পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্দেশ উপেক্ষা করে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। এমন বাস্তবতায় তফসিল ঘোষণার পর প্রথমবারের মতো আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বসতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল রোববার এ সংক্রান্ত একটি চিঠি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব বরাবর পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন ভবনে আগামী ২২ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় এই বৈঠক হবে। পুলিশের মহাপরিদর্শক, স্বরাষ্ট্রসচিব, জননিরাপত্তা বিভাগ ও সকল মহানগর পুলিশ কমিশনার, উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক ও পুলিশ সুপারদের বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির এক যুগ্মসচিব ইনকিলাবকে বলেন, কমিশনের নির্দেশ উপেক্ষা করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার অব্যাহত রেখেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বৈঠকে প্রিজাইডিং ও সহকারি প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের পুলিশ ফোন দিয়ে হয়রানির বিষয়সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ‘পক্ষপাতিত্ব’ভাবে কাজ করতে না পারে সে বিষয়ে নির্দেশনা দিবে ইসি।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, সংসদ নির্বাচনে বড় দু’দলের বিরুদ্ধে রয়েছে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ। এক দল অন্য দলকে দুষছে। তবে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গে রয়েছে শাস্তির ব্যবস্থা। নির্বাচনকালীন সময়ে কোনো মন্ত্রী তার এলাকায় গেলে প্রটোকল পাবেন না। উন্নয়নমূলক কাজ উদ্বোধন করতে পারবেন না, যা প্রচারণা বলে গণ্য হতে পারে। কোনো অনুদান দেয়ারও অনুমোদন নেই। নতুন কোনো প্রকল্প নেয়া যাবে না। কোনো, মসজিদ বা মন্দির ও গির্জায় ভোট চাইতে পারবেনা না প্রার্থীরা। পোস্টার দেয়ালে, গাড়িতে এমনকি গাছেও লাগানো নিষেধ। যত্রতত্র ক্যাম্পেইন অফিস বানানো নিষেধ। এছাড়া নির্ধারিত সময়ের আগে প্রচারণা শুরু করা যাবে না। আগামী বৃহস্পতিবার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এগুলো নিয়ে দিক নির্দেশনা দিবে ইসি।
এদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাদী হয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা ও গায়েবী মামলা দিয়ে গ্রেফতার অভিযান পরিচালনা করছে। এখন পর্যন্ত ২ হাজার ২টি মামলায় ৫ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭ হাজার ৭৭৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বিএনপিসহ ২০ দল ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ৭ দফা দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম ছিল এসব গায়েবী ও মিথ্যা মামলার আসামিদের গ্রেফতার বা হয়রানি না করা। ওই আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এসব মামলা ও গ্রেফতারের তথ্য তার দফতরে পাঠাতে বলেন। এ অনুযায়ী গত ৭ নভেম্বর ১০৪৬টি ও পরে ১৩ নভেম্বর ১ হাজার ২টি মামলার তথ্য জানানো হয়। তবে তালিকা পাঠানোর পরও এখন পর্যন্ত মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেফতার হওয়া নেতাকর্মীদের অব্যাহতি দেয়ার কোনো তথ্য আমাদের অবহিত করা হয়নি। এমতাবস্থায় বিএনপি বিষয়টিতে ইসির হস্তক্ষেপ কামনা করছে। বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত আরেকটি চিঠিতে বর্তমান সরকারের টানা ১০ বছরের চিত্র তুলে ধরে জানানো হয়, ২০০৯ সাল থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট মিথ্যা মামলার সংখ্যা ৯০ হাজার ৩৪০টি, আসামির সংখ্যা ২৫ লাখ ৭০ হাজার ৫৪৭ জন, জেলহাজতে থাকা আসামির সংখ্যা ৭৫ হাজার ৯২৫ জন, মোট হত্যার সংখ্যা ১ হাজার ৫১২ জন। এর মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা হত্যার সংখ্যা ৭৮২ জন, বিভিন্ন দলের মোট গুমের সংখ্যা ১ হাজার ২০৪ জনের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজত থেকে গ্রেফতার দেখানো হয় ৭৮১ জন এবং বিএনপির নেতাকর্মী গুম ছিল ৪২৩ জন। ৩০ সেপ্টম্বর পর্যন্ত বিএনপি নেতাকর্মী গুম রয়েছেন ৭২ এবং গুরুতর জখম ও আহত হয়েছেন ১০ হাজার ১২৬ জন। বিএনপি অভিযোগ করেছে, কমিশনের নির্দেশ উপেক্ষা করে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার অব্যাহত রেখেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। দলটির তথ্য অনুযায়ী, তফসিল ঘোষণার পর থেকে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে ৭৭৩ জন বিএনপির নেতাকর্মী।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, তালিকাটা আমি ব্যক্তিগতভাবে এখনো দেখিনি। সত্যিকার অর্থে যদি কোনো হয়রানিমূলক মামলা হয়ে থাকে এবং সেটা রাজনৈতিক হয়, তাহলে আমরা অবশ্যই প্রশাসনকে নির্দেশনা দেবো, যেন হয়রানিমূলক মামলা না করে। কারণ হয়রানিমূলক মামলা হলে নির্বাচনি পরিবেশ কিছুটা হলেও বিনষ্ট হবে।
উল্লেখ্য, ৮ নভেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। পরে পুনঃতফসিল ঘোষণা করা হয় এবং সে অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ২৮ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই ২ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ৯ ডিসেম্বর ও ভোট গ্রহণ ৩০ ডিসেম্বর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।