া টিপুকে পরাজিত করে এমপি নির্বাচিত হন। তবে যুব মৈত্রীর কেন্দ্রীয় নেতা আতিকুর রহমান এ আসনটিতে নির্বাচন করার ক্ষেত্র তৈরি করেছেন ইতোমধ্যে। কিন্তু জাতীয় পার্টিও গোলাম কিবরিয়া টিপুর জন্য এ আসনটি নিয়ে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সাথে দেন দরবার করে যাবে বলে জানা গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।