Inqilab Logo

শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

আ.লীগের দুর্নীতিবাজদের সুরক্ষা দিচ্ছে ইসি

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়া আওয়ামী লীগের দুর্নীতিবাজদের ভোটে সুরক্ষা দিতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা তুলে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের মন্ত্রী-এমপি-নেতারা জনগণের সম্পদ লুটপাট করে একেকজন অর্থবিত্ত ও সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। কেউ কেউ বিগত দশ বছরে বাংলাদেশের শীর্ষ ধনীদের ‘টপ টেন’ তালিকায় নাম উঠিয়েছেন। গত পাঁচ বছরে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের কি পরিমাণ সম্পদ বেড়েছে সেটি যাতে জনগণ জানতে না পারে সেজন্য আওয়ামী সরকারের বংশীবাদক ইসি প্রার্থীদের রিটার্ন দাখিল করার বাধ্যবাধকতার বিধান তুলে দিয়েছে। বর্তমান সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের দুর্নীতির খবর ঢেকে রাখতেই আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করেনি ইসি। গতকাল (রোববার) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, পত্র-পত্রিকা ও মিডিয়ায় কারো কারো বেশুমার সম্পদের কিয়দাংশ খবর বেরুচ্ছে। গত ২০১৪ সালে একতরফা নির্বাচনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক থাকার ফলে দেশের মানুষ জানতে পেরেছে মন্ত্রী-এমপিদের সম্পদ একশো গুণ থেকে পাঁচশো গুণ বৃদ্ধি পেয়েছিল। স্ত্রীরাও পাল্লা দিয়ে গড়েছিলেন সম্পদের পাহাড়। ২০০৮ সালে ধারদেনা করে নির্বাচন করেছেন এমন এমপি’রাও কয়েকশো কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। সঙ্গে যোগ হয়েছে বাড়ী, ফ্ল্যাট, ব্যাংকে নগদ টাকা, জমি, শিল্প প্রতিষ্ঠান, শেয়ার-সঞ্চয় পত্র, এফডিআর ইত্যাদি। কিন্তু ২০১৪ থেকে ২০১৮ পর্যন্তও বাংলাদেশ ব্যাংকসহ দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে হরিলুট হয়েছে, লুটপাটের কারণে ব্যাংকগুলোতে অর্থ সংকট দেখা দিয়েছে। দেউলিয়া হওয়ার পথে অধিকাংশ ব্যাংক। সকল ক্ষেত্রে দুর্নীতির কারণে মানুষের জীবন দুুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। বর্তমান সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের দুর্নীতির খবর ঢেকে রাখতেই আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করেনি ইসি।
তিনি বলেন, ইসি মূলত: আওয়ামী দুর্নীতিবাজদেরকে ভোটে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দিতে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করার বিধান রদ করে দিয়েছে। আয়কর বিবরণী সনদপত্রে সংক্ষিপ্তভাবে প্রার্থীর আয়-ব্যয় ও সম্পদের বিবরণীর বাধ্যবাধকতা বাতিল করে তাদের সম্পদ ঢেকে রাখার বিশেষ সুবিধা দেয়া হয়েছে। এর ফলে আওয়ামী লীগের অনেকেই সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব বকেয়া রেখেও আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন। করযোগ্য নয় বলে অনেকেই মিথ্যা তথ্য দিবেন।
বিএনপির এই নেতা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, আইনী শিথিলতার সুযোগে নির্বাচনে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে প্রচার-প্রচারণা চালালেও করযোগ্য আয় নেই বলে নির্বাচন কমিশনে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা পার পেয়ে যাবেন। নির্বাচনে প্রার্থীদের আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার বিধানটি কেবল বাদ দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন। এমনকি টিআইএন না থাকলেও প্রার্থীদের মনোনয়ন পত্র এবার বাতিল হবে না বলে আইন করা হয়েছে। আর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন করে একইসঙ্গে ঋণ ও বিল খেলাপীদের প্রার্থী হওয়ার শর্ত সহজ করেছে এই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। তিনি বলেন, সংশোধিত আরপিও’র কারণে আওয়ামী লীগের দুর্নীতিগ্রস্ত প্রার্থীদের জালিয়াতি করার সুযোগ বেড়ে যাবে। নির্বাচন কমিশনের ঘাড়ে বন্দুক রেখে সরকার এই দুর্নীতিবাজদের এই সুযোগ দিয়েছে। ফলে এবারের নির্বাচনে কালো টাকার ছড়াছড়ি হবে। দখল আর দুর্নীতির অন্ত:ক্রিয়াই আওয়ামী সংস্কৃতি। এসময় সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