পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের দুই জায়ান্ট রাজনৈতিক শক্তি আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে চলছে নির্বাচনের মনোনয়ন প্রক্রিয়া। আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার পর্ব শেষ হলেও বিএনপিতে এখনো সে পর্ব চলছে। দলীয় প্রার্থী চূড়ান্তের পর আওয়ামী লীগ ১৪ দলীয় জোট ও মহাজোটের শরীক জাপা-বিকল্পধারার সঙ্গে প্রার্থী সমঝোতা করতে হবে। বিএনপি ২০ দলীয় জোট ছাড়াও ঐক্যফ্রন্টের দলগুলোর মধ্যে আসন ভাগাভাগি করবে। জোটের মধ্যে উপজোট এবং অনুগত দলগুলোর মধ্যেও ‘আসন বিতরণ’ হবে। দুই বড় শক্তিই ঘোষণা দিয়েছে তারা শরীকদের ৬০ থেকে ৭০টি আসন ছাড় দেবেন। কোন কোন আসন শরীকদের দেয়া হবে তা নিয়ে চলছে টেনশন ও অস্থিরতা। দুই দলের নিজেদেরই প্রতিটি আসনে ১০ থেকে ৩০ জন করে মনোনয়ন প্রত্যাশীর কারা প্রার্থী হচ্ছেন? কোন দলের কে প্রার্থী হচ্ছেন তা নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে টান টান উত্তেজনা। প্রার্থীরা রয়েছেন শ্বারুদ্ধকর অবস্থায়।
আওয়ামী লীগ ঃ দলের মনোনয়ন পাচ্ছেন না বাদ পড়ছেন তা নিয়ে চিন্তার শেষ নেই আওয়ামী লীগের বর্তমান অনেক এমপি ও মনোনয়নপ্রত্যাশীর। যেসব আসনে ১৪ দলের বা জাতীয় পার্টিরসহ মহাজোটের প্রার্থী রয়েছে সেসব আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা রয়েছে বিপাকে। শেষ মুহুর্তে হাইপারটেনশনে ভূগছেন অনেকেই। তবে হাল ছাড়েননি কেউই। মনোনয়ন নিশ্চিত করতে গণভবন, দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যদের বাসা অফিসে দৌড়াঝাপ করছেন। দলের মনোনয়ন ঘোষণা করার আগ পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে যাবেন।
এবার ৩০০ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন কিনেছেন চার হাজার ৪৩ জন। গড়ে প্রতি আসনে প্রায় ১৫ জন। কে মনোনয়ন পাচ্ছেন তা নিয়ে উৎকণ্ঠার শেষ নেই প্রার্থীদের। খোঁজ নিচ্ছেন প্রার্থী তালিকায় নাম আছে কিনা। গণভবন থেকে শুরু করে দলীয় অফিস, নেতাদের বাসায় যোগাযোগ করছেন। কর্মকর্তা থেকে শুরু করে পিয়ন, ছোট খাট নেতাদের জিজ্ঞেস করছেন তালিকা সম্পর্কে খোঁজ জানেন কিনা এবং তার নাম আছে কিনা।
গণমাধ্যমে খসড়া তালিকায় প্রার্থীর নিজের আসনে অন্য জনের নাম দেখে টেনশনে অনেকেই। তাদের মিষ্টি খাওয়ানোর দৃশ্য দেখে আতকে উঠেন, বুকের ভেতর চাপ অনুভব করেন। তবে বিশ্বাস করতে চান তিনি মনোনয়ন পাবেন। বিভিন্ন জরিপে এগিয়ে থাকা প্রার্থী বিশ্বাস করতে চান দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকেই মনোনয়ন দেবেন। গণমাধ্যম ও অন্য প্রার্থীদের গ্রিন সিগনাল পাবার খবর মিথ্যা।
সব মিলিয়ে শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির উপর দিয়ে দিন পার করছেন আওয়ামী লীগের এমপি ও এমপি প্রার্থী। আর তিন চার দিনের মধ্যেই এ পরিস্থিতির অবসান হবে। কারো মুখে থাকবে হাসি, আর কারো মুখ মলিন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শরীকদের ৬৫ থেকে ৭০টি আসন দেয়া হবে। ২৫ নভেম্বর প্রাথী তালিকা প্রকাশ করা হবে। এরশাদ অন্য চিন্তা করলে সেটা তার ব্যাপার।
ইতোমধ্যে দলের মনোনয়নের খসড়া তালিকায় থাকা কিছু নাম এসেছে আলোচনায়। সবাই চেষ্টা করছেন তালিকায় নাম আছে কিনা তা জানার জন্য। বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের জোর প্রচেষ্টা চলছে। খসড়া তালিকায় কিছু আসনে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট কিছু নেতা মনোনয়ন পাচ্ছেন না। আর যেসব আসনে বর্তমান এমপি মনোনয়ন পাবেন না আশা করেছিলেন অন্য প্রার্থীরা, সেসব আসনে প্রার্থী পরিবর্তন হচ্ছে না এমন খবরে সবাই দৌড়ঝাপের উপরে রয়েছেন।
