রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
মুহাম্মদ আব্দুল বাছির সরদার, দিরাই (সুনামগঞ্জ) থেকে
আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) দিরাই উপজেলার ৯টি ও শাল্লা উপজেলার ৪টি মধ্যে ৩টি ইউনিয়নের তাদের দলীয় প্রার্থী মনোনীত করেছে। আর আওয়ামী লীগ ১৩টিইে তাদের দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। ফলে তারাই এখন নিজ ইউনিয়নগুলোতে দলের কা-ারীর ভূমিকায় রয়েছেন বলে উভয় দলের সূত্র জানায়। এবারের মনোনয়ন পাওয়া চেয়ারম্যান পদে অধিকাংশই নতুন মুখ ও তরুণ। চলতি পরিষদে দিরাই উপজেলার ৩টি ও শাল্লা উপজেলার ১টি ইউনিয়ন পরিষদে বিএনপির নির্বাচিত চেয়ারম্যান থাকা সত্ত্বেও এবারের পঞ্চম ধাপে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তারা দলীয় মনোনয়ন না পাওয়াতে তাদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে বলে জানা গেছে। আর শাল্লা উপজেলার শুধুমাত্র বাহারা ইউনিয়নে বিএনপির দলীয় চেয়ারম্যান থাকার পরও এবারের নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন পাননি। দলীয় একটি সূত্র জানায়, দেশে কেন্দ্র থেকে শুরু করে স্থানীয় পর্যায় পর্যন্ত দলটির ওপর নানা ঘাত-প্রতিঘাত আসার পরও যারা আন্দোলন-সংগ্রামে দলের দুর্দিনে মাঠে ছিলেন না, তাদের এবারের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়নি। ফলে তাদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করলেও কিছু করার নেই। তবে এসব কথা মানতে নারাজ বর্তমান কয়েকজন চেয়ারম্যান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, কোন ধরনের যাচাই-বাছাই না করে মনোনয়ন বাণিজ্যের কারণেই তারা বাদ পড়েছেন। তবে তারা নির্বাচনের শেষ পর্যন্ত মাঠে থেকে লড়াই চালিয়ে যাবেন বলে এ প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছেন। দেশে পঞ্চম ধাপে অনুষ্ঠিত দলীয় প্রতীকে এই নির্বাচন হওয়ায় প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে এক ধরনের উত্তেজনা বিরাজ করলেও মনোনয়ন না পাওয়ার হতাশাও কম নয়। আর এ নিয়ে বিদ্রোহের আগুন জ্বলতে পারে বলেও বিএনপি ও আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ বেশ কয়েকটি সূত্র জানায়। গত ২৯ এপ্রিল দিবাগত রাতে সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক সংসদ সদস্য নাছির উদ্দিন চৌধুরী এসব নাম ঘোষণা করেন। জানা যায়, দিরাই উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের মধ্যে রফিনগরে ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান, ভাটিপাড়ায় উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা আফজাল হোসেন, রাজানগরে উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জুনাইদ মিয়া, চরনারচরে বিএনপি নেতা রতন কুমার দাস, দিরাই সরমঙ্গলে মোয়াজ্জেম হোসেন জুয়েল, করিমপুরে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাস্টার আব্দুর রহিম, জগদলে ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম, তাড়লে ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি আলী আহমদ, কুলঞ্জে ইউনিয়ন বিএনপি নেতা ও প্রবাসী মুজিবুর রহমান মুজিবকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। শাল্লা উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩টিতে যাদেরকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে, তারা হলেন শাল্লা ইউনিয়নে মো. সিরাজ মিয়া, আটগাঁওয়ে আব্দুল্লাহ আল নোমান, হবিবপুরে শৈলেন দাস। তবে বাহার ইউনিয়নে কাউকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়নি। এদিকে বিএনপি থেকে দলীয় মনোনয়ন না পেলেও এবারের নির্বাচনে ভোটযুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবেন দিরাই সরমঙ্গল ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান এহসান চৌধুরী, তাড়ল ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান নূরুল হক তালুকদার ও শাল্লা উপজেলার বাহারা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান জাকির হোসেন। আর দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন দিরাই উপজেলার চরনারচর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান রতিকান্ত দাস। অন্যদিকে দিরাই উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন লাভ করেছেন রফিনগরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ান খান, ভাটিপাড়ায় বর্তমান চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী, রাজানগরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সৌম্য চৌধুরী, চরনারচরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক পরিতোষ রায়, দিরাই সরমঙ্গলে আওয়ামী লীগ নেতা কানু দাস, করিমপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান আছাব উদ্দিন সরদার, জগদলে সিলেট মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হুমায়ুন রশিদ লাভলু, তাড়লে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আহমদ চৌধুরী, কুলঞ্জে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিলন মিয়া। আওয়ামী লীগের বিশ্বস্ত একটি সূত্র নিশ্চিত করে জানায়, দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে রফিনগর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর চৌধুরী, ভাটিপাড়ায় শাহজাহান কাজী, রাজানগরে জুয়েল আহমদ, সরমঙ্গলে মহানন্দ দাস, করিমপুরে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি শাহজাহান সরদার, জগদলে শিবলী বেগ, তাড়লে সাবেক চেয়ারম্যান আকিকুর রেজা পুলিশ, কুলঞ্জে বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল আহাদ ও আওয়ামী লীগ নেতা একরার মিয়া নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। শাল্লা উপজেলা আওয়ামী লীগ থেকে যারা মনোনয়ন পেয়েছেন শাল্লা ইউনিয়নে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. ছত্তার মিয়া, বাহারা ইউনিয়নে বিধান চৌধুরী, আটগাঁও ইউনিয়নে আবুল কাসেম আজাদ ও হবিবপুর ইউনিয়নে বিবেকানন্দ মজুমদার। তবে একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে শাল্লা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আবুলেইছ চৌধুরী, জামান চৌধুরী ফুল মিয়া আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন। একইভাবে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বাহারা ইউনিয়নে কাজল বরণ চৌধুরী, নরেশ চৌধুরী, আটগাঁওয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. খুরশেদ মিয়া, হবিবপুর ইউনিয়নে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান সুবল চন্দ্র দাস বিদ্রোহীপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।