পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
উপমহাদেশের মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৭৬ সালের ১৭ নভেম্বর ঢাকার পিজি হাসপাতালে (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। টাঙ্গাইলের সন্তোষে তাকে সমাহিত করা হয়। রাজধানী ঢাকাসহ টাঙ্গাইলের সন্তোষে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হবে। মাওলানা ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাজধানী ঢাকাসহ টাঙ্গাইলের সন্তোষে দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সন্তোষে তার মাজারে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন এবং আলোচনা সভা।
প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ বাণীতে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর আদর্শকে ধারণ করে দেশপ্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হওয়ার জন্য নতুন প্রজন্মের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় মওলানা ভাসানী আজীবন কাজ করেছেন। পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসকদের অত্যাচার-নিপীড়নের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন উচ্চকণ্ঠ। বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে।
মওলানা ভাসানীর রাজনীতি শুরু হয় ব্রিটিশবিরোধী অনুশীলন সমিতিতে যোগদানের মাধ্য দিয়ে। পরবর্তীকালে কংগ্রেস, মুসলিম লীগ, আওয়ামী মুসলিম লীগ- যখনই যে সংগঠনে গেছেন; সেখানে তিনি সাম্রাজ্যবাদবিরোধী অবস্থান গ্রহণ করেন। ভাসানীর আসামে প্রজা-খাতক আন্দোলন, ব্রিটিশদের লাইন প্রথা নিয়ে আন্দোলন, সিরাজগঞ্জ ও সস্তোষে কৃষক ও শ্রমিক আন্দোলনের মূল কথাই ছিল সামস্তবাদ ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী আন্দোলন। ১৯৫৪ সালের ‘স্টকহোম শান্তি সম্মেলন’ এর মাধ্যমে তিনি সা¤্রাজ্যবাদবিরোধী নেতা হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত হন।
মওলানা ভাসানী একজন ক্যারিশম্যাটিক নেতা ছিলেন। তিনি যেখানেই সভা করেছেন; সেখানেই হাজার হাজার মানুষের সমাবেশ হয়েছে। তিনি ছিলেন রাজনীতির ‘হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা’। তিনি সবসময় গরীব বিশেষ করে শ্রমিক-কৃষক-মেহনতি জনতার রাজনীতিকে সামনে আনতে চেয়েছেন। তিনি ইতিহাসকে নীচুতলার মানুষের চোখ দিয়ে দেখতে চেয়েছেন। আসামের রাজনৈতিক জীবন ও পূর্ব বাংলা, বিশেষ করে সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইলে কৃষক ও শ্রমিক সম্মেলন করেছেন। তার জীবনে বহু রাজনৈতিক দলে অংশগ্রহণের ইতিহাস থাকলেও তিনি শ্রমিক, কৃষক ও সাধারণ মানুষকে ছাড়েননি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলনকে যদি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে দেখা যায় তাহলে দেখা যাবে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীই প্রথম বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে স্বায়ত্তশাসন, এমনকি স্বাধীনতার ইস্যুকে সামনে নিয়ে আসেন। তিনি ১৯৪৮ সালের ১৯ মার্চ ভাষার অধিকার প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘আমরা কি সেন্ট্রাল গভর্নমেন্টের গোলাম?' একইভাবে তিনি যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনের আগে যে ২১ দফা ঘোষণা দেন সেখানে ১৯ দফায় তিনি বলেছেন, লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে পূর্ববঙ্গকে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন প্রদান ও সার্বভৌমিক করতে হবে। বাঙালির মুক্তির সনদ হিসেবে চিহ্নিত ১৯৬৬ সালে ৬ দফার মূল বক্তব্যে ভাসানীর যুক্তফ্রন্টের ১৯ দফারই প্রতিফলন। ১৯৫৫ সালের ১৭ জুন পল্টনের জনসভায় বক্তৃতার পাশাপাশি ১৯৫৬ সালের ১৫ জানুয়ারিতে মওলানা ভাসানী সরাসরি বাংলাদেশের স্বাধীনতার কথা বলেছেন। ১৯৫৭ সালের তিনি ‘কাগমারী সম্মেলনে’ খুব গুরুত্ব দিয়ে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেছিলেন, ‘এই অবস্থা চলতে থাকলে আমরা আমাদের পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলতে বাধ্য হবো। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।