এমপিরা মনোনয়ন ঠিক রাখার জন্য আর অন্য প্রার্থীরা মনোনয়ন পাবার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন। একাদশ জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন না পাবার তালিকায় আলোচনার শীর্ষে দলের দুই যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান এবং দুই সাংগাঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। খসড়া তালিকায় আব্দুর রহমানের আসন ফরিদপুর-১ এ সাবেক সচিব ও রূপালী ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান মঞ্জুর হোসেন, বিএম মোজাম্মেলের শরিয়তপুর-১ এ ইকবাল হোসেন অপু এবং নাছিমের আসন মাদারীপুর-৩ এ কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপের নাম। বাদ পড়া এই চার নেতাই মনোনয়ন ঠিক রাখার চেষ্টা করছেন। এছাড়া অনেক প্রবীণ এমপি টেনশনে আছেন মনোনয়ন না পাবার। অনেকে নিজের আসনে সন্তানের মনোনয়নের চেষ্টা করছেন; টেনশনে পড়ে গেছেন কি হয়?
গাজীপুর-৩ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট রহমত আলীর স্থানে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজের নাম। এ নিয়ে এমপি পুত্র জামিল হাসান দুর্জয়ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন।
আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি সাবিনা আক্তার তুহিন, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, কেন্দ্রীয় তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার, টাঙ্গাইল-৮ আসনের এমপি অনুপম শাহজাহান জয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছেন।
খসড়া প্রার্থী তালিকায় টাঙ্গাইল-৬ আসনে আওয়ামী লীগের প্রাথমিক প্রার্থী তালিকায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক সভাপতি আহসানুল ইসলাম টিটুর নাম রয়েছে। এ আসনের এমপি খন্দকার আবদুল বাতেন দলের মনোনয়নবঞ্চিত হচ্ছেন। চট্টগ্রাম-৪ আসনে বর্তমান এমপি দিদারুল আলমের স্থানে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এম মনজুর আলমের নাম।
ঝিনাইদহ-২ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌরসভা মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু ও সাবেক এমপি সফিকুল ইসলাম অপু দলের প্রার্থিতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। এই আসনে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন স্বতন্ত্র এমপি তাহজীব আলম সিদ্দিকী।
এদিকে জোটের কারণে টেনসনে অনেকেই। জোটের এমপির আসনে দীর্ঘদিন প্রচারণা তালিয়ে নি:স্ব আওয়ামী লীগের অনেক প্রার্থী। ঢাকা-১, ৪, ৬, লক্ষীপুর-১ ও ২, সাতক্ষীরা-১, পঞ্চগড়-১, ফেনী-১, নীলফামারি-৪, পটুয়াখালী-১, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসন পুনরুদ্ধারে নানা চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। এছাড়া সেসব আসনে শরিকদের প্রার্থী রয়েছে সে আসনে আওয়ামী লীগের এমপিরা আছেন বেজায় বিপাকে। বিকল্পধারার যুগ্ম-মহাসচিব মাহি বি চৌধুরীর কারণে মুন্সিগঞ্জ-১ আসনের এমপি সুকুমার রঞ্জন ঘোষ এবং দীর্ঘদিন প্রচারণা চালানো বদিউজ্জামন ডাবলু ও গোলাম সরোয়ার কবির, মহাসচিব মেজর (অব.) এম এ মান্নানের কারণে নোয়াখালী-৪ এর এমপি একরামুল করিম চৌধুরী বিপাকে আছেন। বেজায় প্যাচে পড়েছেন সাতক্ষীরা-৪ আসনের এমপি জগলুল হায়দার। তার আসনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইম মুহম্মদ এরশাদ ও বিকল্পধারার গোলাম রেজা মনোনয়ন চান। ঢাকা-৫ এর এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লার আসন নিতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে জাসদ। এখানে তাদের প্রার্থী কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি শহিদুল ইসলাম।
বিএনপি ঃ
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে সাক্ষাতকার চলছে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের। ৩০০ আসনেই প্রার্থী হতে আগ্রহীদের সাক্ষাতকার নিচ্ছেন বিএনপির মনোনয়ন বোর্ড ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিভাগ হিসেবে ভাগ করে গত রোববার থেকেই চলছে এই সাক্ষাতকার। গতকাল (মঙ্গলবার) সকাল ৯টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিভাগের প্রার্থীদের এবং দুপুর আড়াইটা থেকে রাত পর্যন্ত কুমিল্লা সাংগঠনিক বিভাগ ও সিলেট বিভাগের প্রার্থীদের সাক্ষাতকার নেয়া হয়। দল ও দলের নেতাদের পক্ষ থেকে দেয়া হয় দিকনির্দেশনা। আজ শেষ দিনে ময়মনসিংহ, ফরিদপুর ও ঢাকা বিভাগের প্রার্থীদের সাক্ষাতকার গ্রহণের মাধ্যমে শেষ হবে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাতকার।
দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকারে গতকালও যথারীতি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে লন্ডন থেকে যুক্ত হন তিনি। তবে স্কাইপে নয়, অন্য কোনো মাধ্যমে তিনি ভিডিও কনফারেন্সে আছেন বলে জানিয়েছেন সাক্ষাৎকারে অংশ নেয়া কয়েক মনোনয়ন প্রত্যাশী। নোয়াখালী-২ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জয়নুল আবদীন ফারুক বলেন, মনোনয়ন বোর্ড আমাদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যুক্ত হয়েছিলেন। স্কাইপে নয়, অন্য একটি উপায়ে তিনি আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কড়া নির্দেশ মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে হবে। তার এই নির্দেশ আমি অনুসরণ করব। আমার আসনে অন্য যারা প্রার্থী হতে চান, আশা করি তারাও এটা ফলো করবেন। ফেনী-১ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী মিনার চৌধুরী বলেন, তারেক রহমান বড় স্ক্রিনে আমাদের দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি সার্বিক বিষয় পর্যবেক্ষণ করছেন। তারেক রহমানের কোন ধরনের নির্দেশনা ছিল জানতে চাইলে মিনার চৌছুরী বলেন, তার নির্দেশনা ছিল মনোনয়ন বোর্ডে যে সিদ্ধান্ত হবে তা যেন মেনে চলি এবং ধানের শীষকে বিজয়ী করতে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করি। ফেনী-৩ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপির সাবেক দফতর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি বলেন, গত দু’দিনের মতো আজও (গতকাল) দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রার্থীদের নির্দেশনা দিচ্ছেন। স্কাইপ নেই, তারেক রহমান কীভাবে যুক্ত রয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি আছেন লন্ডন থেকে। স্কাইপ নেই তাতে কি? পৃথিবীতে আরও বহু পদ্ধতি আছে। মেধা শক্তি থাকলে যে কোনো পদ্ধতি ব্যবহার করা যায়। মানুষের আবেগকে বাধা দিয়ে রাখা যায় না। সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, ড. মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা।
সব সংসদীয় আসনে ধানের শীষের প্রার্থী আগ্রহী বিএনপি নেতাকর্মীদের সাক্ষাতকার গ্রহণ করা হলেও ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জন্য বেশ কিছু আসন ছেড়ে দিতে হবে দলটিকে। বিপুল সংখ্যক প্রার্থী নির্বাচন করতে আগ্রহী হলেও দল ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের স্বার্থে কাউকে কাউকে ত্যাগ স্বীকার করতে হবে বলে সাক্ষাতকার অনুষ্ঠানে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। সকলকে দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে এবং ধানের শীষ প্রতীকের জন্য কাজ করতে নির্দেশনা দিয়েছেন তারেক রহমান। এজন্য প্রার্থী নির্ধারণ ও মনোনয়ন নিয়ে শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বিএনপি, ২০ দল ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে। নিজ দলের প্রার্থীদের ছাড়াও অন্য দুই জোটকেও খুশি করার চ্যালেঞ্জ বিএনপির সামনে। যদিও বিষয়টিকে তেমন কঠিন মনে করছে না দলটির শীর্ষ নেতারা। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জোটের শরিকদের সাথে আলোচনা করে প্রার্থী ঠিক করা হবে। এখনো এ বিষয়ে আমরা চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিনি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার পর আসন নিয়ে কোন কিছু ঠেকে থাকবেনা বলেও মনে করেন তিনি।
এদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর একদিকে সংলাপের তোড়জোড় চললেও অন্যদিকে নিজস্বভাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সম্ভাব্য প্রার্থীদের মাঠের অবস্থান যাচাই করেছে বিএনপি। এতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের শরিক দলের নেতাদের ৬০টি আসন পাওয়া যায়, যেখানে দলগুলোর সম্ভাব্য প্রার্থীদের ছাড় দেয়া যায়। কিন্তু প্রার্থীর গ্রহণযোগ্যতা ও জাতীয় রাজনীতি বিবেচনায় তার সঙ্গে ১০টি আসন যোগ করে সর্বোচ্চ ৭০টি আসনে ছাড় দেয়ার কথা ভাবছে বিএনপি।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, ২০ দলীয় শরিকদের মধ্যে জামায়াতের দাবি ৫০ আসন। জোটের অন্য শরিক দলগুলো ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও নিবন্ধন হারানো জামায়াত নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এবার তাদের জন্য বরাদ্দ হতে পারে সর্বোচ্চ ২৫ আসন। বিএনপির কাছে এলডিপির পক্ষ থেকে ৩০টি আসন চেয়ে প্রার্থী তালিকা দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ লেবার পার্টি ২টি আসন চেয়েছে। জাতীয় পার্টি ১৫টি, অন্যান্য দলও একাধিক আসন চেয়েছে। তবে বিএনপি সূত্রে জানা যায়, এলডিপি ৪-৫টি, জাতীয় পার্টির (জাফর) ৪টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ২-৩টি, বিজেপি ১টি, জাগপা ১টি, কল্যাণ পার্টি ১টি, খেলাফত মজলিস ১টির মতো আসন পেতে পারে। এছাড়া অন্যান্য দলগুলোর অবদানও বিবেচনায় রেখেছে বিএনপি। তাদের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছেন দলের শীর্ষ নেতারা।
অন্যদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিকদের মধ্যে নাগরিক ঐক্য ৪০টি, গণফোরাম ৩০টি, জেএসডি ৩০টি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ৫টি আসন চায়। এর মধ্যে দল ও জোট শরিকদের অনুরোধে ড. কামাল ঢাকা-৮ বা অন্য এক বা একাধিক আসনে প্রার্থী হতে পারেন। গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু ঢাকা-২ বা ৩ আসন থেকে নির্বাচন করতে চান। গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী ঢাকা-১৪ আসনে মনোনয়ন পেতে পারেন। ডাকসুর সাবেক ভিপি ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ মৌলভীবাজার-২ আসনে মনোনয়ন পাবেন। মফিজুল ইসলাম খান কামালের জন্য মানিকগঞ্জ-৩ ও জানে আলমের জন্য চট্টগ্রাম-১০ আসন থেকে মনোনয়ন চাইবে গণফোরাম। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডিও এর আগে ৩০ আসনের প্রস্তুতি নিলেও এখন ১৫টি চাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব ল²ীপুর-৪ আসন থেকে অথবা ঢাকা থেকে মনোনয়ন চাইবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন চান কুমিল্লা-৪ আসন। সহ-সভাপতি তানিয়া রব ঢাকা-১৮ (উত্তরা)। ঐক্যফ্রন্টের আরেক শরিক নাগরিক ঐক্য এতদিন ৩০ আসন চাইলেও এখন চূড়ান্ত দরকষাকষির পর্যায়ে ১৫টি চাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। দলের আহŸায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বগুড়া-২ বা ঢাকা-১৭ (গুলশান) আসনে মনোনয়ন চাইবেন। কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগকে সর্বোচ্চ তিনটি আসন দিতে পারে বলে জানিয়েছে বিএনপি সূত্র। ঐক্যফ্রন্টের শরিক বিকল্পধারা বাংলাদেশ (একাংশ) ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের একটি আসনে ছাড় দিতে পারে বিএনপি। সেক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর নূরুল আমিন বেপারি মনোনয়ন পেতে পারেন। তবে সবমিলিয়ে ঐক্যফ্রন্ট ২০টি আসনে মনোনয়ন পেতে পারেন বলে বিএনপি সূত্রে জানা যায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।